চর টগবি, রামগতি

বিদ্যুতস্পৃষ্ট তামিমের কাটতে হয়েছে হাত, চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে নি:স্ব পরিবার

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ৫:১৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৫, ২০২১

সারোয়ার মিরন:
পল্লী বিদ্যুতের ছিড়ে পড়ে থাকা তারে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়ে আড়াই মাস ধরে চিকিৎসাধীন লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার তামিম ইকবাল (১২)। একাধিক হাসপাতাল হয়ে বর্তমানে রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ণ ইনস্টিটিউট শিশু সার্জারি বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছে সে।

স্কুল ছাত্র তামিমের ইতিমধ্যেই পুরোপুরি কেটে ফেলতে হয়েছে বামহাত। কাটতে হবে ডান পায়ের দুটি আঙ্গুলও। ঝলসে যাওয়া শরীরের বিভিন্ন অংশে পচন ধরেছে। মাথার আঘাতও গুরুতর। এখন পর্যন্ত করতে হয়েছে পাঁচ পাঁচটি সার্জারি। সে এখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে।
ছেলের চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে হারাতে হয়েছে একমাত্র অবলম্বন স্থানীয় রামদয়াল বাজারের রং চায়ের টং দোকানটি। আহতের দশ দিনের মাথায় বিক্রি করতে হয়েছে সেটি। হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করায় দিনমজুরের কাজটিও বন্ধ। ছেলেকে বাঁচাতে সবার সাহায্য সহযোগিতা খুঁজে ফিরছেন।

২৭ নভেম্বর শনিবার তামিমের বাবা শাহাদাত হোসেন জানান, আহত হওয়ার পর পল্লী বিদ্যুত কর্তৃপক্ষকে একাধিক বার জানানো হলেও আজ পর্যন্ত তারা কোন খোঁজ খবর নেয়নি। তিনি জানান, ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে চর টগবি গ্রামে মেঘনার ভাংগনে পল্লী বিদ্যুতের একটি খুঁটি নদীতে ভেঙ্গে পড়ে। পরদিন ২৫ সেপ্টেম্বর সকালে তার ভাই মো: আশরাফ নিজে এবং আরো কয়েকজনের মাধ্যমে পল্লী বিদ্যুত অফিসে জানান। দু দিন সময় পার হলেও তারা কোন ব্যবস্থা নেননি। স্কুল থেকে ফিরে গোসল করতে যায় নদীতে। সেখানেই সে বিদ্যুতস্পৃষ্ট হয়। প্রথমে তাকে রামগতি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখান থেকে নোয়াখালী সদর হাসপাতাল হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।

তামিম রামগতি উপজেলার চর আলগী ইউনিয়নের চর টগবি গ্রামের শাহাদাত হোসেন এর ছেলে। সে স্থানীয় চর কাটাবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেনির শিক্ষার্থী। শাহাদাত হোসেন আরো জানান, ধার দেনা করে ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমি এখন নিঃস্ব। এখন আর পারছিনা। টাকা নেই। ছেলের ওষুধ কিনতেও পারছিনা। প্রায়শই আমি এবং আমার স্ত্রীকে না খেয়ে থাকতে হচ্ছে।

তামিমের মা আমেনা বেগম বলেন, পল্লী বিদ্যুতের অবহেলায় আমার ছেলে দু মাসেরও বেশি সময় মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে। খবর দেয়ার পরেও পড়ে থাকা বিদ্যুতের খুঁটি ও তার না সরানোয় আমার ছেলে দুর্ঘনার শিকার হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।

এ বিষয়ে রামগতি পল্লী বিদ্যুতের ডিপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) রেজাউল করিম জানান, মেঘনার নদীর ভাঙ্গনের ফলে রাতে বিদ্যুতে খুঁটিটি পড়ে যায়। বিষয়টি ঐ এলাকা থেকে কেউ অবহিত করেনি। দুর্ঘটনার পরে আমরা বিষয়টি জানতে পারি। নদী ভাঙ্গনের মুখে ঝুঁকিতে থাকায় খুঁটি আগেই কেন সরানো হয়নি? জানতে চাইলে তিনি বলেন, হঠাৎ করে ভাঙ্গনের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছু বুঝে ওঠার আগেই বিদ্যুতের খুঁটিটি পড়ে যায়। ভূক্তভোগির পক্ষ থেকে আবেদন করা হলে আমরা মানবিক কারনে বিষয়টি বিবেচনা করবো।

উপায়ন্তর না দেখে দেশের সবার কাছে ছেলের চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা চেয়েছেন। শাহাদাত হোসেন এর বিকাশ নাম্বার ০১৮৫৮-০৪০৯২০।