বিডিআরের পিলখানা ট্রাজেডির একযুগ

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ৮:৪৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২১

দেশালোক:  বাংলাদেশের ইতিহাসে কলঙ্কময় একটি দিন ২৫ ফেব্রুয়ারি। ২০০৯ সালের এই দিনে রাজধানীর পিলখানায় তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) দরবার হলে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ শুরু করে কিছু পথভ্রষ্ট বিডিআর সদস্য। ২৫ ও ২৬ফেব্রুয়ারি দুই দিনব্যাপী বিডিআরের ব্রিদ্রোহী সদস্যদের এ হামলায় ৫৭ জন সেনাকর্মকর্তাসহ নিহত হন ৭৪ জন। এ নির্মম হত্যাযজ্ঞের একযুগ আজ।

এ বিদ্রোহ ছিল তৎকালিন বিডিআরদের একটি গ্রুপ দ্বারা সংগঠিত বিদ্রোহ। বিদ্রোহের পর সংস্থাটির নাম পরিবর্তন করে  বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা সংক্ষেপে বিজিবি করা হয়। বর্তমানে বিজিবি নামে সংস্থাটি পরিচিত। এটি একটি আধা-সামরিক বাহিনী যার প্রধান কাজ বাংলাদেশর সীমানা পাহারা দেয়া। সে হিসেবে এরা সীমান্ত রক্ষী বাহিনী নামেও পরিচিত। বিদ্রোহী বিডিআর সৈন্যরা পিলখানায় বিডিআর সদর দফতর দখল করে উল্লেখিত এসব অফিসারদের হত্যা করে।

বিদ্রোহি জওয়ানরা বেসামরিক লোকদের উপর গুলি চালানোর পাশাপাশি তারা অনেক অফিসার এবং তাদের পরিবারকে জিম্মি করেছিল, স্থাপনা ও সম্পদ ভাংচুর করেছিল এবং মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে নিয়েছিল। বিদ্রোহের দ্বিতীয় দিনে বিডিআর ক্যাম্প আছে এমন অন্য ১২টি শহরে অশান্তি ছড়িয়ে পড়েছিল। সরকারের সাথে একাধিক আলাপ-আলোচনার পরে বিদ্রোহীরা অস্ত্র সমর্পণ করে এবং জিম্মিদের মুক্তি দেয়। অস্ত্র সমর্পণের মধ্য দিয়ে এ বিদ্রোহের অবসান ঘটে।

২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৬১জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। ২৫ জন বিদ্রোহে জড়িত থাকার কারণে তিন থেকে দশ বছরের মধ্যে কারাদণ্ড।

এ ঘটনায় হত্যা, লুটপাট ও বিদ্রোহের এ ঘটনায় মোট ৫৮টি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে হত্যার এক মামলায় দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ৪২৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং ২৭৭ জনকে খালাস দেয়া হয়।

অন্যদিকে, বিদ্রোহের জন্য দায়ের করা ৫৭ মামলায় বিডিআরের মোট পাঁচ হাজার ৯২৬ জন সদস্যের বিভিন্ন মেয়াদে (চার মাস থেকে সাত বছর) কারাদণ্ড দেয়া হয়।

যে ৫৭ সেনা কর্মকর্তা সেদিন নিহত হন: মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাকির হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ আব্দুল বারী, কর্নেল মো: মজিবুল হক, কর্নেল মো. আনিস উজ জামান, কর্নেল মোহাম্মদ মসীউর রহমান, কর্নেল কুদরত ইলাহী রহমান শফিক, কর্নেল মোহাম্মদ আখতার হোসেন, কর্নেল মো. রেজাউল কবীর, কর্নেল নাফিজ উদ্দীন আহমেদ, কর্নেল কাজী এমদাদুল হক, কর্নেল বিএম জাহিদ হোসেন, কর্নেল সামসুল আরেফিন আহাম্মেদ, কর্নেল মো. নকিবুর রহমান, কর্নেল কাজী মোয়াজ্জেম হোসেন, কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমদ, কর্নেল মো: শওকত ইমাম, কর্নেল মো. এমদাদুল ইসলাম, কর্নেল মো. আফতাবুল ইসলাম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল এনশাদ ইবন আমিন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল শামসুল আজম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী রবি রহমান, এনডিসি, লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া মোহাম্মদ, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. বদরুল হুদা, লেফটেন্যান্ট কর্নেল এলাহী মঞ্জুর চৌধুরী, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. এনায়েতুল হক, পিএসসি, লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবু মুছা মো. আইউব, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সাইফুল ইসলাম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ লুৎফর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ সাজ্জাদুর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল লুৎফর রহমান খান, মেজর মো. মকবুল হোসেন, মেজর মো. আব্দুস সালাম খান, মেজর হোসেন সোহেল শাহনেওয়াজ, মেজর কাজী মোছাদ্দেক হোসেন, মেজর আহমেদ আজিজুল হাকিম, মেজর মোহাম্মদ সালেহ, শহীদ মেজর কাজী আশরাফ হোসেন, মেজর মাহমুদ হাসান, মেজর মুস্তাক মাহমুদ, মেজর মাহমুদুল হাসান, মেজর হুমায়ুন হায়দার, মেজর মোঃ আজহারুল ইসলাম, মেজর মো. হুমায়ুন কবীর সরকার, মেজর মোঃ খালিদ হোসেন, মেজর মাহবুবুর রহমান, মোঃ মিজানুর রহমান, মেজর মোহাম্মদ মাকসুম-উল-হাকিম, মেজর এস এম মামুনুর রহমান, মেজর মো: রফিকুল ইসলাম, মেজর সৈয়দ মো. ইদ্রিস ইকবাল, মেজর আবু সৈয়দ গাযালী দস্তগীর, মেজর মুহাম্মদ মোশারফ হোসেন, মেজর মোহাম্মদ মমিনুল ইসলাম সরকার, মেজর মোস্তফা আসাদুজ্জামান, মেজর তানভীর হায়দার নূর, ক্যাপ্টেন মোঃ মাজহারুল হায়দার।