মেঘনা উপকূল ও বেড়ীবাঁধ দর্শনার্থীবান্ধব করার দাবি

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ১২:২৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ২, ২০২৩

দেশালোক:

প্রতিনিয়তই দর্শনার্থীদের জনপ্রিয় হয়ে উঠছে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার মেঘনা বীচ ও বেড়ীবাঁধ এলাকা। বিগত কয়েক বছর ধরে সরকারি ছুটির দিনসহ অন্যান্য উৎসবের দিনগুলোতে এ এলাকায় দর্শনার্থীদের আনাগোনা বেড়ে যায় বেশ কয়েকগুন। দেশের দক্ষিনাঞ্চলের জেলা ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চাঁদপুর, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলাসহ নানান প্রান্ত থেকে আসেন দর্শনার্থীরা। আছে লক্ষ্মীপুরের ৫টি উপজেলার স্থানীয় জনসাধারনের ব্যাপক সমাগম।
আসন্ন ঈদুল আযহার দীর্ঘ ছুটিতেও ব্যাপক দর্শনার্থীদের সমাগম ঘটবে বলে ধারনা করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। ঈদকে কেন্দ্র করেই স্থানীয় ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি মৌসুমী ব্যবসায়ীরা সাজাচ্ছেন বিভিন্ন পণ্যের দোকান। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নির্মিত প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার মেঘনা তীর সংরক্ষণ বাঁধকে ঘিরেই মূলত দর্শনার্থীদের আগ্রহ। মেঘনা উপকূল এবং তীর সংলগ্ন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপাল লীলা এ বেড়ীবাঁধ থেকেই উপভোগ করা যাচ্ছে খুব সহজে।
দর্শনার্থীদের উপস্থিতি বৃদ্ধির পাশাপাশি মেঘনা তীর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় লেগেছে নানামূখী পরিবর্তনের ছোঁয়া। স্থাপিত হয়েছে হোটেল রেস্তরা। মেঘনা অদূরে জেগে ওঠা চরগুলোতে ঘুরতে যাওয়ার জন্য আছে স্পিডবোট এবং ইঞ্জিনচালিত ট্রলার। ছবি তোলার জন্য আছে দুই শতাধিক ভ্রাম্যমান ফটোগ্রাফার।
ঈদের দিন থেকে পরবর্তী এক সপ্তাহ সময় ধরে লাখো দর্শনার্থীর সমাগম থাকায় প্রায়ই নানান বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে। নারীদের যৌন হয়রানি, ছিনতাই, ফটোগ্রাফারদের উত্যোক্তি, খাবারের অতিরিক্ত দাম ইত্যাদির ঘটনাও ঘটছে। অবশ্য এসব ঘটনাকে নিতান্তই বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবেই দেখছেন স্থানীয়রা। এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা রোধে ঈদের ছুটির দিনগুলোতে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রসাশন, পুলিশ, আনসার ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো পালন করছে বহুমুখী কার্যক্রম।
যত্রতত্র ও নিয়মনীতি না মেনে বেড়ীবাঁধমূখী যানবাহনের পার্কিং করায় উপজেলা পরিষদের সামনে থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পর্যন্ত ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। বাঁধের উপর ভ্রাম্যমান হকারদের আধিক্যের কারনে দর্শনার্থীদের চলাচল বাধাগ্রস্থ হয়।
উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা এসএম শান্তুনু চৌধুরী জানান, ঈদের ছুটির দিনগুলোতে মেঘনা তীর ও বেড়ীবাঁধকে ঘিরে উপজেলা প্রসাশন বিশেষ প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ১শ ৯৮কোটি টাকা ব্যয়ে মেঘনা তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় লক্ষ্মীপুরের রামগতি—কমলগর এলাকায় মেঘনার ভাংগনরোধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সাড়ে ছয় কিলোমিটার বেড়ীবাঁধ নির্মান করা হয়। এর মধ্যে আলেকজান্ডার উপকূলে সাড়ে চার কিলোমিটার, রামগতি বাজারে এক কিলোমিটার এবং কমলনগর উপজেলার মাতাব্বর হাট এলাকায় এক কিলোমিটার বেড়ীবাঁধ নির্মান করা হয়। বেড়ীবাঁধ নির্মানের পর থেকেই এ বাঁধটি দর্শনার্থীদের আগ্রহের স্থান হিসেবে বৃহত্তর নোয়াখালী জেলার একটি অন্যতম দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।