রামগতিতে চাহিদার চেয়েও ১১ হাজার মেট্রিক টন মাছ উদ্বৃত্ত

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ৫:০৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩১, ২০২৩

সারোয়ার মিরন:
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে চাহিদার তুলনায় প্রায় ১১ হাজার ১১০ মেট্রিক টন মাছ উদ্বৃত্ত রয়েছে। উদ্বৃত্ত এ মাছ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঘাটতি পূরণ করছে। জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে এমন তথ্য জানিয়েছে রামগতি উপজেলা মৎস্য দপ্তর। অন্যদিকে মৎস্যজীবী নেতাদের দাবি, বিপুল পরিমান উদ্বৃত্ত মাছ সংরক্ষণাগার না থাকায় ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না তারা। ভরা মৌসুমে মাছ সংরক্ষনের নানান উপকরনের সীমাবদ্ধতা থাকায় অতিরিক্ত মাছ কম মূল্যে বেপারীদের দিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। সংরক্ষনের সুযোগ থাকলে এ বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হতে হতো না।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন জানান, সরকারিভাবে রামগতি উপজেলায় সংরক্ষণাগার নির্মানের পরিকল্পনা সরকারের নেই। তবে বেসরকারীভাবে কেউ এটি স্থাপনে আগ্রহী হলে আমরা তাঁকে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করবো। পাশাপাশি আজাদনগর বাজারে স্থাপিত উপজেলার একমাত্র মৎস আড়তটি অন্যত্র সরিয়ে নেয়াসসহ আধুনিকীকরন করা হবে বলেন জানান তিনি।

উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ৩৭৪ বর্গ কিমি আয়তনের এ উপজেলায় ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নে মোট জনসংখ্যা ২ লক্ষ ৭৯ হাজার ৯ জন। এছাড়াও উপজেলায় মোট পুকুর সংখ্যা ১৬ হাজার ২৭৮টি, ব্যক্তি মালিকাধীণ পুকুর ১৬ হাজার ২৩৫টি। সরকারি পুকুর ৩৩টি, খাল ১৬টি। মেঘনা নদী ২৫ কিলোমিটার এলাকায় ৫২ হাজার হেক্টর। নিবন্ধিত নৌযান ৮৫০টি এবং নিবন্ধিত জেলে সংখ্যা ২২ হাজার ৪৭০ জন। মৎস্য চাষী ১২ হাজার ৫০০ জন। মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি ১টি, মৎস্যজীবি সংগঠন ৩টি, বোট মালিক সমিতি ২টি। মাছ ঘাট ৯টি, আড়ত ৭টি, মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ১টি এবং পোনা উৎপাদনকারী ১৬ জন রয়েছে। গত অর্থ বছরে মেঘনা নদী ও এসব পুকুর জলাশয়ে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মৎস্য আহরনের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৬হাজার ১১০ মেট্রিক টন। কিন্তু আহরন করা হয়েছে প্রায় ১৭হাজার ২২০ মেট্রিক টন। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ১১হাজার ১১০ মেট্রিক টন বেশি। অন্যদিকে উপজেলায় ইলিশের উৎপাদন ৯হাজার ৩১৫ মেট্রিক টন।

উপজেলা মৎস্য দপ্তর থেকে মৎস্যচাষী ও খামারিদের জন্য মৎস্যচাষ উপকরণ এবং প্রকল্প তৈরীতে সহযোগিতা করা হয়। মৎস্য খাতে ক্ষুদ্র ঋণ দেয়ার চেষ্টার পাশাপাশি মৎস্য অধিদপ্তরের আওতায় মৎস্যজীবী পরিবারের মাঝে প্রায় ৪হাজার মেট্রিক টন ভিজিএফ এর চালসহ খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়। এছাড়াও সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ইলিশ ধরা নিষেধাজ্ঞা চলাকালে নদী ও সমুদ্রগামী নিবন্ধিত জেলেদের সহায়তা করা হয়ে থাকে। যাতে তারা ওই সময়টাতে পরিবার নিয়ে চলতে পারে।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো: জসিম উদ্দিন জানান, আমরা মাছ চাষে সফল। উপজেলায় মাছের চাহিদা মিটিয়ে আমাদের উদ্ধৃত্ত রয়েছে। এ উদ্বৃত্ত মাছ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় চালান হচ্ছে। আমরা বিভিন্ন ভাবে চাষীদের উৎসাহিত করার চেষ্টা করছি।

উল্লেখ্য, ২৪ থেকে ৩০জুলাই সারাদেশের ন্যায় জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৩ পালন করে উপজেলা মৎস্য দপ্তর। এ উপলক্ষে গত এক সপ্তাহে অবৈধ জালের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা, মৎস্যচাষীদের প্রশিক্ষণ, জন সচেতনতা সৃষ্টি, পরামর্শ এবং সুফলভোগিদের মাছ চাষ বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও উপকরন বিতরনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।