প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনেও রামগতিতে বিভক্ত আ. লীগ

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ৮:১৫ অপরাহ্ণ, জুন ২৫, ২০২৪

সারোয়ার মিরন, রামগতি:
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও প্লাটিনাম জয়ন্তী পালনেও লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে উপজেলা আওয়ামীলীগ বিভক্ত দুই ভাগে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মতো গুরুত্বপূর্ন কর্মসূচিতেও একটেবিলে দেখা মেলেনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ও ৬ষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে বিভক্ত হওয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে। উপজেলা শহর আলেকজান্ডারের দু স্থানে আলাদা আলাদা ব্যানারে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের অনুষ্ঠান করেছে দুটি গ্রুপ।

রোবরার বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহেদ এর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে বঙ্গবন্ধু’র প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন এবং দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, বৃক্ষরোপন, শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। ঐ দিন সন্ধ্যায় রামগতি পৌরসভা মাঠে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল কাশেম নিজামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন রামগতি পৌর মেয়র এম. মেজবাহ উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ড. আশরাফ আলী চৌধুরী সারু, কেন্দ্রিয় আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ইস্কান্দার মির্জা শামীমসহ অন্যান্যরা।

অন্যদিকে একই দিন বিকেলে লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) আসনের সংসদ সদস্য ও লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো: আবদুল্যাহ আল মামুন এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ মুরাদের নেতৃত্বে উপজেলা পরিষদের সামনে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু’র প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন, বৃক্ষরোপন, শোভাযাত্রা, কেক কাটা এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলেকজান্ডার সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত এ সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক আবু নাছের, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মেজবাহ উদ্দিন (ভিপি হেলাল), যুগ্ম আহবায়ক শোয়াইব হোসেন খন্দকার, চরআলগী ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন লিটন চৌধুরী, চররমিজ চেয়ারম্যান মোজাহিদুল ইসলাম দিদার, চরগাজী চেয়ারম্যান তাওহীদুল ইসলাম সুমনসহ অন্যান্যরা।
উল্লেখ, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীতা ঘিরে শুরু হয় রামগতি উপজেলা আওয়ামী লীগের চতুর্মুখী বিভক্তি। জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও তাদের ১৪দলীয় জোট প্রার্থী জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের কেন্দ্রিয় নেতা মোশারেফ হোসেন নৌকা প্রতিকে প্রতিদ্বন্ধীতা করে পরাজিত হয়েছেন। জোটের এ প্রার্থীর পক্ষে ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারন সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ এবং রামগতি পৌর মেয়র এম. মেজবাহ উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন নেতা।

অন্যদিকে দলীয় প্রার্থীতা না পাওয়ায় স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করেন সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল্যাহ আল মামুন। তার পক্ষে ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ মুরাদ, সহ-সভাপতি ড. আশরাফ আলী চৌধুরী সারু, ইউনিয়ন পরিষদের বেশ কয়েকজন চেয়ারম্যান, উপজেলা যুবলীগের প্রথমসারির নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের প্রায় অর্ধশতাধিক নেতা। এছাড়াও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য কেন্দ্রিয় আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলি’র পক্ষে আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতা এবং কৃষকলীগ, শ্রমিকলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতা। অন্যদিকে মধ্যম সারির বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মী ভোট করেছেন কেন্দ্রিয় আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটির সদস্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ইস্কান্দার মির্জা শামীমের।

জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মো: আবদুল্যাহ আল মামুন বিজয়ী হওয়া এবং ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনকে ঘিরে চার গ্রুপের বিভক্তি রুপ নেয় দুই গ্রুপে। উপজেলা নির্বাচনে সাংসদ মো: আবদুল্যাহ আল মামুনসহ তাঁর সমর্থিতরা ভোট করেন চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী হওয়া শরাফ উদ্দিন আজাদ সোহেল এর। অন্যদিকে সংরক্ষিত নারী সাংসদ ফরিদুন্নাহার লাইলি’র সমর্থনসহ রামগতি পৌর মেয়র এম. মেজবাহ উদ্দিনসহ স্বল্প সংখ্যক দলীয় এবং অঙ্গসংগঠনের নেতা আবদুল ওয়াহেদ এর পক্ষে ভোট করেছেন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনেও গত ছয় মাস ধরে চলা দলীয় এ বিভক্তি ফের প্রকাশ্যে এসেছে। দলীয় এ বিভক্তি দলীয় দীর্ঘদিন চলমান থাকলে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হবে মনে করেন সাধারণ নেতা-কর্মীরা।