দক্ষিনাঞ্চলে জেঁকে বসছে শীত-নেই চিরচেনা দৃশ্য

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ৬:৪৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৪, ২০২১

দেশালোক: গত কয়েকদিন ধরে দেশের দক্ষিনাঞ্চল তথা লক্ষ্মীপুরে ঝেঁকে বসছে শীত।শৈত্যপ্রবাহ না হলেও অনেকটা অলিখিত শৈত্যপ্রবাহ উপকূল জুড়ে। মধ্যরাত থেকে ঘন কুয়াশার ঘোর। যার রেশ বহমান সকাল অবধি।

তীব্র শীতের এ সময়ে মধ্যবিত্ত কিংবা বিত্তশালীরা সুখে থাকলেও কষ্টে আছে নিম্নবিত্তরা।শীত নিবারনে তাদের ঘরে হাপিত্যেশ। বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এবং ব্যক্তি উদ্যোগে উপকূলের অসহায় পরিবারগুলোতে কম্বল বা শীত বস্ত্র বিতরন করলেও অন্যান্যবারের তুলনায় এবার অনেক অপ্রতুল।

গত কয়েক বছরে সরকার এবং ব্যক্তি উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরন করা হলেও এবার কম্বলই প্রাধান্য পাচ্ছে। কম্বল হিসেবে যা দেয়া হয় তা বেশিরভাগ সময়ই শীত নিবারন যোগ্য নয়।

শীতের অন্যতম আকর্ষন ছিল খেজুর রস। উপকূলীয় অঞ্চল হিসেবে লক্ষ্মীপুরের সুনাম ছিল এ রসের। বর্তমানে তা দুষ্প্রাপ্যই বটে। রামগতি, কমলনগর এবং রায়পুরে সামান্য কিছু খেজুর রস পাওয়া গেলেও তার দাম অনেক। সরেজমিনে রামগতি উপজেলার চর বাদাম এলাকায় গিয়ে দেখা যায় ভোর বেলায় গাছ থেকে নামিয়ে দেয়া প্রতি কলসি রস (আনুমানিক ৫কেজি) দাম চারশত টাকা। এলাকাভেদে এ দাম কিছুটা হেরফেরও দেখা মেলে।

বহু বছর ধরেই এসব এলাকায় খেজুর গাছের বিলুপ্তি ঘটছে। এর জন্য কিছুটা দায় খেজুর গাছ কাটায় অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি এবং অদক্ষ গাছি। অন্য কারন পরিবেশগত পরিবর্তন। বর্তমান আবহাওয়াও খেজুরগাছ বান্ধব নয়।

খেজুরগাছের বিলুপ্তির সাথে সাথে বিলুপ্তি ঘটেছে খেজুর গুড়েরও। নেই খেজুরগুড় তৈরির গ্রামীন দৃশ্যপটও।

আউশ-আমন ধানের মৌসুমের এদিক সেদিক হওয়ায় শীতের সকালে নেই মোয়া, মুড়ি কিংবা জিলাপীর আয়োজন। ধানের বিনিময়ে কেনা-বেচা এসব মোয়-জিলাপীর ফেরিওয়ালারাও পেশা পাল্টে অন্য পেশা গ্রহন করেছে। নেই মাটির তৈজসপত্রের  বিকিকিনিও।

গ্রাম-গঞ্জে নেই যাত্রাপালা। নেই জারি সারি বাউল গানের আসরও। হাট-বাজার গুলোতেও নেই শীতের আমেজ। চিরচেনা শীত ও শীতের সকাল কল্পনা আর বাস্তবতায় এখন অনেক পরিবর্তন। এর জন্য ঋতুবৈচিত্র্যের পরিবর্তনও কিছুটা দায়ী বলা চলে।

বহু বৈচিত্রে্যর দৃশ্যায়ন এখন শীত নয়। শীত এখন ধনী গরীরেব ফাঁরাক বৃদ্ধির মৌসুম। অসহায় উপকূলবাসীর বোবা কান্না।শীত এখন কেবল আসে শীতের নিয়মেই। শিশিরভেজা ভোর কিংবা কুয়াশায়ঘেরা ভোরের মেঠোপথ এখন কেবল কল্পনায়।