বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের করুন কথা Sarwar Sarwar Miran প্রকাশিত: ৮:৩১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৫, ২০২০ দেশালোক: বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বেসরকারি কলেজে প্রথম অনার্স-মাস্টার্স কোর্স ১৯৯৩ সালে চালু করে। বর্তমানে দেশের ৪৯৪টি বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে ২,১০,০০০ জন শিক্ষার্থীর শিক্ষাদানে নিয়োজিত অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে নিয়োগপ্রাপ্ত ৩,৫০০ জন শিক্ষক। ২০০০ খ্রি. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্তি সংক্রান্ত সংশোধিত রেগুলেশনের ৪র্থ পৃষ্ঠায় প্রতিষ্ঠানে অনার্স কোর্স অধিভুক্তির শর্তাবলীতে উল্লেখ আছে ডিগ্রী (অনার্স) কোর্সে শিক্ষাদানের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকটি বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেগুলেশনে বর্ণিত শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন অন্তত: ৭(সাত) জন (ডিগ্রী পাসসহ) শিক্ষক/শিক্ষকা কর্মরত থাকিতে হইবে। এই নিয়ম মেনে কলেজে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ১ জন শিক্ষক, ডিগ্রী পর্যায়ে ১ জন শিক্ষকসহ অনার্স কোর্স চালুর জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট প্রতি বিষয়ে অনার্স কোর্সে ৫ জন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে থাকে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ২০১২ সালের আগস্ট মাসে প্রকাশিত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ও কর্মচরীদের বেতন-ভাতাদির সরকারি অংশ প্রদান এবং জনবল কাঠামো সম্পর্কিত ২০১০-এর সংশোধিত নির্দেশিকার ১৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুমোদিত জনবল কাঠামোর অতিরিক্ত শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োজিত রাখলে অতিরিক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি ও আনুষাঙ্গিক সুবিধাদিসহ ১০০% সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বহন করতে হবে।’ এবং ১৯৯৪ খ্রি. প্রকাশিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরির শর্তাবলী রেগুলেশনের ৫ পৃষ্ঠায় ‘বেতন ও ভাতা’ নির্দেশিকায় উল্লেখ আছে- প্রত্যেক কলেজে সকল শ্রেণীর শিক্ষকের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অনুমোদিত অথবা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বেতনক্রম এবং বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির ব্যবস্থা থাকিবে।’ বাস্তবে দেখা যায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের সকল শ্রেণীর শিক্ষকদের ১০০% বেতন ভাতা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রদানের নির্দেশনা থাকলেও এ ব্যাপারে উভয় কর্তৃপক্ষের কোন পর্যবেক্ষণ না থাকায় দেশের ৯৫%এর বেশি প্রতিষ্ঠান শিক্ষকের মাসিক বেতন প্রতিষ্ঠান ভেদে ৩,০০০ টাকা থেকে ৬,০০০ টাকা করে প্রদান করছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। শিক্ষকদের চাকরিচ্যুতির ভয় দেখিয়ে এতদিন এসমস্ত বঞ্চিত শিক্ষকদের মুখ বন্ধ করে রেখেছিল প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। এ দ্রব্যমূল্যের বাজারে এখন এসমস্ত শিক্ষকদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। অর্ধহারে, অনাহারে থেকে আর কতদিন শিক্ষকরা এ উচ্চ স্তরের পাঠ্যক্রমে মনোযোগের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পড়াতে পারবে! সরকার এই সমস্ত শিক্ষকদের দায়িত্ব না নিয়ে তাদের ভাগ্য কলেজ কর্তৃপক্ষের খেয়াল-খুশির উপর ছেড়ে দিয়েছেন, যা রাষ্ট্রের এক ধরনের উদাসীনতা। বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের এমপিও না করায় এই দীর্ঘ ২৫ বছরে কলেজ কর্তৃপক্ষ শিক্ষকদের নূন্যতম বেতনও দিচ্ছেনা। অপরদিকে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের খেয়াল খুশিমত এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে মাসিক বেতন আদায় করছে। এতে করে, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়ই বঞ্চিত হচ্ছে। সরকার ঘোষিত বর্তমান পে-স্কেলে প্রাইমারি শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১১,০০০ টাকা, মাধ্যমিক শিক্ষকদের বেতন স্কেল ১৬,০০০টাকা, উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রী কোর্সের শিক্ষকদের বেতন স্কেল ২২,০০০টাকা। আর দেশের বেসরকারি কলেজের উচ্চশ্রেণীতে পাঠদানরত শিক্ষকদের বাস্তবে কোন স্কেল নাই, এই সমস্ত শিক্ষকরা কর্তৃপক্ষের খেয়ালের দাস, একই প্রতিষ্ঠানে চাকুরিরত নিম্ন শ্রেণীর এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের থেকে অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে পাঠদানরত উচ্চশ্রেণীর শিক্ষকরা ১০ ভাগের ১ ভাগ বেতনও পাচ্ছেনা। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে এইভাবে বঞ্চিত হচ্ছে দেশের উচ্চ শ্রেণীর শিক্ষকরা। বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টর্স কোর্সের অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অবস্থা আরো করুণ। বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে শিক্ষার্থীদের মাসিক কত টাকা বেতন দিতে হবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বা উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর নির্ধারন না করায় প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ খেয়াল খুশিমত শিক্ষার্থীদের থেকে বেতন আদায় করছে। প্রতিষ্ঠান ভেদে একজন শিক্ষার্থীর মাসিক বেতনের পরিমান ৩০০ টাকা থেকে ১,৫০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। প্রায় সব প্রতিষ্ঠান শিক্ষর্থীদের নিয়ে রিতিমতো ব্যবসা করছে। আবার এসব কোর্সে প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের থেকে ভর্তি ফি, ইনকোর্স, টার্মপেপার ও মৌখিক পরীক্ষার বাড়তি ফিসহ বিভিন্ন ধরনের জরিমানা আদায় করছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। ভর্তি ফি এর ব্যাপারে কোন পর্যবেক্ষণ না থাকায় প্রতিষ্ঠান ভেদে ভর্তিতে শিক্ষার্থী প্রতি ৫,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫,০০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। দেশের দরিদ্র পরিবারের মেধাবী শিক্ষার্থীরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বেসরকারি কলেজে অনার্স কোর্সে ভর্তি হতে চায়। কিস্তু অধিক হারে ভর্তি ফি ও মাসিক বেতনের কারণে অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পরে না। আবার অনেক ক্ষেত্রে কোর্স সম্পন্ন না করেই অর্থাভাবে অনেকেই পড়ালেখার ইতি টানে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক গত ১৪ অক্টোবর ২০১৫ইং তারিখে বেসরকারি অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করতে বার্ষীক ৮৮,৮৬,৯০,০০০ টাকা উল্লেখ করে শিক্ষমন্ত্রণালয়ে মতামত প্রেরণ করেন। যা বর্তমান পে-স্কেল অনুযায়ী দাড়াবে আনুমানিক ১৭৭,৭৩,৮০,০০০ টাকা। অথচ অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে পাঠদানরত ২,১০,০০০ জন শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে বার্ষিক ৫০০,০০,০০০০০ (পাঁচ শত কোটি) টকারও বেশি আদায় করছে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। এই বিপুল পরিমান টাকা শিক্ষার্থীদের থেকে আদায় করা সত্বেও, কলেজ কর্তৃপক্ষ, অনার্স মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষকদের ১০০% বেতন ভাতা নিশ্চিত না করে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও অনার্স-মাস্টার্স কোর্সের পাঠ্য বিষয়ের (ইন্টারমিডিয়েট ও ডিগ্রীর জন্য নিয়োগ প্রাপ্ত) এমপিওভুক্ত প্রভাষকগণকে অনার্স-মাস্টার্স তহবিল থেকে যথেচ্ছভাবে সম্মানি দিচ্ছে আর অনার্স-মাস্টার্স তহবিলের অর্থ যথেচ্ছভাবে খরচ করছে। এই অর্থ আদায় করে কলেজ কর্তৃপক্ষ একদিকে যেমন গরীবের পেটে লাথি মারছে অপরদিকে প্রায় দুইযুগ ধরে শিক্ষকদের ন্যায্যতা থেকে বঞ্চিত করে চলছে। বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি থাকলে এবং শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন নির্ধারন করা থাকলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা এইভাবে বঞ্চনার শিকার হতোনা। এসমস্ত কারণে বেসরকারি কলেজ অনার্স- মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষকরা এমপিওভুক্তি চায়। দীর্ঘ ২৫ বছর বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষকদের শ্রমে, ঘামে, ত্যাগে, সেবায় লাখ লাখ শিক্ষার্থী যোগ্য জনশক্তিতে পরিনত হয়েছে। তাই অজ অনার্স-মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষার্থীদের আয় সরকারি কোষাগারে জমা নিয়ে শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি: মাননীয় অর্থমন্ত্রী এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আয় সরকারি কোষাগারে জমা নিয়ে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পে-স্কেল কার্যকর করার কথা বলেছেন। মাননীয় শিক্ষমন্ত্রী এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ের হিসাব আইনের আওতায় আনতে ১ মাসের মধ্যে আইন পাশের জন্য সংসদে উঠবে বলে জানিয়েছেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আয়ের মধ্যে বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষার্থীদের থেকে আদায় করা আয় ও অন্তর্ভুক্ত আছে। বেসরকারি কলেজের অনার্স- মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষকরা এমপিও বিহীনভাবে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানেই চাকরি করে। আমরা বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষার্থীদের থেকে আদায় করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আয় আইনের আওতায় এনে সরকারি কোষাগারে জমা নিয়ে বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির জোর দাবি জানাই। বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে শিক্ষার্থীদের ন্যুনতম বেতন এবং ভর্তি ফি নির্ধারণ করে দেবার দাবি জানাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের ন্যুনতম বেতন এবং ভর্তি ফি নির্ধারিত থাকলে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের থেকে যথেচ্ছভাবে অর্থ আদায় করতে পারবেনা। দেশের বেশিরভাগ দরিদ্র শিক্ষার্থীরা বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে পড়ালেখা করে। এতেকরে দেশের দরিদ্র জনোগোষ্ঠি বিশেষভাবে উপকৃত হবে। বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির বিষয়ে ৯ম জাতীয় সংসদের শিক্ষামন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সুপারিশ অনযায়ী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ইং তারিখে অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করার নির্দেশনা দিয়ে শিক্ষা সচিবকে পত্র দেয়া হয়েছে। এই পত্রের আলোকে গত ১৪ অক্টোবর ২০১৫ ইং তারিখে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর মতামত দিয়েছে (১) বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির বিষয়ে কোন জনবল কাঠামো না থাকায় এবং ২০১০ সালে জারিকৃত (মার্চ ২০১৩ পর্যন্ত সংশোধিত) জনবল কাঠামোতে কোন নির্দেশনা না থাকায় অনার্স ও মাস্টার্স কোর্সে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করা হয় না, (২) এখন অনার্স ও মাস্টার্স কোর্সে নিয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করতে বার্ষিক ৮৮,৮৬,৯০,০০০ টাকা প্রয়োজন উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। গত ১লা ডিসেম্বর ২০১৫ইং তারিখে ১০ম জাতীয় সংসদের শিক্ষামন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি বেসরকারি কলেজে অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির জন্য অর্থমন্ত্রণালয়ে চিঠি দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যা বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে। ২০১০ সালে জারিকৃত (মার্চ ২০১৩ পর্যন্ত সংশোধিত) জনবল কাঠামো আবার সংশোধন করে অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের অন্তর্ভূক্ত করে নিলেই বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিওভুক্তিতে আর কোন বাধা থাকবেনা। তাই এই বিষয়ে আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ও সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে গত ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৫ইং তারিখে অনার্স-মাস্টার্স কোর্সে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির নির্দেশনা প্রদান করায়, দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাতে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা দ্রুত বাস্তবায়ন করে বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করে, সেই লক্ষ্যে গত ২৭ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক পরিষদ কর্তৃক মহাসমাবেশের আয়োজন করা হয়। এই সমাবেশের পূর্বে প্রশাসন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রার্থনা করেছি। আমারা জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে সমাবেশ শুরু করি। সমাবেশ চলাকালে সার্বক্ষণিক সমাবেশস্থলে উপস্থিত আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর কর্তব্যরতব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি। অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ শেষ করে প্রশাসনের সহযোগিতায় আমাদের প্রতিনিধিরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেছে। দীর্ঘ ২৬ বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও এই শিক্ষকদের শুধুমাত্র জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্তি না থাকার কারণে এমপিওভুক্ত করা হয়নি। একইসঙ্গে শর্ত অনুযায়ী কলেজগুলো থেকে শতভাগ বেতন ভাতা দেয়া হচ্ছে না। কেননা শিক্ষার্থীদের পক্ষে উচ্চ বেতনে পড়াশোনা করা সম্ভব নয়। একই এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেখানে ইন্টারমিডিয়েট ও ডিগ্রির শিক্ষকরা এমপিওভুক্ত হতে পারে অন্যদিকে মাদ্রাসা পর্যায়ের কামিল ও ফাজিল কোর্সের শিক্ষকরাও এমপিওভুক্ত হতে পারে সেখানে অনার্স- মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষকদের কেন এমপিওভুক্ত করা হয় না, তা আজও বোধগম্য নয় । দীর্ঘদিন যাবত বেতন ভাতা না পাওয়ায় কর্মরত শিক্ষকরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। দেশের কয়েক হাজার শিক্ষকরা সরকারি বিধি মোতাবেক নিয়োগ পেয়েও সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে যুগযুগ পার করে দিচ্ছেন । এটা স্বাধীন রাষ্ট্রে পরাধীনতার শিকল পড়িয়ে রাখার শামিল। একই কর্মের বিনিময়ে দুধরনের নীতি অনেকটা বেমানান, অমানবিক এবং অসাংবিধানিক। বেতনহীন / নামমাত্র বেতনে উচ্চ শিক্ষা পরিচালনা করার যৌক্তকতা কতটুকু তা বোধগম্য নয়। জনবল কাঠামোর অজুহাতে মানবাধিকার লংঘিত হবে আরো কতদিন? প্রায় সাড়ে তিনলক্ষ শিক্ষার্থীকে শিক্ষাসেবা দানে নিয়োজিত বিধিমোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকগণ কেন বেতন বঞ্চিত থাকবে বোধগম্য হচ্ছে না । দীর্ঘ দিনের এই দাবি আদায়ের জন্য শিক্ষকেরা আন্দোলন সংগ্রাম, মানবন্ধনসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর একাধিকবার স্মারকলিপি প্রদান করেন । এর প্রেক্ষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মহোদয় এসকল শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি প্রদানের জন্য একাধিকবার সুপারিশ করেন । কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় কোন সুপারিশ এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন করেন নি। সবশেষে আমরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হই, সম্প্রতি উচ্চ আদালত অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ে কর্মরত শিক্ষকদের জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্ত করে এমপিওভুক্তি প্রদানের জন্য মাউশি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিলেও সেটি কার্যকর হয়নি। বরং নানা অজুহাতে বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। তাই মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী সহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের কাছে আমাদের বিনীত অনুরোধ অবিলম্বে এই সকল শিক্ষকদের জনবল কাঠামো সংশোধন করে জনবল কাঠামোতে অন্তর্ভুক্তি করে এমপিওভুক্তির ব্যবস্থা করুন। উচ্চশিক্ষাকে এই দূরবস্থা থেকে মুক্ত করুন । শিক্ষকদের মুক্তি দিন দীর্ঘ ছাব্বিশ বৎসরের বঞ্চনা হতে । আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার শিক্ষা বান্ধব সরকারই এ দূরবস্থা থেকে মুক্তি দিবেন, বাস্তবায়ন করবেন আমাদের এমপিওভুক্তি SHARES প্রচ্ছদ বিষয়: