বকেয়া আদায়ের লক্ষ্যে সংগঠিত হচ্ছেন ৬৫০ আইসিটি শিক্ষক

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ১১:১৪ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২৩, ২০২০

দেশালোক: উনিশ মাসের বকেয়া আদায়ের লক্ষ্যে সংগঠিত হচ্ছেন আইসিটি শিক্ষকরা।২০১৯ সালের প্রথম দিকে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয় কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)’র মাধ্যমে নিয়োগ পেয়ে এমপিওভুক্তি হয়েছেন ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে।  ফলশ্রুতিতে উনিশ মাসের বেতন ভাতা পাননি এ ৬৫০জন আইসিটি শিক্ষক।

জানা যায়, এনটিআরসিএ ২০১৮  সালের ডিসেম্বর মাসে নিবন্ধন উত্তীর্ন প্রার্থীদের থেকে মেধাতালিকা করে দেশের বিভিন্ন মাধ্যমিক সমমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে। নির্বাচিত প্রার্থীদের এসএমএস এবং অনলাইনে সুপারিশপত্রও প্রেরন করে কর্তৃপক্ষ।

সুপারিশ পেয়ে নির্বাচিত শিক্ষকরা স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে যোগদান কার্যক্রম সম্পন্ন করে পাঠদানে নিযু্ক্ত হন। এরপর অনলাইনে এমপিওভুক্তির আবেদন করলে আঞ্চলিক শিক্ষা অফিস (ডিডি) কর্তৃক নীতিমালার অজুহাতে আবেদনসমূহ ইএমআইএস সেলে অগ্রায়ন না করে বাতিল করেন।

নীতিমালা সংক্রান্ত বিষয়টির সুরাহা করতে শিক্ষকরা গতো দেড় বছরে এনটিআরসিএ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষামন্ত্রনালয়সহ সম্ভাব্য সব স্থানে ধরনা দেন। দ্রুত এমপিওর দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গনে একাধিক সভা সমাবেশ এবং মানববন্দন করেন। করেন একাধিক সংবাদ সম্মেলনও।

অবশেষে গতো ২৬ জুলাই এ ভুক্তভোগী শিক্ষকদের এমপিওভূক্তির জন্য চিঠি ইস্যু করে মাউশি এবং মন্ত্রনালয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয় সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের অনলাইনে এমপিও আবেদনের দিন থেকে এমপিওভূক্তির দিন গননা করা হবে। সেপ্টেম্বর মাসের এমপিওভুক্তি নিশ্চিত হলে দেখা যায় সংশ্লিষ্ট মাউশি কর্তাগন চিঠির নির্দেশনা এড়িযে গিয়ে শুধুমাত্র একমাসের (সেপ্টেম্বর) বেতন ভাতা প্রদান করা হয়। ফলে এখানেও শিক্ষকরা আগস্ট মাসের এমপিওর বেতন ভাতা বঞ্চিত হন।

২০১৯ সালের প্রথমে নিয়োগ পেয়ে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এসে এমপিওভূক্ত হন এসব শিক্ষক। এনটিআরসিএ’র মাধ্যমে নিয়োগ পেয়েও উনিশ মাস ধরে বেতন ভাতা না পাওয়া অনাকাংক্ষিত এবং অনপ্রভিত।

কোভিড-১৯সহ গত দেড় বছরে শিক্ষকরা প্রতিষ্ঠানে পাঠদানরত থেকেছেন। অনলাইনে ক্নাসসহ সব ধরনের শিক্ষাকার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন। দুর দুরান্ত থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করেছেন। দীর্ঘ এ সময়ে প্রতিষ্ঠান থেকেও পাননি কোন সন্মানী। উপরুন্ত যাতায়াত ও খাওয়া দাওয়া বাবত অতিরিক্ত ব্যয় করেছেন তারা। বেতন ভাতার পাশাপাশি তারা অভিজ্ঞতাসহ একটি ইনক্রিমেন্টও বঞ্চিত হয়েছেন।

বঞ্চিত এসব শিক্ষক বকেয়া আদায়ের জন্য সংগঠিত হচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় হচ্ছেন। বিভিন্ন লাইভ টকশোতে বকেয়ার বিষয়ে কমেন্টস করছেন। সংবাদ মাধ্যমে ধরনা দিচ্ছেন নিজেদের দুর্দশার কথা তুলে ধরতে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তারা কর্মসূচি দেবেন বলে জানা গেছে।

দীর্ঘ উনিশ মাস বেতন ভাতা না পেয়ে অত্যন্ত মানবেতন জীবন যাপন করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা। অনেকেই ধার দেনা এবং ঋণ করে জীবন নির্বাহ করেছেন বকেয়াসহ বেতন ভাতা পাওয়ার আশায়। কিন্তু উনিশ মাসের বকেয়া বেতন ভাতা না পাওয়ায় হতাশায় ভুগছেন শিক্ষকরা।

বেতন ভাতাহীন এতোগুলো মাস অতিবাহিত করা অত্যন্ত কষ্টকর। পাঠদান কার্যক্রমে উপস্থিত থেকেও বেতন ভাতা না পাওয়া দুর্ভাগ্যজনক। দীর্ঘ এ সময়ে প্রতিষ্ঠান থেকেও দেয়া হয়নি কোন সম্মানি। উল্টো প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত বাবদ বাড়তি ব্যয় করতে হয়েছে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর নতুন এমপিওকৃত প্রতিষ্ঠান সমূহের শিক্ষকদের এক বছরের বকেয়া বেতন ভাতা প্রদান করলেও এনটিআরসিএর’র মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া এসব শিক্ষকদের বেলায় বেখেয়ালই রয়েছে কর্তৃপক্ষ।