রম্যঃ শিক্ষক এবং অভিভাবকের টেলিফোন আলাপ

নেইমপাম নেইমপাম

বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১:৫১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৬, ২০২০

ইন্টারনেট থেকেঃ ছাত্রের ফেলের খবর দেয়া শিক্ষকের সাথে ছাত্রের বাবার দারুণ কথোপকথন:

–আপনি কি মলয় দাস ?
–আজ্ঞে, বলছি।
–সাগর দাস কি আপনার ছেলে?
–আজ্ঞে, আপনি কে বলছেন?
–আমি আপনার ছেলের স্কুল থেকে বলছি। ইন্দ্রানী দেবদাস । গণিত ও বিজ্ঞানের শিক্ষক।

–ও, আচ্ছা। কেমন আছেন, স্যার?
– -আজ্ঞে, ভালো। আপনার ছেলে সম্পর্কে কিছু কথা বলার ছিল। ও তো প্রাক নির্বাচনী ও নির্বাচনী দুই পরীক্ষাতে গণিত ও বিজ্ঞানে ফেল করেছে। আপনাকে কি বলেছে?
– -আজ্ঞে, বলেছে।

–জানেন তো, আমাদের প্রতিষ্ঠানে কিছু নিয়ম-কানুন আছে। একাধিক বিষয়ে ফেল করলে আমরা ছাত্রদের ফাইনাল পরীক্ষায় বসে পাস করার সুযোগ দেই না।
–তা এসব আমাকে কেন বলছেন?

থতমত খেয়ে গেলেন ও প্রান্তের ব্যক্তি।
–না, মানে, আমি বলছিলাম আপনার ছেলে ফেল করেছে। আপনার কি উচিত না তার পড়াশোনার প্রতি খেয়াল রাখা?
–আমাকেই যদি তার পড়াশোনার দায়ভার নিতে হয়, তাহলে আপনি কী জন্যে আছেন?
–না, মানে আমি বলছিলাম আপনি কাউন্সেলিং করতে পারেন, বোঝাতে পারেন।
–অবশ্যই আমি তার সাথে কথা বলতে পারি। কিন্তু শিক্ষক হিসেবে আপনি কি তার সাথে কথা বলেছেন?
–মানে? বুঝলাম না!
–আমি বলতে চাইছি, আমার ছেলে যে ফেল করল, গলদটা কোথায় বোঝার চেষ্টা করেছেন কি? দোষ পুরোটা কি ওর একার? আপনার কোনও দায়ভার নেই?

–কী বলতে চাইছেন আপনি?
–দেখুন, স্যার, খুব স্পষ্ট আর সহজ ভাষায় বলছি। এভাবে ছাত্রের ব্যর্থতায় সরাসরি মা-বাবাকে তলব করার আগে আপনাদের পাঁচবার ভাবা উচিত। পড়াশোনার জন্য ছেলেকে পাঠিয়েছি আপনাদের কাছে। তাকে পড়াতে না পারার, পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ তৈরি করতে না পারার, সফলতার পথ দেখাতে না পারার ব্যর্থতাটুকু পুরোপুরি আপনাদের। বাবা-মা কোনও শিক্ষক নন যে এসব পালন করবেন। এ দায়িত্বটুকু পালনের ভার আপনাদের উপরে দেয়া হয়েছে। কই, বেতন তো ঠিকই নেন। ছাত্রের সফলতারও ভাগ চান। তাহলে ব্যর্থতার ভার কেন শুধু ছাত্র আর মা-বাবার ওপরে চাপবে?

–আমি আসলে ওভাবে বুঝাতে চাইনি।
–কোনও ভাবেই বোঝানোর দরকার পড়ত না, যদি যথাযথ শিক্ষকের দায়িত্ব আপনারা পালন করতে পারতেন।
–আমি রাখছি।
–আপনার বাবার ফোন নম্বরটা পাঠিয়ে দেবেন।
–মানে? কেন?
–ব্যর্থ ছাত্রের পিতাকে ফোন করে যে দায়িত্ব আপনি পালন করেছেন, ব্যর্থ শিক্ষকের বাবাকে ফোন করে আমিও একই দায়িত্ব পালন করতে চাই!