দেশালোক: 
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে অনুমোদনহীন অবৈধ ইটভাটা বন্ধের লক্ষ্যে মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়ন ও সরকারি আদেশ সংক্রান্ত অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর লক্ষ্মীপুরের সহযোগিতায় ০৭ অক্টোবর, মঙ্গলবার উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপত্বি করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আমজাদ হোসেন। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন রামগতি সেনাবাহিনীর ক্যাম্প কমান্ডার ক্যাপ্টেন কাফি, পরিবেশ অধিদপ্তর লক্ষ্মীপুরের সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ, রামগতি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কবির হোসেন, উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আবদুর রহিম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সাধারণ সম্পাদক মো. লোকমান হোসেন বাবলু, রামগতি প্রেসক্লাব সভাপতি রেজাউল হক। এছাড়াও প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতৃবৃন্দ, এবং ইটভাটা মালিকগন এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বক্তব্য রাখেন ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছানা উল্যাহ। তিনি বলেন- ইটভাটা প্রস্তুত করার আগেই ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে ব্যপক প্রচারের প্রয়োজন ছিল। একটা উপজেলায় অনেকগুলো ইটভাটা হয়েছে- এমন দায় স্বীকার করেন তিনি। এছাড়াও তিনি বিদ্যমান ভাটাগুলোকে পরিবেশ ছাড়পত্রসহ আইনী প্রক্রিয়া সহজিকরণ করে ভাটা পরিচালনার সুযোগ দেওয়ার দাবি করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মাসুদ জাহান বলেন- প্রাথমিক চিকিৎসা ও ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে জরিপ করে দেখা গেছে উপজেলা যে যে এলাকায় ইটভাটা পরিমাণ বেশী ওই সমস্ত এলাকার নারী শিশুরা সর্দি কাশিসহ নানাধরণের রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। এতে তাদের স্বাস্থ্যে ঝুঁকি বাড়ছে।

উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা আবদুর রহিম বলেন- বিগত সরকারের আমলে রামগতিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন রকম ছাড়পত্র ছাড়াই ব্যপকহারে অবৈধ ইটভাটা গড়ে উঠেছে। উপজেলায় ৫০টিরও অধিক ইটভাটা রয়েছে। এগুলো মানুষের স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ক্ষতি করছে। এছাড়া ফসলি জমির টপ সয়েল, সবুজ বনায়ন এবং রাস্তার ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি ওজনের ইট বোঝাই ট্রাকের মাধ্যেমে ইট পরিবহন করায় সমস্ত রাস্তা ঘাট ধসে গিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ভাটা মালিকগণের উচিৎ দেশের স্বার্থ বিবেচনায় অপ্রয়োজনীয় ভাটা কমিয়ে আনা।

পরিবেশ অধিদপ্তর লক্ষ্মীপুর সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ বলেন- বর্তমানে রামগতিতে ৫১টি ইটভাটা চলমান আছে যার মধ্যে বনলতা ও সরকার ব্রিকস নামে দুটি ইটভাটার পরিবেশ ছাড়পত্র নিয়েছে। বাকি ৪৯টি ইটভাটা ছাড়পত্র নেয়নি। এসব অবৈধ ভাটা বন্ধ করুন। মহামান্য হাইকোর্টের সুস্পষ্ট দির্দেশনা হচ্ছে সকল অবৈধ ইটভাটা বন্ধ রাখার, অনতিবিলম্বে তা কর্যকর করা হবে।

এ সময় সভার সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন- বিগত সিজনে ৫১টি ইটভাটা ৫১ বার মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন এতে অবৈধ ইটভাটা পরিচালনা ও পরিবেশ ছাড়পত্র না থাকাসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ভাটা মালিকদের কাছ থেকে ৮৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে, ওই সময় চিমনি না থাকায় ও জ্বালানি কাজে গাছের গুড়ি ব্যবহার করায় ১২ টি ইটভাটা মালিক পক্ষ ভাটা বন্ধ রাখতে মুচলেকা দেন। এ সময় ভেকু মেশিনের সাহায্য ভাটা গুড়িয়ে দেওয়াসহ কয়েক লক্ষ কাচা ইট বিনষ্ট করা হয়। হাইকোর্টের আদেশ কার্যকর করতে ও অবৈধ ইটভাটা বন্ধ রাখাতে গত অগাস্ট মাসে নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে এলাকায় মাইকিং করে প্রচারনা চালানো হয়।