রামগতি-কমলনগরে ‘‘নৌকা-ঈগলে’’ জয়-পরাজয়

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ৪:৩১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৩

সারোয়ার মিরন:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) আসনে জমে উঠেছে প্রার্থীদের প্রচার প্রচারনা। প্রতিদ্বন্ধীতায় ছয়জন প্রার্থী থাকলেও আলোচনায় রয়েছেন দুই সাবেক সংসদ সদস্য। তারা হলেন ১৪ দলীয় মহাজোট প্রার্থী (জাসদ-ইনু) প্রার্থী মোশারেফ হোসেন নৌকা প্রতিক এবং সাবেক সাংসদ স্বতন্ত্র প্রার্থী মো: আবদুল্যাহ আল মামুন ঈগল পাখি প্রতিক।

এ আসনে নয়জন প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিলেও যাচাই বাছাইয়ে উত্তীর্ণ হয়ে মাঠে আছেন ৬জন। অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ইস্কান্দর মির্জা শামীম (ট্রাক), স্বতন্ত্র প্রাথী আবদুস সাত্তার পালোয়ান (রকেট), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির যুগ্ম-মহাসচিব মো: ছোলায়মান (একতারা) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদা বেগম (তবলা)।
জাসদ-ইনু সমর্থিত প্রার্থী হলেও জোটবদ্ধ হয়ে নৌকা প্রতিকে নির্বাচন করছেন মো: মোশারেফ হোসেন। নির্বাচনী আসনের দু উপজেলায় তার রয়েছে নিজস্ব ভোট ব্যাংক। তার জয়ে বাধা হতে পারেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মো: আবদুল্যাহ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ইস্কান্দার মির্জা শামীম।

দলীয় প্রার্থী না থাকায় স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে রয়েছে বিভাজন। বেশিরভাই নেতাই সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন স্বতন্ত্রপ্রার্থী আবদুল্যাহর পক্ষে। সরব থাকছেন প্রচার-প্রচারনায়। স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল্যাহ’র ঈগল পাখি প্রতিকের হয়ে মাঠে আছেন রামগতি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল ওয়াহেদ মুরাদ, সহসভাপতি ড. আশরাফ আলী চৌধুরী সারু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু নাসের, রামগতি পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়ারেছ মোল্লা, যুবলীগ আহবায়ক মেজবাহ উদ্দিন, যুগ্ম-আহবায়ক সোয়াইব হোসেন খন্দকার, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক সভাপতি নেছার উদ্দিন, সাধারন সম্পাদক আরমান হোসেন, কমলনগর উপজেলা চেয়ারম্যান ও যুবলীগের আহবায়ক মেজবাহ উদ্দিন বাপ্পী, যুগ্ম-আহবায়ক আহসান উল্যাহ হিরণসহ দুই উপজেলার আওয়ামীলীগ এ অঙ্গসংগঠনের বেশ কয়েকজন প্রথম সারির নেতা। এছাড়াও সংসদ সদস্য হিসেবে গত মেয়াদে মেঘনার ভাংগনরোধে কাজ করায় সাধারণ ভোটারের কাছে রয়েছে বিপুল জনপ্রিয়তা।

অন্য দিকে ১৪দলীয় জোটের প্রার্থী মোশারেফ হোসেন এর পক্ষে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন রামগতি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ, রামগতি পৌর মেয়র এম মেজবাহ উদ্দিন, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি সাঈদ পারভেজসহ দুই উপজেলার বেশ কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যানসহ নেতা-কর্মী।
স্বতন্ত্র প্রার্থী ইস্কান্দার মির্জা শামীম বলেন, নির্বাচনকে অংশগ্রহনমূলক করার লক্ষে দল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। তাই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধীতা করছি। নেতা-কমীর্সহ সাধারন জনগণ আমার পক্ষে রয়েছেন। জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল্যাহ আল মামুন বলেন, আমি দল থেকে মনোনয়ন চেয়েছি। কিন্তু দল আমাকে মনোনয়ন দেয়নি। ২০১৮ সালেও জোটের কারনে মনোনয়ন পেয়ে প্রার্থীতা ছেড়ে দিয়েছি। এবার দল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য নির্বাচনী মাঠ উন্মুক্ত রাখার ঘোষণা দেয়ার কারনে প্রার্থী হয়েছে। জয়ের ব্যাপারে বেশ আশাবাদী আমি।
নৌকা প্রতিকের প্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা মোশারেফ হোসেন জানান, আমি এ এলাকার সাবেক সংসদ সদস্য। দায়িত্বে থাকাকালীন জনগণের জন্য কাজ করেছি। নিজের স্বার্থে কিছু করিনি, জনগণের জন্য কাজ করেছি। উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীসহ জাসদের নেতাকর্মীরা আমাকে সহযোগিতা করছেন। জয়ী হয়ে রামগতি-কমলনগর উপজেলার মেঘনার ভাংগন রোধসহ যাবতীয় উন্নয়নে কাজ করতে চাই।

উল্লেখ্য, জোট প্রার্থী মোশারেফ হোসেন ১৯৮৪ সালে চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ থেকে আসম আবদুর রবের ছেড়ে দেয়া আসনে উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। অন্যদিকে মো: আবদুল্যাহ ২০১৪সালে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে নৌকা প্রতিকে নির্বাচিত হয়েছেন।