মার্টিনেজ এলেন, চলেও গেলেন! কে কি পেলেন?

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ৭:১৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩, ২০২৩

মার্টিনেজ এলেন, চলেও গেলেন! কে কি পেলেন?
— সারোয়ার মিরন

দেড়-দুই দশক আগেও দেখতাম কাউকে কোথাও নেমন্তন্ন করলে বিনা দাওয়াতি হিসেবে সাথে দু একজন বাচ্চা-কাচ্ছা নিয়ে হাজীর হতো মানুষজন। এখনও তেমনটি দেখা যায়, তবে পুর্বের সময়ের তুলনায় অনেক কম! তার মানে মানুষের মাঝে পজেটিভ পরিবর্তন হচ্ছে। এখন মানুষ বিনা দাওয়াতে আল্লাহরস্তিয়া খানায়ও যান না।

বহু গোপনীয়তা ও ধরা-ছোঁয়ার বাহিরে দিয়ে বাংলাদেশের একটি মধ্যম মানের কোম্পানি আর্জেন্টাইন গোলকিপার মার্টিনেজকে এগার ঘন্টার জন্য বাংলাদেশে এনেছে। আনতেই পারেন! এ গোলকিপার বর্তমানে বিশ্বের একনম্বর গোলকিপার। যে কোন দেশ, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান চাইলে তাঁকে আনতেই পারে। দেশের জন্য এটা একটা বিশাল ঘটনা। কোম্পানির পরিচিতি-ব্র্যান্ডিং-প্রচার প্রচারনায় এটি একটি প্রচলিত প্রক্রিয়া।

যেহেতু মার্টিনেজ ফুটবলের লোক, তার সাথে দেখা সাক্ষাতে ফুটবল সংশ্লিষ্টদেরই প্রাধান্য পাওয়ার কথা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর বাহিরে দেখা পেলেন দুজন ব্যক্তি। একজন ক্রিকেটার মাশরাফি, অন্যজন প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। টুকটাক পাওয়া ছবির মাধ্যমে জানতে পারি মাশরাফির সাথে তার দু সন্তানও ছিলেন, ছিলেন প্রতিমন্ত্রীর স্বজনরাও। দুজনেই সোস্যাল মিড়িয়ায় এসব ছবি পোস্ট করে নানান তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছেন।

বিশ্ব ওপেন একজন প্লেয়ারকে কেন এভাবে নিপুণ গোপনীয়তায় বাংলাদেশে আনা হলো! কেন গণমাধ্যমকেও এলাউ করা হয়নি (বেশ কয়েজন ইউটিবারকে সুযোগ দেয়া হয়েছে)! দেশের ফুটবল সংশ্লিষ্টদের কাউকে কেন সাক্ষাৎ শিডিউলে রাখা হয়নি! এটা স্বীকৃত যে, বাংলাদেশে আর্জেন্টাইন সমর্থক মোট ফুটবলপ্রেমিদের অর্ধেক। কেন এ বিশাল সমর্থকদের বঞ্চিত করা হলো! মার্টিনেজকে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম কিংবা অন্য কোথাও উন্মুক্ত করা যেত না! নিদেন পক্ষে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) থেকে একটা শুভেচ্ছা স্মারক দেয়া যেত না? ঘুরিয়ে নেয়া যেত না এ ফুটবল পাড়া!

গুটি কয়েক লোকের খোশগল্প করার মনোবাসনা পুর্ন করতেই কি এ বিশাল আয়োজন! কোটি কোটি টাকা ব্যয়! বিশ্বখ্যাত একজন ফুটবলার (গোলরক্ষক) এলেন, চলেও গেলেন। দু একজন সেলফি-ছবি তুলে সাময়িক কিংবা সারাজীবনের জন্য ফেসবুক পোস্ট করার মতো উপকরন পেয়ে গেলেন! আর দেশ কি পেলো? ফুটবলের কি লাভ হলো? বাংলাদেশ ফুটবল দলের অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়ার জন্য দু:খ হয়, বেচারা দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও দেখা পাননি মার্টিনেজের। আরে ভুঁইয়া সাহেব, তুমি জানো না, এদেশে যদু-মধু-কদুরাই হর্তা-কর্তা। বাকিরা সব তেঁতো কলা!

একটা কথা জানিয়ে রাখি, মার্টিনেজের নির্ধারিত সফর ছিলো পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে। নিজ থেকেই আগ্রহ করে বাংলাদেশে এসেছেন তিনি। একেবারে বলা চলে বিনা আমন্ত্রণ আর বিনা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে চলে আসছেন এদেশে। কেবলমাত্র উন্মাদ-উন্মত্ত বাংলাদেশি আর্জেন্টাইন সমর্থকদের স্বচোক্ষে দেখার জন্য। বিপরীতে বাংলাদেশি আয়োজকদের বদান্যতায় জনবহুল এ আয়োজন রুপ নিয়েছে গোপন খোশগল্পে! ফুটবলের লোক, ফুটবল সম্পর্কের নাগাল পেলেন না! সো স্যাড।

আর্জেন্টাইন গোলকিপার মার্টিনেজ বাংলাদেশে এসেছেন একটামাত্র টিশার্ট পরে! ভালো কথা আসছেন, তাও আবার দেখা করলেন এক ক্রিকেটারের সাথে! বোধহয় তার শ্যুট-টাই নাই। অন্য দিকে দেশে মনে হয় ফুটবলার নাই!

(বি: দ্র: শ্যুট-টাইয়ের গল্প আরেকদিন)

— ০৩ জুলাই ২০২৩খ্রি