ভুলুয়া নদীর গতিপথ বদলে দু উপজেলায় জনদুর্ভোগ

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ১:৫০ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২

মো: আশরাফ আলী:

নোয়াখালী জেলার সুবর্নচর উপজেলা অংশে ভুলয়া নদীর গতিপথ রোধ ও মিঠা পানির জন্য খাল খনন করায় এ নদী এখন আশীর্বাদের পরিবর্তে স্থানীয়দের জন্য অভিশাপ হয়ে উঠেছে। অপরিকল্পিত খাল খননে এখন রাক্ষুসে রুপ ধারন করেছে ভুলুয়া। ভাংগনে তীব্রতায় গিলে খাচ্ছে ভূমিহীনদের বসতি। বহুমূখী দুর্ভোগে দিশেহারা সুবর্ণচর উপজেলা ও রামগতি উপজেলার টুমচর, চর আফজলের হাজারো মানুষ।
প্রতিনিয়ত গতিপথ বদলাচ্ছে ভুলুয়া। গত এক দশক ধরে ভুলুয়া তান্ডবের নিরব সাক্ষী তীরবর্তী হাজারো মানুষ। উজানে জমিনের ফসল, পুকুরের মাছ ও রাস্তাঘাট ভেসে যায়। ডুবে যায় গবাদিপশুর বিচরনের মাঠও। এ পর্যন্ত শতাধিক পরিবারের ভিটেমাটি কেড়ে নিয়েছে ভুলুয়া গা ঘেঁষে খনন করা এসব খাল। ভয়ংকর ভাঙ্গনে বদলে যাচ্ছে এলাকার চিত্র। ভিটে মাটি হারানোর পাশাপাশি জোয়ারের পানিতে ভাসার শংকায় রয়েছে তীরবর্তী কয়েক হাজার পরিবার।
প্রসঙ্গত ২০১০সালে ভুলুয়া নদীর মাঝখানে বাঁধ নির্মান করে চর উন্নয়ন সংস্থা সিডিএসপি। পাল্টে যায় স্রোতের গতিপথ। নোয়াখালী জেলার সুবর্নচর উপজেলার ৫নং চর জুবলি ইউনিয়নের চর জিয়াউদ্দিন বাজার পয়েন্টে বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এর প্রভাবে চেয়ারম্যান ঘাঁট পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার নদী মরে যায়। অভিযোগ আছে সে সময় স্রোতের গতিপথ তৈরি করে দেয়া হয় রামগতির মাছ ঘাঁটের সাথে। সেটিই জনদুর্ভোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে রামগতি ও সুবর্ণচরের মানুষের জন্য।
খালের দুই পাড়ের বেড়িবাঁধ হারিয়ে গেছে উত্তাল ঢেউয়ে। পলি ধুয়ে ফসলি জমি বিলিন হচ্ছে মেঘনা গর্ভে। পাঁচ বছর না যেতে চর উন্নয়ন সংস্থাকে আবারও বেড়ীবাঁধ দিতে হয়েছে। ২০১৫ সালে দ্বিতীয় বার নির্মাণ করা হয় এ বাঁধটি। সরেজমিনে দেখা যায়, অন্তত ১৭টি পয়েন্টে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে নতুন এই বাঁধে। এর মধ্যে খলিল চেয়ারম্যান বাজার, প্রজেক্ট ও স্লুইসগেট পয়েন্টে ভাঙ্গন তীব্রতা সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে। এলাকাবাসী জানান দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে বিলীন হয়ে যেতে পারে এটিও।
ভুক্তভোগী বয়োবৃদ্ধ কলিম মিয়া জানান- ‘‘গাঁঙ্গে দুইবার বাড়ি হারাইছি। শেষে বাল-বাচ্চাসহ এখানে আশ্রয় নিছিলাম। এবারো থাকতে পারলাম না। টুমচরের শরীফ হোসেন জানান- ‘জোয়ার উঠলে আমরা বাজার-ঘাটে যেতে পারি না। চলাফেরা করতে পারি না। এমনকি পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থাও আমাদের থাকে না। স্থানীয় ইউপি সদস্য আক্তার উদ্দিন শাহীন বলেন- “আমরা সিডিএসপি অফিসে জানিয়েছি। তারা দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো তৎপরতা দেখছি না। আ.লীগ নেতা আবুল কালাম শফি জানান, আমি এমপি একরামুল করিম চৌধুরীকে ব্যাপারটি জানিয়েছি।
দুই পাড়ে বাঁধের পরিকল্পিত সংস্কার, স্রোত নিয়ন্ত্রণে স্লুইসগেট নির্মাণ ও ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে পাথরের ব্লক বাঁধ করার দাবি তীরবর্তী দু’ উপজেলার বাসিন্দাদের।