শর্ট কোর্স: অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিও দাবি দীর্ঘায়িত করার অপকৌশল

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ৮:৫৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৪, ২০২১

মো: মেহরাব আলী:

মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর কল্পনাপ্রসূত শর্টকোর্স কি তা এখনো অজানা। বিদেশে কোন শর্টকোস গুলোর চাহিদা আছে নাই তাও শ্রমবাজারে যোগ-বিয়োগ হয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষিত বেকার তৈরি করে! আর তাদের আশির্বাদপুষ্ট প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিগুলো সোনার টুকরো, হিরার টুকরো কর্মোক্ষম শিক্ষিত তৈরি করছে? পত্রিকায় প্রকাশ অনেক প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে সনদ ক্রয়-বিক্রয় চলে। তা কিন্তু তিনি ও হলুদ চশমা পড়া কিছু স্বঘোষিত শিক্ষাবিদ ও তৈলমারা শিক্ষাবিদ দেখতে পান না, তাদের ব্যাপারে মুখে কুলুপ এটেছেন।

যত দোষ, নন্দঘোষ। অথচ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় হতে পাশ করা অনেক শিক্ষার্থী বিসিএস ক্যাডারসহ জাতীয় অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজ সভ্যতায় ব্যাংক-বীমায় কৃতিত্বের সাথে ভুমিকা রাখছে। আমি তুলোনামুলক বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক শিক্ষিত বেকারের সংখ্যার পরিসংখ্যান ডাটাবেইজ তৈরির দাবি জানাচ্ছি। বেসরকারি কলেজে অনার্স মাস্টার্স পড়ানোর কারণে সমাজে চুরি, ছিন্তাই, রাহাজানি, ডাকাতি, টোকাই, নারী শ্লীলতাহানি, ইভটেজিং, মাদক কারবারি, জুয়া, কিশোর গ্যাং, যুবগ্যাং, গডফাদার তৈরি, শিশুশ্রম, চাদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, অশিক্ষার-কুশিক্ষার সামাজিক কুসংস্কার বিলোপ সাধনসহ নানাবিদ অপরাধ প্রবণতা কমে গেছে। তা কিন্তু মাননীয় মহোদয়গণ একবারও বলছেন না। যা খুবই আফসোস ও পরিতাপের বিষয়!

তাহলে কি আমরা মাননীয় মন্ত্রীর কথামতো বিদাশে চাহিদা বেশি, যেমন- বিউটি পার্লার কোর্স, মেকার্নিস-বাইসাইকেল, মটর সাইকেল,কার,মাইক্রবাস ইত্যাদি ওয়ার্কশপ ট্রেনিং কোর্স, ড্রাইভিং, বৈদ্যতিক ঘর ওয়ার্নিং কোর্স, মোবাইল-এসি ও ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ মেকানিক্যাল কোর্স, ডেকোরেশন কোর্স, ওয়াটার লাইন কোর্স, সেলাই-এ্যাম্বডারি কোর্স, পল্টিফার্ম, হাসমুরগির খামার, কৃষি খামার, হটিক্যালচার, এপিক্যালচার, মৎসচাষ কোর্স ইত্যাদি বিষয়ে এখন আমাদের প্রশিক্ষণ নিয়ে ছাত্রদের পড়াতে ও প্রশিক্ষণ দিতে হবে, এটাই শিক্ষামন্ত্রী চান! তবে এখনই আমাদের বেসরকারি সরকারি ভাবে প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষ হতে হবে! তাহলে মাননীয় মন্ত্রী কি অনার্স মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিও দিবেন? নাকি আরো দারিদ্রের বোঝা কাঁধে চাপাতে সময় ক্ষেপন করছেন?

দলীয় বিবেচনায় তৃতীয় শ্রেনির সার্টিফিকেট নিয়ে যদি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক হতে পারে! (পত্রিকায় প্রকাশ) অন্তত: জোর গলায় বলতে পারি অনার্সের কোন শিক্ষকের তৃতীয় শ্রেণি নেই, শিক্ষকতার পেশার উপযুক্ততার সার্টিফিকেট প্রদানকারি NTRCA কর্তৃক প্রত্যেকেই সনদধারী। নিয়োগের ক্ষেত্রেও ১০০% সরকারি বিধি মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত। পাঠদানের ক্ষেত্রেও কোন শিক্ষকের বিরোদ্ধে আজ পর্যন্ত কোন ব্যর্থতা,অলসতা, অপারগতার কথা কোন প্রতিষ্ঠান প্রধান বলতে পারেননি। তারা সরকারি বেসরকারি যেকোন অর্পিত দায়িত্ব পালনে দক্ষ-অভ্যস্ত।

তাহলে কোন অপরাধে অনার্স মাস্টার্স শিক্ষিকদের এমপিও দেয়া হতে বঞ্চিত করা হবে? তা জাতি ও শিক্ষক সমাজ জানতে চায়। তাদের অপরাধ কি ক্ষমার অযোগ্য? অনার্সের শিক্ষক হওয়াই কি তাদের অপরাধ? তাহলে সরকার কেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে অনার্স মাস্টার্স কোর্স খোলার অনুমতি দিল? কেনইবা অনার্স মাস্টার্সে কোর্সে নিয়োগ দিয়ে সুবিধা বঞ্চিত হতদরিদ্রদের কাতারে মানবেতর জীবন দারনে বাধ্য করা হলো? তারা কি এদেশের নাগরিক নয়? সরকার কর্তৃক মৌলিক অধিকার প্রাপ্তির হকদার নয়? নাকি অনার্স মাস্টার্স শিক্ষকদের এমপিও বঞ্চিত করার অপকৌশল!

শিক্ষকদের প্রতি মানবিক হয়ে চলতি বছরেই এমপিও দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

লেখক:  সভাপতি

বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স মাস্টার্স শিক্ষক পরিষদ