মন্তব্য প্রতিবেদন

রামদয়াল বাজার- যে কষ্ট থাকে বছরে ছয় মাস!

নেইমপাম নেইমপাম

বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১:০৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২, ২০২০

সারোয়ার মিরনঃ মেঘনার কোন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই রামদয়াল বাজার জলে ঝটে একাকার। রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউনিয়েনের এ গুরুত্বপূর্ণ বাজারটি বছরের ছয় মাসই জলাবদ্ধতায় নিমগ্ন থাকে। সংষ্কারাধীন থাকা, বৃৃৃষ্টি, যানবাহন চলাচল এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এ দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। অন্তত গত দু বছর ধরেই এ ভয়াভহ চিত্র দেখা যাচ্ছে।

রামদয়াল থেকে আদর্শ হয়ে বিবিরাট পর্যন্ত এ সড়কটির বাজার অংশ সুরকি ফেলে রাখা হয়েছে দু বছর হলো। গতো বছর একাধিক নিউজ করা হলে অপ্রতুল ইট কনা পেলে নামে মাত্র সংষ্কার হয়েছিলো। টেকেনি দু মাসও।

বাজারের এ বহুমূখী দুর্ভোগ নিয়ে কথা হয়েছিলো ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে, জেলার প্রধান নির্বাহি প্রকৌশলীর সাথে। আলাে হয়েছে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মোঃ আবদুল মোমিন, ইউপি চেয়ারম্যান ও বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জাকির হোসেন চৌধুরী লিটনের সাথেও।

সর্বত্রই কাজ দ্রুত শেষের আশ্বাস মেলেছে। কাজ মেলেনি। রামগতি উপজেলার প্রধানতম বাজার গুলোর একটি এ জনবহুল রামদয়াল বাজার। এ বাজার এলাকায় বহু গুরুত্বপূর্ণ মানুষের  বসবাস। এ বাজারের উপর দিয়েই নিয়মিত চলাচল করেন উপজেলা চেয়ারম্যান শরাফ উদ্দিন আজাদ সোহেল, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল ওয়াহেদ। রামগতি এলেই এ বাজারে পদধূলি পড়ে সাংসদ মেজর (অবঃ) আবদুল মান্নানের। সাবেক দু বারের সাংসদ এবিএম আশরাফ উদ্দিন নিজানের বাড়িও এ বাজারে। সদ্য প্রয়াত স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি মরহুম শফিউল বারি বাবুর বাড়িও এখানে। তাঁর নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিতে হয়েছে এ বাজারে।

প্রসাশনিক কর্মকর্তা কিংবা জনপ্রতিনিধি সবারই দৃষ্টি পড়েছে এ দুর্ভোগ চিত্রে। তাঁরা হয়তো সর্বোচ্চ চেষ্টাও করেছেন। কিন্তু সফলতা আসেনি!

আধা কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ বাজার ও রাস্তাটির তিনটি অংশে মডেল আরসিসি ঢালাই করা হয়েছে গত বছর। মোট মিলিয়ে তিন পঞ্চাশে দেড়শো ফুট হবে। তার আবার ঢালাই খসে পড়তে শুরু করেছে। মোর রাস্তার বাদ বাকিটুকু খাদা খন্দকেই পড়ে আছে। আর এ পড়ে থাকাতেই জলাবদ্ধতা থাকে বছরের ছয় মাস!!

বাজারের এ প্রধানতম ও গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে একটি মাদরাসা, একটি প্রাথমিক, একটি উচ্চ বিদ্যালয়, একটি কলেজ, একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ব্যাংক বিমা, ইউনিয়ন পরিষদ অফিস, একাধিক এনজিওর অবস্থান। বলতে গেলে মুল বাজারই এটা। অথচ ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদেরও এ বিষয়ে চৈতন্য নেই।

সরকার, প্রসাশন, জনপ্রতিনিধি কিংবা ঠিকাদার কেউ হয়তে এ দীর্ঘস্থায়ী দুর্ভোগ লাগবে ফল পাননি!! কিন্তু অনবরত ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকা ব্যবসায়ীরা কেন সয়ে যাচ্ছেন! কেন বাজার উন্নয়ন কমিটি নিরব আছেন!! দেশে তো স্বেচ্ছাশ্রমে অনেক কিছুই হয়। বাজারের এ সমস্যা সমাধানে কেন এমন উদ্যোগ আমরা দেখিনা! আশপাশে খাল, জলাশয় ও নদী থাকলেও কেন ড্রেনেজ ব্যবস্থা হয়না। ব্যয়বহুল কাজ বলে হয়তো কেউ এগিয়ে আসছেন না, কিন্তু কেউই তো বক্তৃতা বিবৃতিও দিচ্ছেন না! মিছিল মিটিং দুরে থাক, নিদেন পক্ষে জলাবদ্ধতা নিরসনে একটা সংবাদ সম্মেলনও করা যেত!! করোনা কালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ না থাকলে পরিবেশ ভিন্নও হতে পারতো। কেননা শিক্ষার্থীরা এদেশের বহু অর্জনের অংশীদার।

দেশালোক ডটকম এ সমস্যা সমাধানে দৃষ্টি আকর্ষণ ও জনদুর্ভোগ তুলে ধরে একাধিক সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এবার মন্তব্য প্রতিবেদন।

উদ্দেশ্য একটাই। রামদয়াল বাজারের এ জনদুর্ভোগ এবং ব্যবসায়ীদের বহুমুখী ক্ষয়ক্ষতি ও সাধারন জনগনসহ যানবাহন চলাচলে দুর্ভোগ না পোহাতে হয়। আর যে এ চিত্র নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করতে হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকের প্রতি সবিশেষ অনুরোধ থাকবে দ্রুত রাস্তাটির সংষ্কার কাজ শেষ করে দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দেয়া হোক। এ অঞ্চলের মানুষের আর কিছু না হোক দোয়া ও ভালোবাসা পাবেন।

– লেখক
সম্পাদক, দেশালোক
ইমেইলঃ deshalok24@gmail.com