‘সে জন বাহাদুর’- একটি গানের অপমৃত্যু পথ

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ৩:২৭ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ৩১, ২০২০

সারোয়ার মিরনঃ লক্ষ্মীপুর জেলার আপকামিং আনঅফিশিয়াল থিম সং ‘সে জন বাহাদুর’ গানটির রেকর্ডেড অংশ ফাঁস হয়েছে। বলা চলে পুরো গানটির চিত্রায়ন শেষ না হতেই এখন দর্শকরা দেখছেন ফেসবুকময়।

বিগ বাজেটের এ গানটির কিছু অংশের শুটিং করতে একদল নৃত্যশিল্পীসহ কলা কুশলীরা এসেছেন রামগতির আলেকজান্ডার মেঘনা। ২৯ অক্টোবর বিকেলে স্থানীয় উপজেলা কার্যালয়ের দক্ষিনে মেঘনা বেড়ীবাঁধে গানটির মডেলিং বা চিত্রায়ন করা হয়। এ সময় নির্মাতাদের পক্ষ থেকে বার বার নিষেধ উপেক্ষা করে কতিপয় দর্শকদের কয়েকজন গোপনে গানটির চিত্রায়নসহ স্মার্টফোনে ভিডিও ধারন করেন। ভিডিও করেই ক্ষান্ত হননি তারা। গানটির পুরোটায় ছড়িয়ে দিয়েছেন ফেসবুক এবং ইউটিউবে। রাতারাতি ভাইরাল হয়েছে গানটি। আইডি, পেজে, গ্রুপে গ্রুপে কপি পেস্ট হতে আছে। ইউটিউব চ্যানেলে চ্যানেলে ভাসছে।

মৌলিক এ গানটির আনরিলিজ ট্র্যাক এবং গানসহ চিত্রায়নটি জনসম্মুখে চলে আসায় বড় ধরনের ক্ষতির কবলে পড়ছেন নির্মাতারা। গানটির রেকর্ডেড পোস্টগুলো সরিয়ে নিতে কর্তৃপক্ষ বারবার অনুনয় বিনয় করছেন। গানটি সরিয়ে নিতে অনুরোধ করে দিয়েছেন একাধিক পোস্ট। দেশালোক ডটকম এ নিয়ে ফিচারও করেছে।

এতো আকুতি জানানোর পরেও গানটি সরিয়ে নিচ্ছেন না পোস্টকারীরা।ফলে গানটির মেধাস্বত্ত নষ্ট হচ্ছে। এ গানটির নির্মানে নির্মাতাদের বড় ধরনের অর্থ লগ্নি করতে হয়েছে। শ্রম ঘাম দিতে হয়েছে। শিল্পী কলা কুশলীদের পেমেন্ট করতে হয়েছে। স্ক্রুদের পারিশ্রমিক। গীতিকার, সুরকার, কোরিওগ্রাফার, নৃত্য পরিচালক, ভিডিও নির্মাতাসহ বহু আর্থিক ব্যয় করা হয়েছে।

গানটির পেছনে বানিজ্যিক উদ্দেশ্য না থাকলেও নিদেন পক্ষে ব্যয়টা তুলে নেয়ার প্রচেষ্টা থাকা মন্দ নয়। কিন্তু গানটির আনরিলিজ ভাবে ফাঁস হয়ে যাওয়ায় বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতিসহ রয়্যালিটি সংকটে পড়তে হতে পারে। এমন নানান সংকায় নির্মাতা সংশ্লিষ্ট্যরা গানটির নির্মান বন্ধ করে দিতে চাইছেন। কোন কারনে গানটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলে লক্ষ্মীপুর জেলা সাংষ্কৃতিক ভান্ডারে একটি বড় ধরনের অর্জন হারাবে বলে মনে করি।

গানটির সুর, কথা এবং চিত্রায়নে লক্ষ্মীপুরের ইতিহাস ঐতিহ্যকে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। গানটির চিত্রায়নের শুটিং উদ্বোধন হয় দালাল বাজার জমিদার বাড়িতে। এরপরই রামগতির আলেকজান্ডারে। দালাল বাজারে না হলেও কিছু অতি উৎসাহি দর্শকের কারনে এখানেই সর্বনাশটি ঘটে।

মেধাস্বত্ত্ব নষ্ট হওয়া বা অফিসিয়ালি রিলেজের পুর্বেই গানটি যদি জানসাধারনের কাছে পৌছে যায় তাহলে নির্মাতাদের পড়তে হয় অস্তিত্ব সংকটে। সম্ভবনার অপমৃত্যুও হতে পারে এহেন বদান্যতায়।

একটি কনটেন্ট নির্মাতার সম্পদ। সংসার সন্তানের মতো! পথচলার শুরুতেই যদি অপমৃত্যু ঘটে অমিত সম্ভাবনার তখন আর অবশিষ্ট থাকেনা। সৃষ্টির বিনাশ আপন স্বত্তায় ঝড় তোলে। মানুষ মাত্রই জানেন হারানোর বেদনা কতো ব্যথাতুর! গানটিও নির্মাতাদের সম্পদ-সন্তান।

‘সে জন বাহাদুর’ গানটি লক্ষ্মীপুরবাসীর জন্য। এটি আপনার আমার সবার গান। সবার জন্যই গানটি উন্মুক্ত থাকবে। চলতি নভেম্বর মাসের শেষ দিকে অফিশিয়ালি রিলিজ করে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার কথা ছিলো! কিন্ত মাঝপথেই হতাশ ঝড়।

প্লীজ, যে বা যারা বুঝে বা না বুঝে গানটির রেকর্ডেড ভার্সন ফেসবুকে কিংবা ইউটিউবে পোস্ট করেছেন বা কপি পেস্ট করেছেন সবাই ডিলিট করে দিন। সরিয়ে নিন প্লীজ।

অযুত সম্ভাবনার দ্বার আমরা বন্ধ করতে চাই না। আমরা গানটির উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে আরো নতুন কিছু পাবো সে সহযোগিতা করি। গানটি তুলে নিই।

আপনার কয়েকটা লাইক কমেন্টস কিংবা শেয়ারের লোভ যেন কারো ভার্চুয়াল সম্পত্তি নষ্ট না হয়। সচেষ্ট হই। অন্যের নির্মান ও মেধাকে সর্বোচ্চ সন্মান করি।

উল্লেখ্য, লক্ষ্মীপুর জেলার ইতিহাস ঐতিহ্যকে তুলে ধরে সেজন বাহাদুর নামে গানটি লিখেছেন শিক্ষক- সাংবাদিক সানা উল্লাহ সানু। গানটির চিত্রায়নে জেলার প্রায় বিশটি দর্শনীয় স্থানকে তুলে ধরা হবে। গানটির নৃত্যে অংশ নিয়েছেন অর্ধশতাধিক নৃত্যশিল্পী।

— সম্পাদক, দেশালোক