রামগতিতে কিশোর গ্যাং! একজনকে জবাইয়ের চেষ্টা, অন্যজনকে চুরিকাঘাত

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ১:২৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৫, ২০২২

দেশালোক:
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার প্রায় প্রতিটি পাড়া মহল্লার কোন না কোন স্থানে গড়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং। কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত নিয়ে চলছে জনমনে নানা আতংক। সম্প্রতি এমনই এক এক কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় উপজেলার চরআলগী ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ড চরআলগী গ্রামে একজনকে জবাই করার চেষ্টা এবং অন্যজনকে করা হয়েছে চুরিকাঘাত। এ ঘটনায় চরআলগী ইউনিয়নব্যাপী আতংক ছড়িয়ে পড়ছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ৩আগস্ট (বুধবার) রাতে স্থানীয় চরআলগী ইউনিয়নের রামদয়াল বাজার সংলগ্ন চরলক্ষ্মী বাড়ির ১৭ বছর বয়সী কিশোর নয়ন পাড়ার কাইয়ুম মেস্তুরির দোকানে আড্ডা দিচ্ছিল। সামান্য কথা কাটাকাটির জেরে হাতাহাতি হয় একই এলাকার মো: কামরুজ্জামানের একমাত্র ছেলে কিশোর পায়েলুর জামান উরফে সনেট (১৮) নামের কিশোর গ্যাং নেতার সাথে। স্থানীয়রা বিষয়টি মীমাংসা করে দিলেও কিছু সময় পর সনেট নয়নের বিদেশ ফেরত চাচা আবদুর হাসেম (৩৮) এর উপর চড়াও হয়। এ সময় হাসেমের গলায় এবং বাম হাতে চুরি দিয়ে আঘাত করে। এতে গলা ও হাত থেকে প্রচুর পরিমাণ রক্ত পড়তে থাকে। চাচাকে রক্ষা করতে এসে চুরিকাঘাতের শিকার হন নয়নও। আহত অবস্থায় স্বজনরা দু’জনকে উদ্ধার করে প্রথমে রামগতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেন। জখমে আহত হাসেমের গলায় এবং হাতে বিশটিরও বেশি সেলাই এবং নয়নের হাতে সাতটি সেলাই দিতে হয়েছে।
৮ আগস্ট ভুক্তভোগী আবদুল হাসেম বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেড আদালতে একটি মামলা করেন। এতে পায়েলুর জামান উরফে সনেট, তার বাবা মো: কামরুজ্জামান এবং তার মা হাজেরা বেগমকে আসামী করা হয়েছে। মামলার স্মারক নং ১২৭১। মামলার পর থেকেই সনেট এবং তার বাবা গা ঢাকা দিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি এবং বখেটপনার নেতৃত্ব দিতে সনেট নানান অপকর্ম করে বেড়ায়। ইতিপূর্বে স্কুল থেকেও সে বহিষ্কৃত হয়েছে। স্থানীয় চরমেহার আজিজিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনির শিক্ষার্থী সনেট দশম শ্রেনির এক ছাত্রীকে ইভটিজিং করায় প্রধান শিক্ষক বাধা দিলে স্বদলবলে প্রধান শিক্ষকের উপর দেশীয় অস্ত্রস্বস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় এবং স্কুলের বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর করে।
এলাকাবাসী জানান, সনেট রামদয়াল এলাকায় ত্রাসসৃষ্টিকারী কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্ব দিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছেন। এলাকাবাসী সনেট ও তার বাহিনীর ভয়ে রীতিমতো আতংকে রয়েছে।
আহত আবদুল হাসেম ও নয়ন জানান, দোকানে বসা নিয়ে দু জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। উপস্থিত অন্যান্যরা বিষয়টি সমাধান করে দিলেও সনেট ও তার দল একাধিক বার আমাদের উপর হামলা চালায়। হামলার এক পর্যায়ে চুরি দিয়ে আমার গলায় এবং হাতে আঘাত করে।
অভিযোগ অস্বীকার করে সনেটের মা হাজেরা বেগম জানান, ওরা পরিবার পরিজন নিয়ে আমি এবং আমার ছেলের উপর হামলা করে। এতে আমার ছেলে এবং আমিও আহত হয়েছি। কে বা কারা তাদের চুরিকাঘাত করেছে তা আমরা জানিনা।
৬নং চরআলগী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জাকির হোসেন লিটন চৌধুরী জানান, ঘটনার দিন আমি এলাকায় ছিলাম না। হামলার বিষয়টি শুনেছি। এবং পরে হাসপাতালে তাদের দেখতে গিয়েছে। আমি চাই দোষীদের আইনের আওতায় নেয়া হোক।
রামগতি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আলমগীর হোসেন জানান, এ ঘটনা শুনার পর আমি ব্যক্তিগত ভাবে এসপি সাহেবকে জানিয়েছি। এখন শুনলাম আদালতে একটি মামলা হয়েছে। আদালত যে আদেশ দিবে আমরা সেই আদেশ পালন করবো।