মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর থেকেই তালাবদ্ধ

রামগতিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে থাকছেন না অধিকাংশ উপকারভোগী

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ১০:৩৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১০, ২০২২

দেশালোক:

মুজিব বর্ষ উপলক্ষে লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার দেয়া উপহারের ঘরে থাকছেন না অনেক উপকারভোগীরা। ঘরগুলো থাকছে তালাবদ্ধ। কোন অফিসার পরিদর্শনে আসলেই সবাই হাজির থাকেন। অনেকে আবার আত্মীয় স্বজনকে থাকতে দিয়েছেন, কেউ কেউ আবার ভাড়াও দিয়েছেন। কেউ আবার স্বামী-স্ত্রী, ছেলে-মেয়ের নামে দুই-তিনটি করে ঘর বরাদ্ধ নিয়েছেন। আর এ সব অভিযোগ করেন বর্তমানে আশ্রয়ন প্রকল্পে বসবাসকারী উপকারভোগী ও স্থানীয়রা।
জনপ্রতিনিধিসহ রাজনীতিবিদরা মনে করেন, ঠিকমত যাচাই বাচাই করে প্রকৃত ভুমিহীন-গৃহহীনদেরকে ঘর বরাদ্ধ দেয়া হয়নি। যারা ঘর পেয়েছেন, তারা অধিকাংশ স্বাবলম্বী। এ জন্যই ঘর বরাদ্দ নিয়ে তারা তাদের নিজ বাড়ীতে বসবাস করছেন। আর এমন চিত্রগুলো দেখা গেছে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরপোড়াগাছা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের চর কলাকোপা গ্রামের কিল্লার সমাজ ও কবির মিয়ার সমাজে নির্মিত দুটি আশ্রয়ন প্রকল্পে। উপজেলা থেকে কোন কর্মকর্তা আসার খবর পেলে তারা সবাই নিজ নিজ ঘরে হাজির হন। কর্মকর্তা চলে গেলে তারাও নিজ বাড়ীতে চলে যান। অথচ অসহায় গরীব মানুষগুলো একটি ঘরের জন্য বিভিন্ন লোকের কাছে ধর্না দিয়েও বঞ্চিত হয়েছেন ঘর পাওয়া থেকে। এমনই দুজন হচ্চেন নারগিস ও মাইনুর নামের দুইজন নারী। তাদের করম্নন চিত্র নিয়ে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চরকলাকোপা গ্রামের কিল্লার সমাজ আশ্রয়ন প্রকল্পের ২৬ টি ঘরের মধ্যে ২৫, ২৬, ১৯, ১৫, ১৩, ১২ ও ১১ নম্বর ও একই এলাকার কবির মিয়ার সমাজে নির্মিত আশ্রয়ন প্রকল্পের ২০,১৮ ও ১৯ নম্বর ঘরে এখন কেউ থাকেনা। ঘরগুলো উদ্বোধনের পর থেকেই এখন পর্যন্ত কেউ থাকেনা।এই ঘরগুলো যারা পেয়েছেন তারা সবাই প্রভাবশালী ও ধনার্ঢ্য পরিবারের লোকজন। গরীব অসহায় মানুষের জন্য আসা এই ঘরগুলো তারা টাকার বিনিময়ে পেয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মুজিববর্ষ উপলক্ষে ১ম ও ৩য় পর্যায়ে ৯৬০টি ঘর ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে এসব ঘরগুলো। উপকারভোগীরা বলেন, আমরা কয়েকটি পরিবার ছাড়া আশ্রয়নের ঘরে আর কেউ থাকছে না, সবাই থাকলে ভাল লাগতো। সবসময় ঘরগুলো তালাবদ্ধ থাকে।
এ আশ্রয়ণ প্রকল্পে অস্থায়ীভাবে বসবাসকারী নারগিস ও মাইনুর বলেন, যারা পাওয়ার উপযুক্ত তাদেরকে ঘর বরাদ্ধ না দিয়ে দুরের এলাকার লোকজনকে ঘর বরাদ্ধ দিয়েছে। তারা শুধু অফিসাররা আসার খবর পেলে আসেন। আমরা তাদেরকে ভালোভাবে চিনি না। আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশের স্থানীয় বাসিন্দা রাশেদ বলেন, এক এলাকার লোককে অন্য এলাকায় ঘর বরাদ্ধ দিয়েছেন। এ জন্য তারা ঠিকমত থাকে না। এদের প্রত্যেকের ভাল মানের বাড়ি ঘর রয়েছে।
কলাকোপা গ্রামের মফিজ উল্যাহ, সাঈদুল হক আব্দুর রহিম বলেন, এটি প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্প, এ প্রকল্পের ঘরগুলি কারা তৈরী করছে, কাদেরকে বরাদ্ধ দিয়েছে এ ব্যাপারে আমরা কিছুই জানি না। তবে যারা ঘর পেয়েছেন তাদেরকে আমরা যতটুকু চিনি এরা সবাই স্বাবলম্বী। এ কারণে তারা ঘরে থাকেনা। সব সময় এসব ঘরগুলো তালাবদ্ধ দেখা যায়।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম শান্তুনু চৌধুরী জানান, যারা ঘর বরাদ্ধ পেয়েছেন, কিন্তু থাকছে না, তাদের তথ্য নিয়ে তালিকা প্রণয়ন করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।