অনুগল্প: এলিয়েন রাজ্যে একদিন Sarwar Sarwar Miran প্রকাশিত: ৮:৩৯ অপরাহ্ণ, জুন ৯, ২০২১ মো.আ.কাদের সাজু : ক্লান্ত শরীরটা বিছানায় এলিয়ে রিমোড দিয়ে টিভি চ্যানেল নাড়াচাড়া করতেছিলাম।কিছুক্ষণ সুনসান নিরবতা। হঠাৎ নিজেকে আবিষ্কার করলাম, বিরাটকায় এক দৈত্যের পিঠে চড়ে, এলিয়েন রাজ্যের উপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছি। কিছুক্ষণ উড়ার পর এলিয়েন রাজ্যের ডিংকানগর শহরের উপর এসে দৈত্যটা হঠাৎ স্থির হয়ে গেলো। আমিও নিচের শহরটার দিকে তাকালাম। বাহ, কি সুন্দর শহর। কিন্তু লক্ষ্য করলাম, পুরো শহরের উপর শনিগ্রহ থেকে ছিটকে আসা মস্ত একটা পাথর ঝুলে আছে। মনে হচ্ছে যে কোনো মুহুর্তেই আছড়ে পড়ে পুরো ডিংকানগর তছনছ করে দিবে। হঠাৎ শহরে বেশ চিৎকার চেঁচামেচি শুনা গেলো। অবাক হয়ে কান পেতে শুনতে চেষ্টা করলাম। একটু উঁচু জায়গায় দাঁড়িয়ে একটা এলিয়েন চিৎকার করে বলতেছে- – আমি তঞ্চঠান্ডু (এলিয়েন)। তোমাদের জন্য সুখবর আছে। একটা বিরাটকায় দৈত্য, আমাদের শহরের উপরের ভয়ানক এ পাথরটা সরিয়ে দিতে রাজি হয়েছে।এর কৃতিত্ব আমার জ্যাঠাতো ভাইয়ের।তার জন্য শুভেচ্ছা।করতালি। (অনেকেই হাততালি দিলো, তবে কয়েকজনকে অজানা কারণে হাততালি থেকে বিরত থাকতে দেখা গেলো) আরেকটা চিৎকার কানে আসলো – আমি সিম্পোনান্ডু (অন্য এলিয়েন)। – কিছুদিন আগেই তো আমার খালাতো ভাই পাথরটার এক কোণে ঘা মেরে, একটা অংশ চূর্ণ করেছিলো। তাই এটা আজ সহজ হয়ে গেছে। ওর জন্য হাততালি। (এবারও অনেকে দিলেও,কয়েকজন অজানা কারণে হাততালি থেকে বিরত থাকলো) অন্য পাশ থেকে আরেকটা চিৎকার শুনতে পেলাম- শোনো সবাই। আমি জগ্গডোঙ্গা (এলিয়েন)। আমার শালাবাবু অনেক আগেই পাথরটার আকার- আকৃতি ও গতিপথ ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলো। যার কারণে, আমরা ভয় কম পেয়েছি।ওনার জন্য শুভেচ্ছা। হাততালি। (এবারও কিছু এলিয়েন হাততালি থেকে বিরত থাকলো।কিন্তু কারনটা বুঝা গেলোনা) অন্যদিকে আরেকটা এলিয়েন জোরে জোরে চিৎকার করছে তবে তার কথা কেউ খেয়াল করছে বলে মনে হলোনা। – আমি সরলঙ্গা (এলিয়েন)। ওরে, তোরা সবে থাম। যার যত অবদান সবাইকে শুভেচ্ছা দিয়ে, মিলেমিশে পাথরটা আগে সরা।আগে সবাই বাঁচি। কাজ শেষ হলে পরে শুভেচ্ছা দেয়া নেয়া নিয়ে ভাগাভাগি করিস। শুভেচ্ছা না পেলে রাগ অভিমান করিস। তাদের কান্ড কারখানা দেখে কৌতুহল মেটাতে না পেরে আমাকে বহনকারী দৈত্যটা পাথর সরাতে রাজি হওয়া দৈত্য কে ফোন করলো। – জিওনকাঞ্চি (দৈত্য): হ্যালো। হ্যালো। বন্ধু, তুমি ডিংকা শহরের উপর থেকে পাথর সরানোর কাজ কবে শুরু করবে? – কাজিঞ্চঙ্গা(২য় দৈত্য): বন্ধু, মহেশ্বরের কাছ থেকে,পাথর সরানোর নির্দেশ পেয়েছি। তবে মনে হচ্ছে কাজটা করা লাগবেনা। শুভেচ্ছা দেয়া নেয়ার বাড়াবাড়ি আর কামড়াকামড়িতে ওরা আগেই মরে যাবে। পাথর সরিয়ে বাঁচানোর দরকার পড়বেনা। – জিওনকাঞ্চি: না বন্ধু, এভাবে বলোনা। সরলঙ্গা এলিয়েনের কথা শোনোনি? ও তো বলেছে, সবাই মিলেমিশে বিপদ মোকাবেলা করতে। — কাজিঞ্চঙ্গা! আরে ধূর।সরলঙ্গা তো সাধারণ এলিয়েন।ওর কথায় কি আসে যায়? দেখোনি? ওর কথা কেউ খেয়ালও করেনি। হঠাৎ কানে ভেসে আসলো, ” আসসালাতু খাওরুম মিনান নাওম” ঘুমটা ভেঙে গেলো।ইস! পুরো এলিয়েন রাজ্যটা ঘুরে দেখা হলো না। গল্পকার: শিক্ষক, রামগতি SHARES উপকূল বিষয়: সাজু