বিদ্যুৎস্পৃষ্ট তামিমকে ১০কোটি টাকা ক্ষতিপূরন দিতে আদালতের রুল

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ৫:৩৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৬, ২০২১

দেশালোক ডটকম:
পল্লী বিদ্যুতের ছিড়ে পড়ে থাকা তারে জড়িয়ে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন তামিম (১২) কে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০কোটি টাকা কেন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন উচ্চ আদালত। শিশু তামিমের বাবা মো: শাহাদাত হোসেন এর করা এক রীটের শুনানী শেষে উচ্চ আদালত এ রুল জারি করেন। পাশাপাশি তাৎক্ষনিক ক্ষতিপূরন হিসেবে ৫লক্ষ টাকা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

৬ ডিসেম্বর সোমবার আদালতে এ রীটের পক্ষে শুনানী করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়–য়া। শুনানী শেষে উচ্চ আদালতের বিচারপতি এম. এনায়েতুর রহিম এবং বিচারপ্রতি মো: মোস্তাফিজুর রহমানের স্বমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একই সাথে জ্বালানি সচিব, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান, লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতির জিএম (জেনারেল ম্যানেজার)সহ পাঁচজনকে সংশ্লিষ্ট রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আইনজীবীর সহকারী সূত্রে জানা যায়, আহত তামিমের বাবা শাহাদাত হোসেন এর আবেদনের প্রেক্ষিতে তার পরিবারের ক্ষতিপূরণ বাবদ ১০ কোটি টাকা এবং তামিমের চিকিৎসা বাবদ ৫০লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরন চাওয়া হয়েছে। আদালত তাৎক্ষনিক চিকিৎসা ব্যয় বাবদ লক্ষ্মীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে ৫লক্ষ টাকা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

তামিমের বাবা শাহাদাত হোসেন উচ্চ আদালতে রীট দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন ‘স্বপ্ন নিয়ে’র সহযোগিতায় এ আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। তিনি আরো জানান, তামিমের বিষয়টি দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর পল্লী বিদ্যুৎ থেকে কেউ একজন যোগাযোগ করেছেন। তবে কোন ধরনের সাহায্য সহযোগিতা দেননি। দিনমজুর হিসেবে ঢাকায় থেকে ছেলে চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে আমি এখন নিঃস্ব। বাধ্য হয়ে আমি রীট দায়ের করি।

জানা যায়, লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার ৬নং চরআলগী ইউনিয়নের চরটগবি গ্রামের শাহাদাত হোসেন এর ছেলে তামিম ইকবাল। স্থানীয় কাটাবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেনির শিক্ষার্থী। গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে চরটগবি গ্রামে মেঘনার ভাঙ্গনে পল্লী বিদ্যুতের একটি খুঁটি নদীতে ভেঙ্গে পড়ে। পরদিন ২৫ সেপ্টেম্বর সকালে তামিমের চাচা মো: আশরাফসহ বেশ কয়েকজন পল্লী বিদ্যুৎ অফিসকে বিষয়টি অবহিত করেন। দু দিন সময় পার হলেও তারা কোন ব্যবস্থা নেননি। একই দিন সকালে তামিম স্কুল থেকে ফিরে নদীতে গোসল করতে যায়। সেখানেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় সে। প্রথমে তাকে রামগতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটে শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে প্রায় তিনমাস ধরে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ইতিমধ্যে তামিমের বাম হাত কেটে ফেলা হয়েছে। কাটতে হবে ডান পায়ের দুটি আঙ্গুল। ঝলসে যাওয়া শরীরের বিভিন্ন অংশে পচন ধরেছে। মাথার আঘাতও গুরুতর। করতে হয়েছে পাঁচটি সার্জারি। বর্তমানে সে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে।