রামগতি: বিবিরহাট শাহী দরবারের ৪৩তম ওরশ

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ৫:৩৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৫, ২০২১

দেশালোক:
বিবিরহাট শাহী দরবার শরীফ। এর অন্য নাম বিবিরহাট বাঁশতলী হুজুরের শাহী দরবার শরীফ। এটি লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার ০৭নং চর রমিজ ইউনিয়নের বিবিরহাট এলাকায় অবস্থিত।

এখানে প্রতি বছর হিজরী সনের রবিউস সানি মাসের প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হয় দিনব্যাপি মাহফিল ও উরশ মোবারক। এ মাহফিলে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অগণিত ভক্ত এবং আশেকান উপস্থিত হন।

চলতি বছরের ৫ ডিসেম্বর (রোববার) ৪৩তম ওরশ মোবারক অনুষ্ঠিত হবে। এদিন সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে পরদিন ভোরে এ আয়োজনের সমাপ্তি ঘটবে। বাদ ফজর দোয়া-মোনাজাত এবং তবারক বিতরন করা হয়। সারা রাত চলে ইবাদত বন্দেগি, ঝিকির আজগার ও পীর সাহেবের জীবনালোচনা।

মাহফিলকে সামনে রেখে চলে দরবার প্রাঙ্গন পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ। নতুন করে রং করা হয় প্রতি বছর। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে ১০ থেকে ১২ জন ভক্ত স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে করছেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ। এদের একজন রংপুর জেলার আলী হোসেন। ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরী করছেন। প্রতিবছরই আসেন এ মাহফিলে। তিনি জানান, প্রতিবছরই এ মাহফিলে অংশ নেন। এবার ৭দিন আগেই এসেছি। করছি খেদমতি কাজ।

প্রতি বছর ওরশকে কেন্দ্র করে উপজেলা জুড়ে চলে নগদ অর্থ, চাল-ডাল ইত্যাদি সংগ্রহের কাজ। এ কাজ গুলো ভক্তরাই করে থাকেন। এছাড়াও তবারকে অংশ নিতে দেশ বিদেশ থেকে আসে অনুদানও। আসে গরু ছাগলও। মাঝে মধ্যে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসে মরুর জাহাজ উট।
দরবারের মূল ভবনের পশ্চিম পাশের দেয়ালে রয়েছে পানির একটি স্থায়ী কলস। এখানে আসা ভক্তরা রোগমুক্তি এবং বিভিন্ন নিয়্যতে এ কলসের পানি পান করেন। এর পাশেই রয়েছে হাদিয়া বা সদকা জমা দেবার একটি দানবাক্স।

উপজেলার দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে বিবিরহাট শাহী দরবার শরীফ অন্যতম একটি। দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে দর্শনার্থী এবং ভক্তরা আসেন এখানে। দরবারের পুরো প্রাঙ্গনটি সুসজ্জিত। ফুল ও গাছ গাছালিতে সাজানো। আছে সান বাঁধানো একটি পুকুরঘাটও। পুরুষ-মহিলাদের জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা অবস্থান ঘর এবং ইবাদতখানা। মূল মাজারের পশ্চিম পাশে রয়েছে মসজিদ। দরবারের প্রধান ফটক থেকে শুরু করে সর্বত্রই রয়েছ অসাধারন নির্মান শৈলী।

জনশ্রুতি আছে, বাঁশঝাড়ের পাশে মাজারটি অবস্থিত হওয়ায় এর নামকরনে বাঁশতলী শব্দটি যুক্ত হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এ দরবার তথা বংশ পরম্পরায় পীরদের সঠিক ইতিহাস সংরক্ষিত নেই। তবে ধারনা করা হচ্ছে সত্তর দশকের শেষ দিকে খাজা সৈয়দ ছায়া-দাত আহম্মদ (র) পরবর্তী চিশতীয়া তরিকায় সর্বশেষ পীর মাওলা আলী উল মুরতাজা (রা) এ এলাকায় আস্তানা গাড়েন। পরবর্তীতে এখানে তার সমাধিস্থল ঘিরে মাজার গড়ে ওঠে। সারাদেশেই এ পীর এবং দরবারের ভক্ত এবং আশেকান রয়েছেন।