রামগতিতে আমন চারা সংকটে উচ্চ দামে বেচা-বিক্রি Sarwar Sarwar Miran প্রকাশিত: ১০:২৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১, ২০২৪ সারোয়ার মিরন: লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে বন্যাকবলিত চর পোড়াগাছা ও চর বাদাম ইউনিয়ন ছাড়াও অন্য ৬টি ইউনিয়ন এবং এক পৌরসভার কৃষকরা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। অস্বাভাবিক জোয়ার, অতিবৃষ্টিজনিত জলাবদ্ধতা এবং সর্বশেষ বন্যা আক্রান্তের ফলে প্রায় ৭শ ৫০হেক্টর বীজতলা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। পাশাপাশি রোপা আমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১হাজার ২শ হেক্টর। উপজেলা কৃষি অফিসের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২৩হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের কথা থাকলেও বন্যার ফলে এর প্রায় এক তৃতীয়াংশ অর্থাৎ ৮ হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি রয়ে যাওয়ার আশংকা দেখা দেয়। উপজেলা কৃষি অফিস এবং কৃষকের দৃঢ়তা এবং বহুমূখী চেষ্টার ফলে চাষযোগ্য জমি অনাবাদি থাকার শংকা কমে আসছে। উপজেলা কৃষি অফিসসূত্রে জানা যায়, ইতিমধ্যে কৃষদের মাঝে আপদকালীন প্রনোদনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত ১হাজার ৭শ কৃষককে প্রনোদনার অংশ হিসেবে আবারো প্রত্যেককে ৫কেজি বীজ, ২০কেজি সার, নগদ ১হাজার টাকাসহ ইত্যাদি দেওয়া হবে দু একদিনের মধ্যে। আশপাশের জেলা এবং সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে প্রতিনিয়তই রিপোর্ট দিয়ে, যোগাযযোগ রক্ষা করে, মাঠ পরিদর্শন, কৃষককে পরামর্শসহ বেশ কয়েকটি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় সফল হওয়া গেছে। এতে লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৮০ ভাগ পুরণ হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ। সেপ্টেম্বর মাসের ১৫তারিখ পর্যন্ত আমন বীজ ও চারা রোপন করার সময় রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে আমন চারা রোপন করা গেলে কৃষকের পরবর্তী ফসল মৌসুমে সয়াবিন, বাদাম, মরিচ, ডাল ইত্যাদি রোপন করতে সমস্যা হবে না বলেও জানায় তারা। অন্যদিকে বন্যা আক্রান্ত দুটি ইউনিয়নে পানি কমতে শুরু করায় সেসব এলাকায় দ্রুত আমন চাষের উদ্যোগ নেওয়া হবে। যাতে অনাবাদি জমি না থাকে। ১ সেপ্টেম্বর, রবিবার এবং গতকাল শনিবার উপজেলার চর রমিজ, চরআলগী, চরগাজী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় বেশ কয়েকজন কৃষকের সাথে। তাদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আমন চারার যথেষ্ট সংকট রয়েছে। এদিকে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে দেওয়া বীজও জোয়ার-বন্যায় নষ্ট হয়ে গেছে। নতুন করে উঁচু স্থানে দ্বিতীয়বার বীজতলা করে আমন চারা রোপন করছেন তারা। কৃষকরা বিভিন্ন স্থান থেকে চারা সংগ্রহ করছেন। কোথাও কোথাও প্রতি কেজি ধানের চারা বিক্রি হচ্ছে ৮শ থেকে ১হাজার টাকা। প্রতি ডিসিমেল বীজতলার চারা বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ৮হাজার টাকা। কৃষকরা জানান, প্রতি ডিসিমেল বীজতলার চারা দিয়ে ৮০শতক (১০গন্ডা) জমি রোপন করা যাবে। বীজতলা করছেন এমন একজন কৃষক চর হাসান হোসেন গ্রামের আবদুল হালিম। তিনি জানান, বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় প্রত্যাশা অনুযায়ী চারা উৎপাদন হয়নি। পানিতে বীজের অংকুর নষ্ট হয়ে গেছে। জমি উঁচু হওয়ায় তাকে অবশ্য দ্বিতীয়বার বীজ ফেলতে হয়নি। নিজের বীজতলা নষ্ট হওয়ায় চর আলগী থেকে চর রমিজ এলাকায় চারা কিনতে আসা শাহে আলম জানান, ৫কেজি ধানের চারা কিনেছেন ৮হাজার টাকা দিয়ে। এর সাথে ট্রাক্টর ভাড়া ৭শ টাকা যোগ হয়েছে। চর আলগীর কৃষক মো: সাত্তার পাশের এলাকা থেকে এসেছেন আমন চারা কিনতে। নিজেকেই উঠিয়ে নিতে হবে এমন শর্তে এক ডিসিমেল বীজতলার চারা কিনেছেন ৪হাজার টাকায়। তিনি জানান, এরপরেও চারা প্রয়োজন, কোথাও পাচ্ছি না। বহু জমি খালি পড়ে থাকবে বলেও শংকা প্রকাশ করেন। তবে সব কৃষকদেরই দাবি সংকটের কারন দেখিয়ে বীজতলা মালিকরা চারার দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতে জমি অনাবাদি থেকে যাবে এ আশংকায় বাধ্য হয়ে বাড়তি দামে চারা কিনতে হচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ তারেক জানান, গত কয়েকদিন বৃষ্টি বন্ধ থাকায় বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। কৃষকরাও একাধিকবার বীজতলা তেরি করে, নিজের চেষ্টায় চারা কিনে জমি চাষ করছেন। আমরা তাদের সবধরনের সহযোগিতা করার জন্য মাঠে আছি। আশাকরি লক্ষ্যমাত্রা পুরণ করতে সক্ষম হব। SHARES আন্তর্জাতিক বিষয়: