বাংলাদেশ কবে খেলবে ফুটবল বিশ্বকাপ!

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ৬:৫৫ অপরাহ্ণ, জুন ১৯, ২০২১

সারোয়ার মিরন: আবহানী আর মোহামেডান বলতেই ব্যাকুল। নাওয়া খাওয়া ভুলে যেত মানুষ। গ্যালারী জুড়ে থাকত দর্শকদের উপচে পড়া উপস্থিতি। ফুটবল উন্মাদনায় ভাসতো পুরো জাতি। ধীরে ধীরে কমতে থাকে বাংলাদেশের ফুটবলের জনপ্রিয়তা। সেই খেলোয়াডও, নেই খেলাও নেই। কোন্দল রাজনীতি আর নানান অদক্ষতার কারনে যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকলেও ফুটবল নামের এ শিল্পকে তার প্রকৃত রুপ দিতে ব্যর্থ হয়েছি আমরা।

বাংলাদেশীরা এখনও ফুটবলকে ভালোবাসে। উপভোগ করে। রক্তে মেশায়। উন্মাদনায় ফেটে পড়ে। তবে তা আর আজ বাংলাদেশের খেলায় নয়। ভিন দেশীদের খেলায় টিভিতে দেখে। যে সব খেলায় আমরা কাঁদি হাসি। রাত জাগি পতাকা উড়াই। অন্ধের মতো সমর্থন করি। মিছিল মিটিং করি। মারা যাই।আত্মহত্যা করি।
অন্য দেশের হারে আমরা কাঁদি বাকরুদ্ধ হই। মারামারি করি। জিতলে বাঁধ ভাংগা আনন্দ করি। মিষ্টি বেলাই। প্রচন্ড রকম দরদ দিয়ে খেলা দেখি। বিশ্লেষন করি। চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করি সামান্য ভুলেও।

ফুটবলের প্রতি এমন ভালোবাসা দেখানো জাতির পক্ষে কি নিজ দেশ বাংলাদেশের ভালো খেলা দেখা সম্ভব হবে। অদুর ভবিষ্যতে না হলেও কি আগামী পঞ্চাশ বছরেও আমরা বিশ্বকাপে খেলতে পারবো? আমাদের কি বিশ্বমানের প্লেয়ার হবে? স্কীল হবে? দম হবে? আমাদের ফুটবল উন্মাদনা কি আমরা নিজেদের জন্য করতে পারবে? নিজ দেশে শুধু মাত্র ভালোবেসে নিজ দেশের পতাকা টানাতে পারবো?

সে রকম কোন লক্ষন তো দেখা যাচ্ছে না কোন পক্ষ থেকেই। কি সরকার কি ফেডারেশন।শতাব্দী বছর পরেও যে বাংলাদেশ ফুটবল বিশ্বকাপ খেলতে পারবে এমন সম্ভাবনার দুঃসাহস করতেও কল্পনা করা সম্ভব নয়।পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত আগামী দুই দশকের মধ্যে বিশ্বকাপ খেলবে বলে সে অনুযায়ী পরিকল্পনা করছে। কাজ এবং পরিশ্রমও করছে সে মতে। কিন্তু আমরা? কোন দিকে যাচ্ছি?? কি চাচ্ছি?

আমাদের গন্ডি কি কেবল সাফ ফুটবলে সীমাবদ্ধ থাকবে?? বিশ্বমঞ্চে কি যাওয়া হবে না আমাদের কখনোই?? আমাদের চেয়ে গরীব অনুন্নত দেশও তো বিশ্বকাপ খেলছে! আমরা কেন পারবোনা?? আমাদেরও তো জনপ্রিয়তা আছে। আছে পৃষ্ঠপোষকও।

এভাবে আর বসে থাকা নয়। বাফুফে কে জাগতে হবে। আমরা বিশ্বকাপে খেলতে চাই। নিতে হবে সুদুর প্রসারী পরিকল্পনা। আগামী ত্রিশ বছরের মধ্যে যেন বাংলাদেশ বিশ্বকাপ খেলে সে লক্ষ্যে এখন থেকেই কাজে লেগে যেতে হবে। পদ পদবীতে আকড়ে না থেকে মেধাবীদের স্থান দিতে হবে।

২০৪০ সালে বিশ্বকাপ খেলার লক্ষ্য ঠিক করে এখনই অবকাঠামোগত উন্নয়ন শুরু করতে হবে। স্কীল সম্পন্ন খেলোয়াড় বাছাই এবং পরিচর্যার যথেষ্ট ধারাবাহিকতা রাখতে হবে। বেশি করে টুর্নমেন্ট আজয়োজন করলে ভালো খেলোয়াড বের হতে থাকবে। সবার আগে স্কুল ফুটবলকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে কেননা এখান থেকেই ভবিষ্যত প্লেয়ার বের হতে থাকবে।

মোদ্দাকথা দুই দশকের মধ্যে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলতে হলে যা প্রয়োজন সবই করতে হবে। বিশ্বকাপ খেলছে এমন রোন দেশের অভিজ্ঞতাও কাজে লাগানো যেতে পারে।

আমরা বিশ্বকাপ খেলতে চাই।
বিশ্বমঞ্চে নিজেদের পতাকা উড়াতে চাই।

লেখক: সম্পাদক, দেশালোক ডটকম