পুর্নাঙ্গ উত্সব ভাতা বেসরকারি শিক্ষকদের অধিকার

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ২:৩৩ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৬, ২০২১

সারোয়ার মিরনঃ সরকারি পে স্কেল এবং নিয়মানুযায়ী বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা ২৫% বৈশাখী ভাতা পেয়ে থাকেন। একই নিয়মে তাহলে উত্সব বোনাস নয়! সরকারী চাকুরেদের সাথে মিল রেখে বৈশাখী ভাতা পাওয়া গেলে বোনাসের ক্ষেত্রে সমস্যাটা তবে কোথায়!

একটি নতুন নীতিমালা জারির ফলে পুর্বের সকল আইন কানুন, চিঠি, পরিপত্র ইত্যাদি বাতিল বলে গণ্য হয়। স্বয়ং নীতিমালার ২০ পৃষ্ঠার ২৫ এর রহিতকরন অংশে বলা হয়েছে ” এ নীতিমালা জারি হওয়ার পর শিক্ষা মন্ত্রনালয় হতে বেতন ভাতাদির সরকারি অংশ এবং জনবল কাঠামো সম্পর্কিত ইতঃপুর্বে জারিকৃত সকল নীতিমালা/পরিপত্র/আদেশের সংশ্লিষ্ট অংশ সমূহ এতদ্বারা রহিত বলে গণ্য হবে।” সে অনুযায়ী বলা যায়, ২০০৪ সালে ২৫% উত্সব বোনাসের চিঠিটিও বাতিল বলে গণ্য।

তাহলে এখন বোনাসের কি হবে? নতুন নীতিমালার বেতন বোনাস সম্পর্কিত ১৩নং পাতার (ঙ) তে লেখা আছে- শিক্ষক-কর্মচারীদের মূল বেতন/বোনাসের নির্ধারিত অংশ/উৎসব ভাতার নির্ধারিত অংশ/বৈশাখী ভাতার নির্ধারিত অংশ সরকারের জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫/সরকারের সর্বশেষ জাতীয় বেতন স্কেলের সাথে অথবা সরকারের নির্দেশনার সাথে মিল রেখে করতে হবে। ” এ প্রেক্ষিতে বলা যায়, বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারীগণ সরকারি চাকুরেদের সমান (পুর্ন বেসিক) বোনাস প্রাপ্য হবেন। কিংবা এ বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

আসন্ন ঈদে বোনাস প্রদানে হয় সরকারি চাকুরেদের সিস্টেমে বোনাস প্রদান করতে হবে, নয়তো সরকারকে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বোনাস বিষয়ে নতুন চিঠি প্রকাশ করতে হবে। এ কথা স্বীকার্য যে, ২৫% বোনাস এটা এখন আর কার্যকর নয়।

এখন কথা হলো সরকার কি করবে? নতুন নীতিমালার উত্সব বোনাসের দফার প্রথম অংশ মতে পুর্নাঙ্গ বোনাস দেবে নাকি দ্বিতীয় অংশের সুযোগ নিয়ে নতুন চিঠি জারি করবে! আর এটি জানতে আরো কয়েকদিন হয়তো অপেক্ষা করতে হবে।

বৈশাখী ভাতা পুর্নাঙ্গ সিস্টেমে প্রদান করা হচ্ছে, তাহলে বোনাসও একই সিস্টেমে হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু এ সহজ সরল বিষয়টিকে কতিপয় নীতি নির্ধারকগণ কৌশলে এড়িয়ে যেয়ে সরকারি এবং বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে আকাশসম বৈষম্যের সৃষ্টি করে দিয়েছেন। না হলে ২০০৪ সালে নিয়ম করা ২৫% বোনাস কেন ষোল বছরেও একরত্তি বাড়েনি!

নতুন নীতিমালা জারির পরপরই বেশ কয়েকজন শিক্ষক নেতা শতভাগ বোনাস দেয়ায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। পরবর্তীতে নীতিমালার বোনাস দফার শেষাংশ সামনে আসায় নেতাদের সাথে সাধারন শিক্ষকরা একমত হতে পারেন নি। পরবর্তীতে নেতারাও এ ফাঁকটা বুঝতে পেরেছেন মনে হয়। কেননা শতভাগ নিয়ে তারা আর কোন কথা বলেন নি। তবে আমার মনে হয়েছে শিক্ষক নেতার জেনে শুনেই শতভাগের কথাটি তুলে ধরেছেন। ২৫% যেহেতু বাতিলই হলো তাহলে শতভাগই হওয়ার কথা। তাছাড়া নীতিমালার বোনাস অংশের প্রথম দিক তো সেটাই নির্দেশ করে বটে!

নীতিমালা নতুন। বোনাসও নতুন হোক। ষোল বছর ধরে একই ফিগারে থাকা বোনাস এবার বৃদ্ধি পেয়ে সরকারি চাকুরেদের মত শতভাগ হোক। একদেশে দু নিয়ম নীতি চলতে পারেনা। ঈদ, পুঁজা পার্বন সবাইকেই পালন করতে হয়। কেনাকাটা, পরিবার পরিজন, আনন্দ উত্সব করার সমান সুযোগই সবারই আছে। এসব আয়োজন কে ধনী, কে গরীব কিংবা সরকারি-বেসরকারি তা চায় না, মানেও না। সুতরাং শতভাগ উত্সব ভাতা বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারীদের পাওয়া অধিকার। এ অধিকার হরণ করা মানেই সরকারি বেসরকারি উত্সব বৈষম্যটা আরো জিইয়ে রাখা। যা কোন ভাবেই কল্যান বয়ে আনবে না।

 

লেখকঃ

সম্পাদক, দেশালোক ডটকম এবং বেসরকারি শিক্ষক