‘কিচেন মার্কেট’ নির্মানের উদ্যোগে দু:খ ঘুচবে আলেকজান্ডারের ৪০ ব্যবসায়ীর

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ৫:৪৭ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৫, ২০২৩

দেশালোক:
লক্ষ্মীপুরের রামগতি পৌরসভা স্থাপিত হওয়ার প্রায় দুই যুগ পর স্থায়ী ঠিকানা পেতে যাচ্ছে পৌর আলেকজান্ডার বাজারের ৪০ কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘কোভিড-১৯ রিকভারি প্রজেক্টের’ আওতায় প্রায় অর্ধকোটি টাকা বরাদ্দে বাজারের দক্ষিণ মাথায় নির্মিত হচ্ছে খোলা ‘কিচেন মার্কেট’। জানা যায়, বাজার প্রতিষ্ঠার পর থেকে কাঁচাবাজার এবং টোলঘরটি চরআলেকজান্ডার ইউনিয়ন পরিষদ দেখাশোনা করত। ২০০০ সালে পৌরসভা ঘোষনার পর থেকে উক্ত স্থানগুলোর দায়িত্ব পৌর কতৃর্পক্ষের হাতে ন্যস্ত হয়।
দীর্ঘদিন ধরে অস্থায়ী দুটি শেডে কোনো রকম ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন ওইসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। কিন্তু পৌরসভার তত্ত্বাবধায়নাধীন ওই দুটি শেডের একটি দু বছর পূর্বে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে গেলে ব্যবসায়ীরা অন্য একটি শেডসহ সড়কের দু’পাশে অস্থায়ী দোকান বসিয়ে কোনো রকম বেচাকেনা করে আসছেন। এতে করে দুর্ভোগের কমতি ছিল না ক্রেতা-বিক্রেতাদের। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সেখানে একটি ‘কিচেন মার্কেট’ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে পৌর কতৃর্পক্ষ। মার্কেট নির্মানের এ উদ্যোগের বিরোধীতা করে একটি পক্ষ অপপ্রচার ও ব্যবসায়ীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ী এবং পৌর কতৃর্পক্ষ।
পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত এ পৌরসভাটির প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র আলেকজান্ডার বাজারের দুটি শেড স্থানীয় পৌরবাসীর জন্য নিত্য খাদ্যদ্রব্য কেনাবেচার একমাত্র উপযুক্ত স্থান। কিন্তু গত বছর ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ‘আল-আমিন টোলশেড’ নামে একটি শেড অগ্নিকান্ডে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অর্ধশত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ফুটপাতের ব্যবসায়ী হয়ে পড়েন। এতে বাজারের বিভিন্ন গলিতে তীব্র যানজটসহ নানান দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। পরে বাজারের পরিচালনা কমিটির দাবির প্রেক্ষিতে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পৌর কতৃর্পক্ষ ‘কিচেন মার্কেট’ নির্মাণের উদ্যোগ নেন। এজন্য নির্মাণাধীন মার্কেটের স্থানের ও ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের তালিকা প্রস্তুত করে তাঁদেরকে পুড়ে যাওয়া আল-আমিন মার্কেটের পরিত্যক্ত স্থানে অস্থায়ী ভিত্তিতে ব্যবসা করার সুযোগ করে দেওয়া হয়। সেখানে ৪০জন ব্যবসায়ী ঝুঁড়িতে করে এখন নিয়মিত সবজি বিক্রি করে আসছেন।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী লোকমান হোসেন জানান, কিচেন মার্কেটের নির্মাণকাজ শুরু হওয়ায় তাঁদের ব্যবসা বন্ধ হওয়ায় উপক্রম হয়েছিল। পরে বাজার পরিচালনা কমিটি ও পৌর কতৃর্পক্ষ উদ্যোগ নিয়ে তাঁদেরকে অস্থায়ী ভিত্তিতে বিনা ভাড়ায় ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। এতে স্ত্রীসন্তান নিয়ে তিনি ডাল-ভাত খেতে পারছেন। না হলে কয়েক মাসের জন্য তাঁর ব্যবসা বন্ধ থাকতো।
আলেকজান্ডার বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি সামছুল বাহার খন্দকার জানান, তাঁদের অনুরোধসহ বাজারের কাঁচাবাজারের ক্রেতা-বিক্রেতাদের দুর্ভোগ লাঘবে পৌর কতৃর্পক্ষ কিচেন মার্কেটটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। আর নির্মাণকালীন সময়ের জন্য পৌর কতৃর্পক্ষের সহযোগিতায় তাঁরা সবজি বিক্রেতাদের সাময়িকভাবে ব্যবসা চালিয়ে নেওয়ার জন্য সুযোগ করে দিয়েছেন। এখানে কোনো দখল বা অনিয়ম হয়নি। কারণ, সেখানে দোকান নির্মাণ বা স্থায়ী কোনো কিছু বসানো হয়নি।
পৌর প্যানেল মেয়র শাহাদাত হোসেন এবং কাউন্সিলর মতুর্জা আল আমিন জানান, কিচেন মার্কেট নির্মাণকালীন সময়ের জন্য সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে ওইসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে ব্যবসা চালিয়ে নেওয়ার জন্য আল-আমিন মার্কেটে বসার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। পৌর কতৃর্পক্ষের সহযোগিতায় বাজারের পরিচালনা কমিটির লোকজনই এটি করেছেন। তারা বলেন, কিচেন মার্কেটটি নির্মাণ হলে এ ব্যবসায়ীদের সেখানে স্থান করে দেওয়া হবে। এতে পৌরসভার রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে।
রামগতি পৌর মেয়র এম মেজবাহ উদ্দিন জানান, ব্যবসায়ীদের স্বার্থের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই বাজারে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে। অপপ্রচার ও গুজবে কান না দিয়ে পৌরসভার উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা কামনা করেন।