ঈদের ছুটিতে পর্যটকমুখর রামগতি মেঘনা বেড়ীবাঁধ

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ৮:২৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৩, ২০২২

দেশালোকঃ
লখো দর্শনার্থীর পদচারনায় মুখর লক্ষ্মীপুরের রামগতি মেঘনা বেড়ীবাঁধ এলাকা। ২০১৫ সালে মেঘনার ভাংগন রোধে প্রায় দুইশো কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে সাড়ে ছয় কিলোমিটার তীর সংরক্ষন বাঁধ। সময়ের ব্যবধানে বহুমুখী সৌন্দর্যে ভরপুর এ বেড়ীবাঁধে  এবারও ব্যাপক জনসমাগম ঘটেছে। ঈদের দিন কিছুটা কম হলেও দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দিন কয়েকগুন বেড়েছে উপস্থিতি।

চর আলেকজান্ডার এলাকায় সাড়ে চার কিলোমিটার এবং রামগতি বাজার এলাকায় নির্মিত ১কিলোমিটার বাঁধের পুরোটা জুড়েই রয়েছে দর্শনার্থীদের আনাগোনা। লক্ষ্মীপুরের পার্শ্ববর্তী জেলা নোয়াখালী, ফেনী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, ভোলা কুমিল্লাসহ বেশ কয়েকটি জেলা থেকে বাস, ট্রাক, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল, নৌকাযোগে আসছেন দর্শনার্থীরা।

বাঁধের পুরোটা জুড়ে ঝাউ বাগান, পাথরবাঁধাই নদী তীর, মেঘনার বিশাল জলরাশি, টাংকির স্লুইসগেট, বয়ারচর ঝাউবাগান, ভাসমান চরের মহিষের বাথান, চরগজারিয়ার প্রাকৃতিক বনসহ নানান স্থানে ঘুরছেন তারা। দর্শনার্থীদের অবাধ বিচরন এবং নিরাপত্তার জন্য উপজেলা প্রসাশনের পক্ষ থেকে আনসার সদস্য নুযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়মিত টহল অব্যাহত আছে। পাশাপাশি বাঁধের উপরে থাকা অস্থায়ী টং দোকানগুলো অপসারন করা হয়েছে। রাতের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য বাঁধে স্থাপন করা হয়েছে অর্ধশাধিক সোলার বাতি, দর্শনার্থীদের বিশ্রামের জন্য তৈরি করা হয়েছ ৯টি কংক্রিট ছাতা। এছাড়াও বাঁধের উঠার জন্য রয়েছে ৫টি সিঁড়ি। থাকার ব্যবস্থা না থাকলে খাওয়ার সুব্যবস্থা রয়েছে। পুরো বাঁধ জুড়ে কাজ করছে শতাধিক ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার। ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে উঠেছে পার্কিং জোন। বখাটেপনা ও ইভটিজিং রোধে ইতিমধ্যে নেয়া হয়েছে নানান পদক্ষেপ।

মেঘনা জলে সাঁতার কিংবা জলকেলিত নামা দর্শনার্থীদের জন্য চেঞ্জরুম, ওয়াশরুম ও টয়লেট সুবিধা না থাকায় বিরক্তি প্রকাশ করছেন অনেকে।  দর্শনার্থীদের গাড়ি পার্কিং এর অব্যবস্থাপনায় সৃষ্ট যানজটের বিষয়টিও স্থানীয় প্রসাশনের বিবেচনায় নেয়ার দাবি করছেন কেউ কেউ। অন্যদিকে ঘুরতে এসে উপজেলার বিখ্যাত মহিষের দুধের টক দই, তাজা ইলিশ এবং মিষ্টি কিনতে দেখা গেছে অনেককে।

নোয়াখালীর সূবর্নচর থেকে আসা শাখাওয়াত হোসেন জানান, এ নিয়ে তৃতীয়বার মেঘনা বীচে আসছি বন্ধুরা মিলে৷ চরে গিয়ে সবাই মিলে মজা করেছি। খেলাধুলা করেছি।

লক্ষ্মীপুরের সদর উপজেলা থেকে আসা আবদুল আজিজ জানান, আশপাশের মানুষের কাছ থেকে মেঘনা বেড়ীবাঁধের প্রসংশা শুনে পুরো পরিবার নিয়ে আসছি আজকে। এখানে এসে সত্যিই ভালো লাগছে।

উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা এসএম শান্তুনু চৌধুরী জানান, রামগতির এই জনপদটি ছিল ভাঙনপ্রবণ।অর্ধশত বছরের অব্যাহত ভাঙন ঠেকিয়ে এলাকাটি এখন বিনোদন স্পটে পরিনত হয়েছে। বিপুল দর্শনার্থীদের সর্বোচ্চ সুবিধা দিতে আনসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও যে কোন সমস্যায় দ্রুত যোগাযোগের জন্য হটলাইন খোলা হয়েছে।

রামগতি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, বাঁধ এলাকায় আসা মানুষদের নিরাপত্তা রক্ষায় আমরা কাজ করছি।