ঈদে বাইকের উন্মাদনা বনাম জীবনের মায়া

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ২:৩৪ অপরাহ্ণ, মে ১৫, ২০২১
ছবিটি রামগতি মেঘনা বেড়ীবাঁধ থেকে তোলা

সারোয়ার মিরনঃ কঠোর লকডাউন চলমান থাকলেও বন্ধ নেই ঘোরাঘুরি কিংবা জনসমাগম। ঈদ পরবর্তী ঘোরাঘুরিতে প্রচুর পরিমানে ব্যবহৃত হচ্ছে মোটরসাইকেল (বাইক)। বিগত কয়েক বছর ধরে বাইকের দাম ক্রমাগত কমতে থাকায় এটি এখন সহজলভ্য এবং বেশ জনপ্রিয় বাহন। দু চাকার এ বাহনে সর্বোচ্চ আসন সংখ্যা চালকসহ দু জন।

দক্ষ ও বৈধ চালকের যথেষ্ট অভাব থাকলেও এটি এখন যে কেউ ড্রাইভ করতে পারে। যদিও লাইসেন্সধারী ব্যতীত অন্য কেউ ড্রাইভ করা সম্পুর্নরুপে বেআইনি। কিন্তু আমাদের দেশে সিংহভাগ মানুষই এ বেআইনি কাজটিই করে আসছে হরহামেশাই। যার ফলশ্রুতিতে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। ঘটছে ব্যাপক প্রান হানি।

দেশের অন্যান্য স্থানের তুলনায় রামগতি-কমলনগরেও বাইকের আধিক্য বেশ লক্ষ্যনীয়। বিশেষ করে ঈদ পরবর্তীতে এর ব্যাপক উপস্থিতি ঘটে। রামগতি উপজেলার আন্ধারঘর থেকে আজাদনগর পর্যন্ত প্রায় সাতাশ কিলোমিটার রাস্তা একসাথে সংষ্কার হয়েছে। যার ফলে এ রাস্তাটি বেশ ভালো এবং বাইক চলাচলের বেশ উপযোগী।

রাস্তা ঘাটে বড় যানবাহন না থাকায় ঈদের দিন সকাল থেকেই এ সড়কটিতে বাইকের প্রচুর উপস্থিতি দেখা গেছে। চলছেও বেশ বেপোরোয়া গতিতে। এ বেপরোয়া গতির সিংহভাগ চালকই অপ্রাপ্ত বয়স্ক! আশংকার ব্যাপার হলো এ দলে যোগ দিয়েছে উঠতি শ্রেনির যুবকও।

নিজ জেলা লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও ফেনীসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি জেলা থেকেও মেঘনা বেড়ীবাঁধ এলাকা ঘুরতে আসতে দেখা গেছে। বেশিরভাগ বাইক চালকই বেপরোয়া গতিতে ড্রাইভ করছেন।

গতো কয়েক সাপ্তাহ ধরে এ সড়কে বেশ কয়েকটি বাইক দুর্ঘটনা ঘটেছে। একাধিক লোক এসব দুর্ঘটনায় মারাও গেছেন।

সড়ক আঁকাবাঁকা হওয়া, চালকের প্রতিযোগিতা, যানবাহনের আধিক্য, অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও অদক্ষ চালক, অতিরিক্ত যাত্রীবহনসহ আরো বেশ কয়েকটি কারনে দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। উঠতি তরুনদের মনোমগজে হিরোইজম কাজ করে বলে তারাও গতি দিয়ে ড্রাইভ করে থাকে। এ হিরোইজমই বড়ো ধরনের বিপদ ডেকে আনে।

অন্যান্য সময় পুলিশের ট্রাফিক ইউনিটের অভিযান চালু থাকলেও ঈদের ছুটির দিন গুলোতে এর অনুপস্থিত দেখা যায়। এ সুযোগটাও বাইকাররা ব্যবহার করে থাকে।

প্লীজ! অদক্ষ ও অপ্রাপ্ত কোন চালকের হাতে বাইক তুলে দেবেন না। কারন এদের বেশিরভাগই অন্যের বাইক ব্যবহার করে বা ভাড়া নিয়ে চলাচল করে থাকপ। বেপরোয়া চলাচলে সংযমী হোন। জীবন আপনার। আপনাকেই সচেষ্ট হতে হবে। আনন্দের আতিশয্যে উচ্চ গতি আপনাকে সাময়িক প্রফুল্ল করলেও একটি দুর্ঘটনা আপনাকে মৃত্যুর কোলে ঠেলে দিতে পারে। কিংবা আহত হয়ে সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হতে পারে।

তাই আসুন! ধীরে সুস্থে বাইক চালাই। বেআইনি পন্থা পরিহার করি। সাময়িক উন্মাদনার মোহে পড়ে নিজেকে কিংবা পরিবারকে বিষিয়ে না তুলি। কেননা একটা দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না।

লেখকঃ সম্পাদক, দেশালোক, ডটকম।