সাকিবের ব্যাট বিক্রি-আমাদের মানসিক দৈন্যতা

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ১০:৩৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৩, ২০২১
সারোয়ার মিরন: ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের ঐতিহাসিক ব্যাটটি ২০ লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ চড়া দামে এটি ক্রয় করেছেন আমেরিকা প্রবাসী জনাব রাজ। পাঁচ লক্ষ টাকা ভিত্তি মূল্যে মাত্র অাট ঘন্টায় তিনিই সর্বোচ্চ দাম হেঁকেছেন। এই ব্যাটের বিশেষত্ব হলো, ২০১৯ সালের পুরো বিশ্বকাপটা এই ব্যাট দিয়েই খেলেছেন সাকিব। যেখানে ৮ ম্যাচে ২ সেঞ্চুরিসহ বাংলাদেশের হয়ে রেকর্ড ৬০৬ রান করেন তিনি। এছাড়া আগে-পরে সবমিলিয়ে এই ব্যাট দিয়ে দেড় হাজারের বেশি আন্তর্জাতিক রান করেছেন সাকিব।
এটা নিয়ে অনেকেই বেশ সমালোচনা করছেন। বলছেন কোন পাগলে এত চড়া দামে এটি কিনেছেন! তিনি চাইলে বিশ লক্ষ টাকা নিজেই করোনা সংকটে সরাসরি দান করতে পারতেন। আমি ক্রেতা-বিক্রেতা কারোরই সমালোচনা করছি না। এটা সম্পূর্ণ পজিটিভ ভাবে দেখছি। উভয়পক্ষের ইচ্ছে ছিল এ অর্থ মানবতার কল্যাণে ব্যয় হবে। আর নিলাম প্রক্রিয়াটি শুধুমাত্র বন্ধন রচনার উপলক্ষ্য। বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলোতেও সামান্য একটা পায়ের ছাপ, ক্যাপ, হ্যাট, চশমা, হাতঘড়ি, ব্যাসলেট, ছড়ি ইত্যাদি কোটি কোটি টাকা নিলামে বিক্রি হয়। ঠিক এ সংকট কালে সাকিব আল হাসানের ব্যাটটা অাটাশ লক্ষ না, অাটাশ কোটি টাকা মূল্য হলে সবচেয়ে বেশি খুশি হতাম আমি নিজেই।
সাকিব আল হাসান স্পষ্ট বলছেন নিলাম কাজটি তিনি করেছেন তহবিল সংগ্রহ করতঃ তাঁর প্রতিষ্ঠিত সাকিব ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে অসহায়দের সহযোগিতার জন্য। আমার বিশ্বাস যে প্রবাসী ভাই ক্রয় করেছেন তিনিও চেয়েছেন তার টাকা গুলো যেন মানবিক কাজে ব্যয় হয়। দুজনের উদ্দেশ্যই মহৎ- এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
দাতব্য কাজে সহযোগিতায় নিলাম পদ্ধতি আমাদের দেশে নতুন হলেও বিষয়টা অনেক আগ থেকেই বিশ্বব্যাপী চলে আসছে। পৃথিবীর তাবৎ সেলিব্রেটিরা নিজেদের প্রিয় জিনিস গুলো এভাবেই নিলামে তুলেন মানবতার কাজের জন্য। আমাদের দেশে ট্রেন্ডটা নতুন হওয়ায় অনেকেই বুঝে না বুঝে সমালোচনা করছেন। স্পষ্ট করে বললে বলতে হয়, নিলাম প্রক্রিয়াটা একটা উছিলা মাত্র।
সবারই জানার কথা, বস্তুত এই ব্যাটটির দাম এতো নেই। তারপরও সাকিব বিশাল দাম হাঁকিয়েছেন এবং জনাব রাজ ইচ্ছে করেই অারো তিনগুন বেশি দামেই কিনেছেন। উদ্দ্যেশ্যটা অনুমেয়। অনেকের যুক্তি ছিল জনাব রাজ ব্যাটটি না কিনে নিয়ে সরাসরি টাকা গুলো দান করতে পারতেন। তিনি কেন বাহুল্য কাজটি করতে গেলেন! এর জবাবে বলতে হয়, কাজটি তাঁরা করেছেন যেন দেশে মানবিক কাজের জন্য তহবিল গঠনে এ ধরনের নিলাম প্রক্রিয়া আরো বেশি সংঘটিত হয় এবং সম্পদশালীরা এতে সহযোগিতা করে। সাকিব আল হাসান কিংবা রাজ সাহেবের নিলাম প্রক্রিয়ার মূল থিম বা ম্যাসেজ এটাই।
এর বাইরে কেউ যদি অন্য কোন কিছু চিন্তা করে থাকেন তিনি মানসিক সংকটে ভুগছেন বলে আমার ধারণা।
২৩ এপ্রিল ২০২০