নোংরা আচরণ ও আচরণকারীর বিরুদ্ধে উঠুক আওয়াজ

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ১২:৩৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১২, ২০২০

মারজান আক্তার: জীবন চলার পথে আমাদেরকে অনেক মানুষের সাহায্য নিয়েই বেঁচে থাকতে হয়। ‘অনুন্নত দেশ হিসেবে বেঁচে থাকার যুদ্ধে নিজেদের মৌলিক প্রয়োজন পূরণের অর্থ নিজেদের যোগাতে হয়’। তার অংশ হিসেবে নারীরা ঘরের বাহিরে নানা ধরনের কাজে নিযুক্ত হয়েছে/হচ্ছে। রাষ্ট্র ও অনেক কর্মক্ষেত্রে নারীদের অগ্রাধিকার দিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকাকে শক্তিশালী করার সুযোগ দিয়েছে নারীরা সেই সুযোগ নিয়ে যে যার জায়গা হতে বাড়ির আঙ্গিনার বাহিরেও কাজ করে চলছে। নারীকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার অংশ হিসেবে নারী শিক্ষার হার বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমা, শিল্প-সাহিত্য, ব্যবসা-বাণিজ্য, সামরিক, বেসামরিক, খেলা-ধূলা, শিক্ষকতা, উপাচার্য, স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী, সংসদসদস্য, চেয়ারম্যান, মেম্বার সহ সকল ক্ষেত্রে নারীর পদচারণা রয়েছে। আর সেই পদচারণা রাষ্ট্রের কল্যাণের জন্য, রাষ্ট্রের উন্নতির জন্য।

আমি জানি অনেকই বলবেন, নারী ঘরের বাহিরে যায় তাই সে নোংরা আচরণের শিকার হয়। যারা এমনটা ভাবছেন তাদের জন্য বলছি ‘মিডিয়া গুলোর দিকে চোখ রাখলে দেখতে পেতেন নারী আজ ঘরে-বাহিরে, রক্ত সম্পর্কীয়-অরক্ত সম্পর্কীয় কারোর কাছে নিরাপদ নয়’। তাছাড়া এই মূর্হতে নারী কাজ বন্ধ করে দিয়ে নিরাপত্তার জন্য ঘরে বসে থাকা ‘দেশের অর্থনীতির জন্য আত্নঘাতি মূলক সিদ্ধান্ত হবে’। আমি বলতে চাই নারী কাজ করছে কার জন্য? পরবারের তথা রাষ্ট্রের জন্য তাহলে নারীর নিরাপত্তা কে নিশ্চিত করবে? পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র । কীভাবে? “ধর্মের উপর নির্ভর করে নোংরামি হবে ব্যাক্তির এমন আচরণ নির্ধারণ করা। নির্ধারিত নোংরা আচরণ অনুযায়ী শাস্তির নিয়ম তৈরি করা যা নারীকে তার কর্মস্থলে ও চলার পথটাকে নিরাপদ করে দিবে”। আওয়াজ তুলতে হবে নারীর ঘরে ফিরে যাওয়ার জন্য নয়, আওয়াজ তুলতে হবে ব্যক্তির নোংরা আচরণ/আচরণকারীর বিরুদ্ধে এবং কর্মস্থলে নারীর নিরাপত্তার বিষয়ে। যা হবে পরিবার, সমাজ এমনকি রাষ্ট্রে হতে সম্মেলিত ভাবে। আপনারাই বলেন একটা স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশ হিসাবে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র নারীর নিরাপত্তা দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে কি?

এছাড়াও আমাদের সাহায্য চাওয়া যদি কোন নোংরা মানুষের কাছে হয় তবে সাহায্যটা নোংরা হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে। আর সাহায্য চাওয়া যদি কোন ভালো মানুষের কাছে হয় তবে সেটা তো সবাই বুঝেন। কিছু মানুষ নোংরা হতে পারে তা দেখে কখনও বুঝা গেলেও কিছু মানুষ যে নোংরা তা তাদের দেখে বুঝা যায় না অর্থ্যাৎ ভদ্র মানুষের মুখোশ পরে যারা নোংরামি করে তারা আমাদের চারপাশে থাকে তাদেরকে চিনার উপায়টা আমাদের অনেকেরই অজানা।

তবে এই মানুষগুলো মানসিক রোগাস্ত্র ছদ্ম/ভদ্র বেশি অনেক সময় এরা উচ্চ শিক্ষিতও হয়ে থাকে তারা তাদের অন্যায় প্রাপ্তির জন্য যতটা নিচে নামার বা যতটা নোংরা আচরণ করা দরকার ততটাই করতে এদের বিবেক বাঁধা দেয় না বলে এরা তা করে থাকে। তাই এদের শাস্তি আবশ্যক কেননা অনেক নিরপরাধ ব্যক্তিও এদের চলনার জালে ফেঁসে যায়। যা আমাদের অনেকরই জানা। অজানা আমাদের এদের হাত হতে বাঁচার উপায়।

আমি বলতে চাই নোংরা আচরণ/আচরণকারী বিরুদ্ধে সম্মেলিত আওয়াজ তোলা ‘সে যেই হোক সুযোগের অপব্যবহার করে’ নিরপরাধ লোককে ফাঁসিয়ে দিলে তাদের এ ধরনের কাজ ফাঁসিয়ে দেয়া সত্যিই সত্য প্রমাণিত হলে তাদের এবং সমাজের নোংরা সেই মানুষগুলো যারা ব্যভিচার(যেনা, ধর্ষণ) করে সমাজটাকে অস্থিতিশীল/নোংরা করার চিন্তা করে তাদেরও শাস্তির আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়ার বিধান হওয়া উচিত। এতে আল্লাহর নির্দেশ মানা হবে এবং নিরপরাধ ব্যক্তির ন্যায় বিচার পাওয়া হবে, সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।

 

লেখক: প্রভাষক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ

খলিলুর রহমান ডিগ্রি কলেজ, নোয়াখালী

এমফিল অধ্যয়নরত এবং ক্ষুদে সমাজবিজ্ঞানী ও গবেষক