প্রচেষ্টার চতুর্থ বর্ষে দেশালোক: অমৃসণ ও কন্টকময় পথচলা Sarwar Sarwar Miran প্রকাশিত: ১০:৫৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ১০, ২০২৩ সারোয়ার মিরন: প্রচেষ্টার ৪র্থ বর্ষে পদার্পন করেছে আঞ্চলিক সাহিত্য ও সংবাদভিত্তিক অনলাইন পোর্টাল দেশালোক ডটকম। এ দীর্ঘ পথচলা অনেকটাই অমৃসণ ছিলো। অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু হলেও উদ্দেশ্য ছিল উপকূল বিধৌত রামগতি-কমলনগরকে বিভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করা। একদল লেখক তৈরি করা। অপরিনত বয়সে প্রেম-ভালোবাসা, খেলাধূলায় অতিআগ্রহী ও সোস্যাল মিডিয়াসক্ত একটা প্রজন্ম এখন আর লিখতে চায় না, লেখেও না। তারা এখন হ্যাং আউট, সেলফি, টিকটক-রিলে আক্রান্ত। এতো এতো অতিআগ্রহের এর সময়ে লেখা আর পাই কই। ওদেরও বা দোষ কোথায়? লিখলেও তো পয়সা পাওয়া যায় না। কেউ লাইক-কমেন্টস্ করেনা। এখানো তো, জি¦ ভাই, সহমত ভাই, সাথে আছি ভাই, হেব্বি লাগছে ভাই, জোশশশশশ ইত্যকার উন্মাদনা নেই। গত তিন বছরে বহু আহবান-অনুনয়-বিনয় করেও নতুন কোন লেখক কিংবা লিখতে ইচ্ছুক তেমন কাউকে পাইনি। চেয়েছিলাম অন্তত শুদ্ধ বাক্য লিখতে পারে তেমন কাউকে পেলেও ঘষে মেজে লেখা বানিয়ে দিতাম। আয়োজন করতাম লিখতে পারার কলা-কৌশল বিষয়ক কর্মশালা। লেখকহীনতার এ সময়েও হতাশ হইনি। একাই চালিয়ে নিচ্ছি। সাহিত্য ও ফিচারকে কিছুটা পাশ কাটিয়ে সংবাদে ঢুকে পড়েছি। এটা বাধ্য হয়েই বলতে পারেন। আমি শিক্ষক মানুষ। একসময় ছড়া-কবিতা-রম্য-স্যাটায়ার, ফিচার ইত্যাদি লিখতাম। এখনো লিখি, তবে নিতান্তই হাতে গোনা। টুকটাক সংবাদের সাথেও রয়েছি। তাই মনের ইচ্ছার বাহিরেও সংবাদে যেতে হয়েছে। উদ্যোক্তা হওয়া বরাবরই ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। সেটা যদি লেখা-জোখার মতো অস্বাদ একটি বিষয়ে হয় তাহলেও তো আরো কঠিন ঝুঁকিপূর্ণ! এ ধরেন গত তিন বছরে দেশালোক ডটকমের ফেসবুক পেজে লাইক সংখ্যা মাত্র ২ হাজার আর ফলোয়ার তিন হাজার! আমার চার হাজার ফেসবুক ফ্রেন্ডদের মধ্যে মাত্র চার’শ জন লাইক দিয়েছে পেজটিতে। একটা নিউজ কিংবা সাহিত্যধর্মী লেখার লিংক শেয়ার করলে লাইক জোটে ৩/৪টি। কমেন্টস্-শেয়ারের কথা আর না-ই বললাম। এমন বহু লোককে দেখলাম সংবাদে/সাহিত্যে নিজের নাম/ছবি থাকা সত্ত্বেও কিংবা নিজের উপকারে আসে এমন লেখার লিংকে লাইক-কমেন্টস্-শেয়ার করেন না। ফেসবুক পেজে বক্তব্য/চেহারাসহ ভিডিও দিলেও তারা ফিরেও তাকান না! কোন এক ভদ্র লোক বলেছেন, ছোট উদ্যোক্তাদের প্রধান সমস্যা তার কাছের লোক বা স্বজনরা। কারন তারা হয় উদ্যোগের বিরোধিতা করবে না হয় দেখেও না দেখার ভান করে এড়িয়ে যাবে। কেউ কেউ তো আরও অ্যাডভান্স হয়ে নেগেটিভ উপস্থাপন করবে অন্যের কাছে। ভালো বললে বা সহযোগিতা করলে না জানি সে এগিয়ে যায়, ধনী হয়ে যায়! দেশালোকের ক্ষেত্রেও এ মিথ কাজ করছে! অন্যান্য ক্ষেত্রে যা-ই হোক সম্পূর্ন মৌলিক লেখায়ও পাঠক/গ্রাহক কিংবা শুভাকাঙ্খীর শুন্যতা বোধ করছে। পাঠক কিংবা উপকারভোগী এবং কাছের মানুষদের মানসিক ও মানবিক সংকীর্ণতার এহেন সময়েও দেশালোকের পথচলা অব্যাহত থাকবে। কারন এর উদ্যোক্তা হিসেবে এটি আমার মানসিক প্রশান্তির জায়গা। লেখার জগতের লোক হিসেবে একটা লেখার প্লাটফর্ম আমার এমনিতেই দরকার। পাশাপাশি যদি আমার জন্ম এলাকার দুর্দশা-দুভোর্গ, সমস্যা-সম্ভাবনা-উন্নয়নগুলো লেখার মাধ্যমে তুলে ধরতে পারি এর চেয়ে প্রশান্তির কাজ আর কিছুই হতে না। অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধ সমাজের একজন নগন্য মানুষ হিসেবে লেখা ব্যতিত আমার দ্বারা সমাজ তথা দেশের জন্য আর কিছুই করার সামথ্য নেই। দেশালোকের প্রচার-প্রসার না হোক, নাগরিক হিসেবে আপনি সামথ্য অনুযায়ী দেশগঠনে অংশগ্রহন করুন। সম্ভব হলে সেটাও দেশালোক তুলে ধরবে। হিসেবি পাতায় তৃতীয় বর্ষ পেরিয়ে চতুর্থ বর্ষে পদার্পন করেছে দেশালোক। এ নাতিদীর্ঘ যাত্রায় অনেকেই সাথে ছিলেন, লিখেছেন, পরামর্শ দিয়েছেন, বিজ্ঞাপন দিয়েছেন- সবাইকে জানাই অন্তরের গ্রহীন থেকে একরাশ অভিনন্দন। পাশাপাশি দেশালোকের শুভাকাঙ্খী, শুভানুধ্যায়ী, পাঠক-লেখক, হৈতষি, আইটি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সবার প্রতিও আজকের বর্ষপূরণ লগ্নে কৃতজ্ঞতা জানাই। বিশেষ করে সায়েম কাজল, মো: আশরাফ, আইউব আলী, আতাউর রহমান রাব্বি, সালাউদ্দিন সূজন, আবদুল কাদের, নেইমপাম ডিজিটালের আশরাফ উদ্দিন আসিফ ভাইসহ যাদের লেখা স্থান পেয়েছে এবং বিভিন্ন ভাবে সহযোগীতা করেছেন সবার প্রতিও কৃতজ্ঞতা থাকলো। প্রচেষ্টা কিংবা উদ্যোগ কন্টকময় হোক আর ছোট পরিসরে হোক- অব্যাহত থাকবে। আবারও স্মরণ করতে চাই-দেশালোক ডটকমকে সাহিত্য ও ফিচার নির্ভর অনলাইন পোর্টাল হিসেবেই গড়ে তোলার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা থাকবে আমার। এ বিষয়ে সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি। ভালো থাকবেন। ভালোর সাথে থাকবেন। ধন্যবাদ। লেখক: প্রকাশক ও সম্পাদক, দেশালোক ডটকম SHARES উপকূল বিষয়: পাঠকবর্ষপূর্তিরামগতিস্বাগতম