সাবেক সাংসদ আবদুল্যাহ আল মামুন: রামগতি-কমলনগরের গণমানুষের এমপি: পর্ব-২

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ১২:২৮ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩

লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) সংসদীয় আসনের সাবেক সাংসদ আলহাজ্ব মো: আবদুল্যাহ আল মামুন এ অঞ্চলের মানুষের কাছে কেন এত জনপ্রিয়? সাবেক হয়েও মানুষের মনে সংসদ সদস্য হিসেবে তাঁর নামই কেন সবার মুখে মুখে? কি এমন কাজ করেছেন যা তাঁকে জনপ্রিয় করে তুলেছে? এসব অনুসন্ধান নিয়েই ধারাবাহিক একাধিক পর্বে লিখেছেন দেশালোক ডটকম এর সম্পাদক ও প্রকাশক সারোয়ার মিরন। আজ পড়ুন দ্বিতীয় পর্ব

সারোয়ার মিরন:

রামগতি-কমলনগরের দুর্গম চরাঞ্চল বিশেষ করে রামগতি উপজেলার চর গজারিয়া উপরে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপের হিংস্র থাবা ও তান্ডবে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। তথাকথিত বিভিন্ন বাহিনীর নামে গড়ে ওঠা এসব দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপ যারা মানুষ হত্যা, গুম, চোখ উৎপাটন, চাঁদাবাজি, নারী নিপিড়ন, গবাদি পশু চুরি-ডাকাতি, জ্বালাও-পোড়াও, চর দখলসহ নানান রক্তের হোলিখেলায় মেতে উঠেছিল। এসব অপকর্ম দূরীকরণ এবং বাহিনী নিশ্চিহ্ন করতে কাজ করছেন তিনি। রামগতি ও কমলনগর উপজেলার জনসাধারণের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসনিক সহযোগিতা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করে তা চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন আবদুল্যাহ আবদুল্যাহ আল মামুন।

দলীয় কাজের অংশ হিসেবে তিনি রামগতি ও কমলনগর উপজেলায় আওয়ামীলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন সম্পন্ন করেন। পাশাপাশি এ সংসদীয় আসনে তাঁর সময়ে আরও কিছু উন্নয়নের খন্ড চিত্র হল: উপকূলীয় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ, ভুলুয়া নদী খনন, সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে জিরো টলারেন্স, কমলনগর উপজেলায় একটি অত্যাধুনিক ফায়ার স্টেশন নির্মাণ, ১২০ কিমি রাস্তা সংষ্কার, ৪০টি সেতু-কালভার্ট নির্মাণ, কমলনগর উপজেলা ভবন নির্মান, রামগতি পৌরসভা ভবন নির্মান, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স নির্মাণ, ১৬টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়ন কেন্দ্র নির্মান, ৭১৬টি গভীর নলকূপ স্থাপন, স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন করা, ২০টি স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার একাডেমিক ভবন নির্মাণ ও সম্প্রসারণ করা, প্রাথমিক বিদ্যালয়, কারিগরি শিক্ষা, আনন্দ স্কুল, শেখ রাসেল ডিজিটাল পার্ক, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও ল্যাপটপ বিতরণ, ভূর্তকির আওতায় আনা কৃষি উপকরণ বিতরণ, কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দুটি শয্যা উন্নীতকরণ, বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র স্থাপন, তৎকালীন সময়ে মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭০ভাগ মানুষকে বিদ্যুতের সংযোগ আওতায় আনা, বিভিন্ন ভাতা শতভাগ নিশ্চিত করা, আশ্রয়ন প্রকল্প স্থাপন, গুচ্ছগ্রাম, টিআর-কাবিখা কর্মসূচি, মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র স্থাপন, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ কাজ করা, মসজিদ-মন্দির মেরামত ও সংস্কার, পর্যটন কেন্দ্র ঘোষনানহ নানান উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্ন করেছেন।

শিক্ষানুরাগী আবদুল্যাহ আল মামুন তাঁর বাড়ির পশ্চিম পাশে স্ত্রী মাহমুদা বেগম শেলী’র নামে ‘মাহমুদা বেগম উচ্চ বিদ্যালয়’ একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন। ইতিমধ্যে বিদ্যালয়টির জুনিয়র শাখা এমপিওভূক্ত হয়েছে। মাধ্যমিক শাখাও এমপিওভূক্তি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ বিদ্যালয়ে প্রায় চার শতাধিক শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছে। উপজেলা বড়খেরী ইউনিয়নে অবস্থিত তাঁর বাসভবন জনসাধারনের জন্য উন্মুক্ত। যখন যে কেউ প্রবেশ করে তাঁর সাক্ষাৎ পেতে পারেন। খাওয়া কিংবা নাস্তা ছাড়া তাঁর বাসা থেকে ফিরে আসছেন কেউ- এমন নজির নেই। তাঁর স্ত্রী ‘শেলী’ সকলের নিকট আপা নামে পরিচিত। আবদুল্যাহ আল মামুন বেশ কয়েকটি সামাজিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছেন। উপজেলার অন্যতম নারী বিদ্যাপীঠ রামগতি আছিয়া পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে একাধিকবার বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার ৮নং বড়খেরী ইউনিয়নের বড়খেরী গ্রামে ১৯৫৬ সালের ৭ আগস্ট জন্মগ্রহন করেন মো: আবদুল্যাহ (আল মামুন)। তাঁর পিতার নাম মৃত এছহাক মিয়া এবং মাতার নাম ফিরোজা বেগম। শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে স্মাতক (সম্মান) পাশ করেছেন। নির্বাচনী আসনে তার স্থায়ী ঠিকানা হলেও ব্যবসা-বানিজ্যের প্রয়োজনে তিনি রাজধানীর মহাখালীর নিউ ডিওএইচএস এলাকায় স্বীয় মালিকানাধীন একটি ফ্ল্যাটে বসবাস করছেন। গ্রামের বাড়িতে প্রতি মাসেই একাধিকবার যাওয়া আসা করছেন। সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্বপালন এবং ব্যবসায়িক প্রয়োজনে প্রায় দুই ডজনের মত দেশ ভ্রমন করেছেন এ প্রবাদ পুরুষ।

সংসদ সদস্য হিসেবে না থাকলেও রাজনীতির মাঠে ময়দানে, দলীয় কার্যক্রমে তিনি বেশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করে চলেছেন। তাঁর হাত ধরেই রামগতি-কমলনগরের অসংখ্য জনপ্রতিনিধি বিজয়ের মাল্য গলায় জড়িয়েছেন। এছাড়াও উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের অসংখ্য আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীর রাজনীতির হাতেখড়ি হয়েছে তাঁর মাধ্যমে। বর্তমানে আবদুল্যাহ আল মামুন লক্ষ্মীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। যেখানেই থাকেন না কেন প্রতিনিয়তই রাজনৈতিক অন্দর-মহলের সব খোঁজ খবর রাখছেন। নিয়মিতই অংশ নেন নির্বাচনী আসনের রাজনৈতিক ও জাতীয় অনুষ্ঠানগুলোতে। ঈদ, পুজা-পার্বনে দান-অনুদানেও অগ্রনী ভূমিকা রাখছেন। ২০২২সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত ফুটবল বিশ্বকাপের সবগুলো খেলা বড় পর্দায় দেখানোর ব্যবস্থা করছেন এ সাবেক সাংসদ। এর জন্য রামগতি ও কমলনগর উপজেলা প্রশাসন প্রাঙ্গনে দুটি উন্নতমানের বড় মনিটরের ব্যবস্থা করেছিলেন। খেলার আগে পরে ও বিরতিতে এ বড় পর্দায় সরকারের নানান উন্নয়নের কথা প্রচার করা হয়েছে।

সাবেক সাংসদ মো: আবদুল্যাহ আল মামুনকে নিয়ে কথা বলেছিলেন রামগতি উপজেলা আওয়ামীলীগের তৎকালীন সাধারন সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ। আরো কথা বলেছেন তৎকালীন বৃহত্তর রামগতির (রামগতি-কমলনগর) মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও ৮নং বড়খেরী ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান মাহমুদ ফেরদৌস।

প্রথম পর্ব পড়ুন: https://deshalok.com/news/5335

 

–চলবে….

লেখক: সম্পাদক ও প্রকাশক

দেশালোক ডটকম