মামুনুল হকের ২য় স্ত্রী এবং কয়েকটি কথা

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ২:৪৮ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৪, ২০২১

সারোয়ার মিরনঃ দেশের প্রচলিত আইনে কিংবা ইসলামে দ্বিতীয় বিয়ে করা বেআইনি নয়। তেমনি স্ত্রীকে নিয়ে কোথাও ঘুরতে কিংবা বেড়াতে যাওয়াটাও দোষের কিছু নয়। আবার ঘুরতে গেলে সাথে কাবিননামা রাখতে হবে সেটাও আবশ্যক না।

আল্লামা মামুনুল হক একজন বিশিষ্ট ইসলামিক বক্তা। সাংগঠনিক ব্যক্তিত্ব। তথা একজন আন্তর্জাতিক পাবলিক ফিগারও তিনি। এছাড়াও সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর কেন্দ্রিক হেফাজত ইসলামের তুমুল প্রতিবাদে নেতৃত্ব দেয়া ইসলামিক নেতা। সরকার এবং তাঁর গোয়েন্দা সংস্থা, সরকার দলীয় নেতাকর্মী, মিড়িয়া তাঁর প্রতি নজর রাখছে। এটা সহজে অনুমেয় যে তাঁর সকল গতিবিধি এবং কর্মকান্ড ফলো কিংবা ট্র্যাকিং করা হচ্ছে। এটা তাঁর বা সংগঠনের নেতার জানারই কথা।

বহুবিধ বক্তৃতা বিবৃতিতে তিনি সরকারের কঠোর সমালোচনাও করেন। একটা সংগঠন থেকে তাকে গ্রেফতার করার আল্টিমেটামও ছিলো। এতো কিছুর পরেও কেন মামুনুল হক সাহেব একা একা পথ চলেন। এমনটি তিনি কেন করতে গেলেন! এমন একটি উত্তপ্ত পরিস্থিতে তাঁকে আরো সতর্ক হওয়া জরুরী ছিলো বলে মনে করি।

এটা ঠিক যে মামুনুল হক কোথায় যাবেন, কোথায় ঘুরবেন এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। সাংবিধানিক ভাবেও বিষয়টা এলাউড। তারপরেও কথা থাকে তিনি আলোচিত পাবলিক ফিগার। তিনি নিদেন পক্ষে হোটেলের অবস্থানের বিষয়টি স্থানীয় হেফাজত নেতাদের শীর্ষ দু একজনকে বলে রাখতে পারতেন। তাহলে আজ এ সংকট তৈরি হতো না।

তিনি আলোচিত ব্যক্তিত্ব বলেই মানুষ তাঁর পাবিবারিক ও সামাজিক জীবনের ঘুটিনাটি বিভিন্ন ভাবে জেনে থাকেন। মানুষ যতদুর জানেন তার একক স্ত্রী এবং চার সন্তান (ছেলে) রয়েছে। তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন সেটা সম্পর্কে বাহিরের মানুষ অবগত নন। তাহলে মামুনুল হক সাহেব দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে একান্ত সময় কাটানোতে আরো কৌশুলী হতে পারতেন।

তিনি যদি অবৈধ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়ে থাকেন তার জন্য আইন আদালত আছে। উত্সুক লোকজন আইনী পথে না গিয়ে তাঁকে হেনস্তা করেছেন এটা কাম্য নয়। তথাপি তিনি যদি দেশের আইনে বৈধ কাজটিই করে থাকেন তাহলেও তাঁর প্রতি জুলুম করা হয়েছে। আবার সাংবাদিকদের (সাংবাদিক নয় বলে মনে হলো) বলার অধিকার নেই যে আপনার বউ এতো কম বয়সী কেন? আপনারা এখানে কেন ঘুরতে এলেন? বিদেশ গেলেন না কেন? বাথরুমে গেলেন কেন? কাবিননামা দেখান!! ইত্যাদি ইত্যাদি!

মামুনুল হকের পরিবারের একাধিক সদস্য, সংগঠনের নেতা, একাধিক হেফাজত নেতা বিভিন্ন ভাবে বলেছেন যে, এটি তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী। আর সেটা আইন কানুন মেনেই পারিবারিক ভাবে হয়েছে। তাই আপাতঃ বলা যায় মামুনুল হক তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়েই রিসোর্টে অবস্থান করছিলেন- এটি সত্যই। এছাড়াও তিনি ঘটনাকালীন, পরে লাইভে এবং সোস্যাল মিড়িয়ায় বিষয়টি ক্লিয়ার করেছেন।

মামুনুল হক রিসোর্টের ৫০১ নং কক্ষে নারীসহ অবস্থান করছেন এটা ফাঁস করলো কে! বর্তমান রাষ্ট্রীয় পরিবেশ অনুযায়ী এটি ভাবনার বিষয়ই না। হয় রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ না হয় যে সব পক্ষ তাকে ফলো করছেন তারা। তথ্য ফাঁসের উত্স খোঁজা অমূলকই বলা যায়।

বিয়ে শাদি শরীয়ত এবং আইনসম্মত বিষয়। প্রমান করার যথেষ্ট ডকুমেন্ট থাকে। এখন প্রমান হোক মামুনুল হকের দাবি (অবশ্য একাধিক পক্ষ থেকে স্ত্রী সংক্রান্ত দাবির সত্যতা মিলেছে)। কিন্তু বিষয়টি যেহেতু হেনস্তা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পর্যন্ত গড়িয়েছে সেহেতু এটা তাঁকে প্রমান করতেই হবে। কথা হলো সত্যতা মিললে যাদের দ্বারা তার সম্মানহানি ঘটলো তাদের কি হবে? আবার সত্যতা না মিললেও বা মামুনুল হক কি জবাব দেবেন?