দেশালোক: দেশের প্রখ্যাত আইনজীবী মরহুম আবদুর রব চৌধুরীর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ররেণ্য এ মহান ব্যক্তিত্ব একাধারে রাজনীতিবিদ, সরকারি আমলা, সংসদ সদস্য, প্রসাশক।

১৯৩৪ সালের ২ফেব্রুয়ারি লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর আলেকজান্ডার ইউনিয়নের সেবাগ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পিতার নাম মরহুম ফজলুর রহমান।

১৯৪৯ সালে রামগতি বিবিকে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে এসএসসি, চৌমুহনী সরকারি এসএ কলেজ থেকে ১৯৫১ সালে আইএ, ১৯৫৩ সালে বিএ পাশ করেন। এরপর ১৯৫৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেনিতে এমএ পাশ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এলএলবি ডিগ্রী লাভ করেন।

আব্দুর রব চৌধুরী ১৯৫৪-৫৫ মেয়াদে ঢাকসুর জিএস ছিলেন। ১৯৫৬ সালে সেণ্টাল সুপিরিয়র সার্ভিস (সিএসপি) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি চাকুরী জীবন শুরু করেন। তিনি নওগাঁ মহকুমার প্রশাসক, খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, দিনাজপুরের জেলা প্রসাশক, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উপসচিব, ইসলামাবাদে অর্থ মন্ত্রনালয়ের উপসচিব পদে চাকুরী করেন।

১৯৭০ সালে তিনি চট্টগ্রাম বিভাগীয় রিলিফ কমিশনার এবং ১৯৭২ সালে দেশের প্রধান রিলিফ সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩ সালে কৃষি মন্ত্রনালয়ের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে ১৯৭৪ সালে পদত্যাগ  করে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টে এ্যাপিলিয়েট ডিভিশনে আইন পেশা শুরু করেন।

তিনি ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি’র) মনোনয়নে লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি) আসন থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।এরপর  ১৯৯৬ সালের ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে একই আসন থেকে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।

২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি’র মনোনয়ন না পেয়ে আওয়ামীলীগে যোগ নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হয়েছিলেন। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন।

তিনি এরপর তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য হন। এর আগে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দলের উপদেষ্টামন্ডলীর ও সদস্য ছিলেন।

রামগতি উপজেলার শিক্ষা বিস্তারে তাঁর রয়েছে অসামান্য অবদান। তাঁর প্রচেষ্টায় স্থাপিত হয়েছে আসম আবদুর রব সরকারী কলেজ (তৎকালীন আরসি কলেজ এর পর আলেকজান্ডার সরকারী কলেজ), রামদয়াল বাজারে সুলাতানা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, সেবাগ্রামে সেবাগ্রাম ফজলুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয় (মেঘনার ভাঙ্গন কবলিত হয়ে বর্তমানে গুচ্চগ্রামে স্থানান্তরিত)সহ বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

তাঁর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহনে সেবাগ্রামে পরিচালিত হয়েছে বিদেশী সহযোগিতা নির্ভর হাসাপাতাল লনিরেক্স। যা নদী ভাংগন কবলিত হয়ে বিলুপ্তি ঘটে।

মরহুম আবদুর রব চৌধুরীকে ঢাকার বনানী কবস্থানে সমাহিত করা হয়। তাঁর মরদেহ রামগতিতে সমাহিত করা জন্য উপজেলার সর্বস্তরের জনসাধারন অনুরোধ করেছেন। সোস্যাল মিডিয়ায় খোলা হয়েছিল ইভেন্ট।

২০১৮ সালের ১৮ফেব্রুয়ারি ঢাকার নিজ বাসায় পরলোক গমন করেন এ মহান ব্যক্তিত্ব।