৭বছরেও শেষ হয়নি নির্মান কাজ: রামগতিতে দশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অচলাবস্থা

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ৭:৪৫ অপরাহ্ণ, জুন ৫, ২০২৩

সারোয়ার মিরন:
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নাভানা কন্সট্রাকশন লিমিটেড এর অবহেলায় লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে ১০টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মান কাজ শেষ হয়নি সাত বছরেও। ফলে এসব বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ সংকটে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম। ব্যবহারযোগ্য ভবন বুঝে পাওয়ার অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে অস্থায়ী নির্মান করা কাঠ ও টিনের ভঙ্গুর শ্রেনিকক্ষগুলোতে পাঠদান প্রক্রিয়া দুঃসাধ্য হয়ে ওঠছে। থাকছেনা অফিস ও শ্রেনিকক্ষগুলোর নিরাপত্তাও। অস্থায়ী শ্রেনিকক্ষগুলো আসন্ন বর্ষায় কিংবা ঝড়ো বাতাসে ধ্বসে পড়ে আরো তীব্র হতে পারে এ দুভোর্গ— এমন ধারনা শিক্ষক—শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।
জানা যায়, বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতায় বহুমূখী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আশ্রয় প্রকল্পের আওতায় ৩তলা বিশিষ্ট স্কুলভবন কাম আশ্রয় কেন্দ্রসমূহের নির্মান কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে। ৪ কোটি ১৩ লক্ষ ৬৯হাজার টাকা ব্যয়ে এসব ভবন নির্মানের সময়সীমা ধরা হয়েছে চব্বিশ মাস। শর্তানুযায়ী ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের পর সাত বছর পার হলেও শেষ হয়নি কাজ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নির্মানাধীন এসব সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৫টির তিলতলার ছাদ ঢালাই কাজ শেষ হয়েছে। দুটির একতলা এবং তিনটি বিদ্যালয়ের প্রথম তলার পিলার দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিটি বিদ্যালয় ভবন নির্মানের উপকরনসমূহ গত ৭বছর ধরেই পড়ে আছে অযত্ন অবহেলায়। কতৃর্পক্ষের দাবি ভবনগুলোর কাজ চলমান রয়েছে। বাস্তবে এর সত্যতা দেখা মেলেনি। দু তিনটি ভবনে দেখভালের নামে নামমাত্র কাজ করেছেন এক—দুজন শ্রমিক। ছাদ ঢালাই এবং দু একটি কক্ষের ইটগাঁথুনি দিয়ে রাখা এসব ভবন দীর্ঘ সময় ধরে খোলামেলা পড়ে থাকায় আড্ডা দিচ্ছে বখাটেরা। রাতের বেলায় বসে মাদকসেবীদের আসর। এছাড়াও যত্রতত্র ফেলে রাখা নির্মান সামগ্রীর গুনগত মানও নষ্ট হচ্ছে।
চরগাজী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফসার উদ্দীন জানান, দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণ সামগ্রী মাঠে ফেলে রাখায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতে পারছে না। খোলামেলা রাখায় রডগুলোর গুনগত মান নষ্ট হচ্ছে।
ভূক্তভোগী বিদ্যালয়গুলো হচ্ছে— পশ্চিম চরসীতা হাজীপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, হারুন মোল্লারহাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর কলাকোপা নোমানাবাদ সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়, চর পোড়াগাছা গুচ্ছগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্য চরসেকান্দর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, আলেকজান্ডার বালিকা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্য চরআফজল—২ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরগাজী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধ্য পূর্ব আলেকজান্ডার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরমেহার মাষ্টারপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।
উপজেলা নির্বাহি প্রকৌশলী মো: সাইফুল ইসলাম জানান, ভবনগুলোর কাজ সম্পর্কে উর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষ অবগত আছেন। সহসাই পুরোদমে কাজ শুরু হবে। আশাকরি চলতি বছরের মধ্যেই নির্মান কাজ শেষ হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতা আজিজুর রহমান (চলতি দায়িত্ব) জানান, প্রকল্পের কাজ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। আমরা বিভিন্ন সভা—সেমিনারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট বহুবার বলেছি যেন দ্রুত ভবনগুলোর কাজ শেষ করা হয়। ভবনের নির্মান কাজ শেষ না হওয়ায় বিদ্যালয়গুলোতে পড়ালেখা মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা এসএম শান্তুনু চৌধুরী জানান— এ প্রকল্পের ভবন সংক্রান্ত সমস্যা শুধু রামগতিতে নয়, সারাদেশেই হচ্ছে। যতটুকু জানি কর্তৃপক্ষ কাজগুলো পুনরায় শুরু করছে।