রামগতি: চরাঞ্চল জুড়ে পানির জন্য হাহাকার!

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ৭:৩৬ অপরাহ্ণ, মে ২৩, ২০২১
ছবি: ইন্টারনেট

দেশালোক: জেসমিন আক্তার। স্বামীর নাম: মো: ফারুক। স্থায়ী ভাবে বসবাস করছেন চররমিজ ইউনিয়নের চর আফজল গ্রামে (চৌধুরী বাজার সংলগ্ন)। গতো দু মাস ধরে পানির সংকটে বাধ্য হয়ে বাবার বাড়িতে (রামগতি পৌর ৯নং ওয়ার্ড) চলে এসেছেন গতকাল। পুরো গ্রামে কারো পুকুরেই পানি নেই। ভরসা কেবল বাজারের একটি ছোট ‍দীঘি। ইরি ধান চাষের ফলে সেখানেও পানি সামান্য।

জেসমিন জানান, পানির অভাবে নিজের গৃহপালিত পশুপাখি গুলোর নিত্য হাহাকার আর সহ্য করতে পারছিনা। নিজেদের নিত্যনৈমিত্যিক ব্যবহার্য পানির সংকট চরমে। তিন চারদিন পর পর কোন রকমে গোসল করছেন।

চর আলগী ইউনিয়নের চর হাসান হোসেন গ্রামের আবুল কালাম জানান, তীব্র গরমে শরীরে ঘামও নেই। প্রচুর পানি পান করলেও প্রসাব হচ্ছে না। এ এক মহাবিপদ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রামগতি উপজেলার চরগাজী, চররমিজ, চর আলগী, চর পোড়াগাছা এবং চর বাদামের প্রায় প্রতিটি গ্রামেই পানির সংকট দেখা ‍দিয়েছে। শ্যালো নলকূপ থেকে উঠছেনা পানি। পুকুর গুলো সব শুকিয়ে গেছে। বৃষ্টির অভাব এবং তীব্র গরমে ফল ফলাদি এবং ক্ষেতের ফসল নষ্ট হচ্ছে।

পৌরসভার বাসিন্দা মো: মনির জানান, বৃষ্টি না হওয়ায় গাছের আম গুলো পঁচে যাচ্ছে। সবজি চারা গুলো মরে যাচ্ছে পানির অভাবে।

চর আলেকজান্ডার বালুরচরের শাহাবুদ্দিন জানান, পুরো গ্রামে কারো পুকুরে পানি না থাকায় তাঁর পুকুরে হাঁটু পরিমান পানি থাকা পুকুরে সবাই নিত্য প্রয়োজনীয় কাজ সারছেন।

রামগতি আহমদিয়া কলেজের প্রভাষক ইসমাইল হোসেন জানান, দীর্ঘ দশ মাস ধরে বৃষ্টি না থাকায় পানির এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে উপকূল জুড়ে। শুধু রামগতি না সূবর্নচর উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামেও এ সংকট দেখা দিয়েছে।

প্রায় সব ভুক্তভোগিই সময়মত বৃষ্টি না হওয়াকেই দুষছেন। গতো কয়েকদিন ধরে  প্রচন্ড রোদ এবং তীব্র গরমে পুকুর গুলোর পানি শুকিয়ে গেছে। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি এলাকায় ইরি ধান চাষ করা হয়েছে। এখানেও প্রচুর পানি ব্যয় হয়েছে। ফলশ্রুতিতে তীব্র পানি সংকট। বৃষ্টি না হওয়ায় ফসলের মৌসুমও পেছাতে পারে বলে জানিয়েছেন চরগাজি ইউনিয়নের জাহের মার্কেট এলাকার কৃষক মো: জসিম উদ্দিনি।

বৃষ্টির জন্য লক্ষ্মীপুর জেলার বিভিন্ন স্থানে বিশেষ নামাজ এবং দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। নিয়মিত বৃষ্টি শুরু হলেই এ সংকট কেটে যাবে বলে আশাবাদ করছেন সবাই।