মানববন্ধনের জের: রামগতিতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর, গুলিবিদ্ধসহ আহত ১৩

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ৯:৩৭ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৪
দেশালোক:
লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে সফি বাতাইন্না নামে এক ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে মানববন্ধনের জের ধরে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার গভীর রাতে উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের মিরবাজার এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে। এসময় তিনটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও দু’টি বসতঘর ভাঙচুর করা হয়। নারী-শিশুসহ পিটিয়ে আহত করা হয় অন্তত ১০ জনকে। হামলাকারীদের ছোঁড়া গুলিতে বিদ্ধ হন তিনজন। তাদেরকে নোয়াখালী হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। এঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
চরগাজী ইউনিয়ন পরিষদের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ফরিদ উদ্দিন জানান, নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলী এলাকার বাসিন্দা সফি বাতাইন্না প্রকাশ সফি ডাকাত ৪০ থেকে ৫০ জনের ভূমি ও জলদস্যু বাহিনী রয়েছে। ওই বাহিনীর প্রধান সফি বাতাইন্না ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড জসিম উদ্দিন প্রকাশ রানা ডাকাত লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলে জমি দখল, খাল দখল ও নারী নির্যাতনসহ চাঁদাবাজি, গরু-ছাগল চুরিসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষকে দীর্ঘদিন ধরে জিম্মি করে রেখেছে। সফি বাতাইন্না তার বাহিনী দিয়ে হরণী ইউনিয়নের বয়ারচরের গাবতলী খালের মাথা থেকে রামগতি খালের মাথা পর্যন্ত জোরপূর্বক দখল করে নেয়। ওই জমি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অন্যদের কাছে দখল বিক্রি করে। এতে করে এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে রামগতি উপজেলার বয়ারচরের কয়েকশ’ একর ফসলি জমি নষ্ট হয়ে গেছে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে গত ১০ ফেব্রুয়ারি মীরবাজার এলাকায় নীয়রা মানববন্ধন করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সফি বাতাইন্নার বাহিনীর সদস্যরা সোমবার গভীর রাতে ওই এলাকায় তা-ব চালায়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে সফি বাতাইন্না  ও রানা ডাকাতের নেতৃত্বে ৪০ থেকে ৫০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে মীরবাজারের তিনটি দোকান ভাঙচুর করেন। পরে স্থানীয় আব্দুস ছালাম খোকনের বাড়িতে গিয়ে তার দু’টি বসতঘর ভাঙচুর করে। এসময় বাধা দেওয়া হলে হামলাকারীরা গুলি ছুঁড়লে মোঃ রিদন (২৫), আব্দুজ জাহের (৩৫) ও মো. ফজলু (৪০) নামের তিরজন গুলিবিদ্ধ হন। মারধরে আহত হন জহির উদ্দীন, ফেরদৌস, আবছার উদ্দিন, রাসেল, নোমান, আব্দুস সালাম খোকন, খোকনের স্ত্রী সুরাইয়া বেগম ও তার চার বছরের শিশু সিদরাতুল মুনতাহা। পরে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
চরগাজী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাওহীদুল ইসলাম সুমন জানান, রাতের আধারে এভাবে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ন্যাক্কারজনক। নোয়াখালীর সুবর্ণচরের ডাকাতদল বারবার তার এলাকায় এসে এসব তান্ডব চালাচ্ছে। বিষয়টি তিনি সুবর্ণচর ও রামগতি থানার পুলিশকে অবহিত করেছেন।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে সফি বাতাইন্নার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।
রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোসলেহ উদ্দিন জানান, ঘটনাটি স্থানীয় মেম্বার তাকে জানিয়েছেন। ভুক্তভোগীদের থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।