প্রভাষকদের পদোন্নতিতে অনুপাত প্রথা চাই না

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ১০:২২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৫, ২০২০

সারোয়ার মিরনঃ বেসরকারি শিক্ষক পদোন্নতিতে অনুপাত প্রথা একটি বৈষম্যমূলক পদ্ধতি। এর ফলে একই যোগ্যতায় একই কারিকুলামে নিযুক্ত শিক্ষকের মধ্যে অর্ধেক প্রমোশন পাবে বাকি অর্ধেক স্বপদে থেকেই অবসরে! বাহ! সিস্টেম বাহ!

বেসরকারি কলেজে নিযুক্ত প্রভাষকদের পদোন্নতিতে (১ঃ১) অনুপাত প্রথা বলে সহকর্মীদের অর্ধেক সহকারী/সহযোগী অধ্যাপক হবেন বাকি অর্ধেক এন্ট্রিলেবেল প্রভাষক থেকেই চাকুরী জীবনের ইতি ঘটাবেন! হায়! হায়! এ কেমন কালো আইন। এ প্রথা আবার ডিগ্রি কলেজ/ফাজেল পর্যায়ে! উচ্চ মাধ্যমিক/আলিম লেবেলে প্রমশোনের সুযোগই নেই! ১ঃ১ অনুপাতে নির্দিষ্ট সময়ান্তে প্রভাষক পদ থেকে জৈষ্ঠ্য প্রভাষক হিসেবে চাকরী জীবনের ইতি টানবেন! এ স্তরে সহকারী/সহযোগি অধ্যাপক হওয়ার পথ সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। অথচ সকল স্তরেই প্রভাষক নিয়োগে রীতিনীতি যোগ্যতা, কারিকুলাম একই!

দেশের সকল পেশায় পদোন্নতির একটা স্থায়ী সিস্টেম রয়েছে। পদোন্নতিতে তিনটি ভিত্তি এপ্লাই করা হয়। ভিত্তি গুলো হল- জৈষ্ঠ্যতার ভিত্তিতে, যোগ্যতা ভিত্তিতে এবং জৈষ্ঠ্যতা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে। বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থায় এর কোনটিই ফলো করা হয়নি! অনুপাতের নামে সম্পুর্ন অবৈজ্ঞানিক এবং বৈষম্যমূলক কালো কানুন এপ্লাই করা হয়েছে।

আমি একজন শিক্ষক হয়ে পদোন্নতির এ অনুপাত প্রথার ঘোরতর বিরোধিতা করছি। আমি চাই একজন প্রভাষক যোগদানের আট বছরের মাথায় পরীক্ষা পদ্ধতির (যোগ্যতা ভিত্তিক) মাধ্যমে উত্তীর্ণ হয়ে সহকারী অধ্যাপক এবং একই পদ্ধতিতে বারো বছরের মাথায় সহযোগী অধ্যাপক পদে আসীন হবেন। পরীক্ষা পদ্ধতির জন্য এক স্বতন্ত্র পরীক্ষক প্যানেল গঠন করা হবে। আর এ পদ্ধতিতে স্তর নয় পদের নামই হবে মুখ্য বিষয়।

একই পদ্ধতি বেসরকারি কলেজ অনার্স মাস্টার্স কোর্সের শিক্ষকদেরও পদোন্নতির ব্যবস্থা করতে হবে। হোক না তাঁরা ননএমপিও কিংবা তাদের বেতন ভাতা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব তহবিল থেকে দেয়া হয়! এর কোনটাই যেন পদোন্নতির ক্ষেত্রে বাধা না হয়। এমপিওভুক্ত, ননএমপিও কিংবা মাদরাসা কোনটাই যেন ফাঁরাক না থাকে। একই পরীক্ষক প্যানেলের মাধ্যমে একই সময়ে এ পদোন্নতি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

পরীক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে পদোন্নতির ব্যবস্থা করলে কোন মহল থেকেই বিরুদ্ধাচারণ আসবে না। যিনি মান উত্তীর্ণ হবেন তিনি পদোন্নতি পাবেন। অবশিষ্ট্যরা প্রতি বছর সুযোগ পাবেন। পরবর্তী পদে আসীন হওয়ার চার বছর পর আবার পরবর্তী পদে পরীক্ষায় অংশগ্রহনের সুযোগ পাবেন।

বিংশ শতাব্দীর বৈজ্ঞানিক পথচলায় মান্ধাতা আমলের কালো কানুন কখনোই জাতি গঠনে পজেটিভ ভুমিকা রাখতে পারেনা। প্রভাষক পদে চলমান নীতিমালায় পুরোনো বৈষম্যই জিইয়ে থাকলো। সামনের দিন গুলোতে এ বৈষম্যের ডালপালা অনেক গভীরে শেকড় গাঁথবে। বঞ্চিতদের ক্ষোভ শিক্ষা ব্যবস্থায় নতুন সমস্যা সৃষ্টি করবে। তাই এখনো সময় আছে এ পর্যায়ে একটি বাস্তবসম্মত স্থায়ী সমাধানের ব্যবস্থা করা।

নীতিমালাটি শিক্ষাবিদ, শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সফলদের নিকট প্রস্তাব পরামর্শ চেয়ে উপস্থাপন করা যেতে পারে। শিক্ষকদের জন্য তৈরি নীতিমালায় শিক্ষকদের অংশগ্রহন থাকলে কল্যানকর সমাধান কঠিন হবেনা।

লেখকঃ সম্পাদক, দেশালোক