রোগ মুক্তিতে চেষ্টা সবারঃ সাহায্য ঐশ্বরিক

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ১০:০২ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২৩, ২০২১
সারোয়ার মিরন:
কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকোপ শুরু হয়েছে বলা চলে। গতো কয়েকদিন ধরে আক্রান্ত এবং  মৃতের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল (২২মার্চ) আক্রান্তের সংখ্যা দুই হাজার আটশত প্লাস এবং মৃতের সংখ্যা ত্রিশজন। প্রতিনিয়তই এ সূচক উর্ধ্বমূখী। বাংলাদেশের করোনার আঘাত সময়কাল প্রায় এক বছর পেরিয়েছে। বিগত কয়েক মাসে আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজারের নিচে এবং মৃতের সংখ্যা  দশজনের নিচে থাকলেও হঠাৎ করে তা বৃদ্ধি জনমনে মারাত্মক শংকার উদয় হয়েছে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় এক বছর আগে একটি আর্টিকেল লিখেছিলাম সোস্যাল সাইটে। আজ এ সময়ে লেখাটির আবেদন পুরায়নি বলে দেশালোক ডটকমের পাঠকদের জন্য তা আবার তুলে ধরা হল-
যাত্রীবাহী নৌযান (লঞ্চ), বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, নোয়াখালীর ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের আবাসন, মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাস ইত্যাদি স্থাপনা গুলো এ সংকটময় মুহূর্তে ব্যবহারের জন্য ভাবা যেতে পারে। সে বিষয়ে প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখাটা মন্দ হবেনা। পরিস্থিতি জটিল হলে কাজে দেবে।
এ মুহুর্তে ডাক্তারদের নিরাপত্তাকে সর্বাত্মক গুরুত্ব দিতে হবে। ডাক্তাররা শারিরীক ও মানসিক ভাবে ফিট থাকলেই ভয়াবহতা নিয়ন্ত্রনে রাখা যেতে পারে। বর্তমানে ডাক্তাররাই সৈনিক। তাঁদের যাবতীয় উপায় উপকরন প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা অবশ্য কর্তব্য।
দ্রব্যমুল্য নিয়ন্ত্রনে রাখা দ্বিতীয় কাজ। ধীরে ধীরে লকডাউন হতে চলা পরিস্থিতিতে খেটে খাওয়াদেরও বাঁচিয়ে রাখতে হবে। খাদ্যভাবে কেউ যেন মারা না যায়। এটাও চ্যালেঞ্জ। উচ্চজাতের হাসপাতাল যেমন- পপুলার, স্কয়ার, ল্যাব এইড, মেডিনোভা, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, ইবনেসিনা ইত্যাদি হাসপাতাল গুলোকে করোনা চিকিৎসা উপযোগি করা। আইসিইউ বৃদ্ধি করা।
মানবতার ধব্জাধারী বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান গুলো গর্ত থেকে বের হওয়াটাই সময়ের দাবি। মানুষ মানবতার জন্য লভাংশের কিছু শতাংশ ব্যয় করা উচিত। চলমান সংকটে লাভের লোভ বাদ দিয়ে মানিবক হওয়াটা দেশপ্রেমে অধিকতর অংশীদার হবার পরিচয় বহন করবে।
সকল প্রচেষ্টার শেষাংশে যেটা অবশিষ্ট থাকে সেটা ধর্মীয় বিশ্বাস। সবাই নিজ নিজ ধর্মীয় অবস্থান থেকে সৃষ্টিকর্তার সাহায্য প্রার্থনা করুন। ধর্মীয় আচার কানুন পালন মানুষকে প্রফুল্ল রাখে। বেঁচে থাকার রসদ যোগায়। নিজ গৃহে অবস্থান করে বেশি বেশি সৃষ্টিকর্তাকে স্মরন করুন। নিজকে পরিপূর্ণ সঁপে দিন।
সাধারন জনগন হিসেবে আপাতত অাপনার পক্ষে নিজ গৃহের বাহিরে তেমন কিছু করার সুযোগ নেই। এখন কাজ করবে কেবল ডাক্তার, নার্স এবং নিরাপত্তার কাজে সংশ্লিষ্টদের। সুতরাং হাহুতাশ করে লাভ নেই। সহায় সম্পদ দান কিংবা মানুষ মানবতার জন্য ব্যয় করতে চাইলে সরকারি বা স্বেচ্ছাসেবী খাতে জমা দিন। উনারাই আপনার হয়ে কাজ করবে। আমার আপনার জন্য উনারা বাহিরে এবং রিস্ক নিয়ে কাজ করছেন, আমাদের কাজ কেবল নিজ গৃহে থাকা।
বিপদে ধৈর্য ধরুন। জনসমাগম এড়িয়ে চলুন। আত্মীয় স্বজন দেখাশোনার লোভ সংবরন করুন। প্রয়োজনে অনলাইনে যোগাযোগ করতে সাবলীল হোন। একান্ত প্রয়োজনে বাহিরে বেরুতে নিরাপত্তাকে প্রাধান্য দিন। সরকারি নির্দেশনা গুলো মেনে চলুন। খাদ্য ও খরচে মিতব্যয়ী হোন। আর্থিক অসংগতিতে থাকা প্রতিবেশিদের যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করুন। সর্বপোরি মানবিক দেশ গঠনে বিশেষ অবদান রাখুন।
নোটঃ আস্থা ও বিশ্বাস রাখুন। আল্লাহ চাহে তো দ্রুত এ সংকট কেটে যাবে। হে পরওয়ারদেগার, তুমি এ বিপদগ্রস্ত জাতিকে রক্ষা করো। তোমার ঐশ্বরিক সাহায্য খুউব প্রয়োজন এ প্রলয়লীলায়। — আমিন।
লেখক: সম্পাদক, দেশালোক ডটকম।