রামগতি উপজেলা আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক আবু নাছের এর খোলা চিঠি

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ৫:০৩ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৪, ২০২০

দেশালোক: রামগতি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু নাছের তার ফেসবুক ওয়ালে  একটি ভোলা চিঠি লিখেছেন। খোলা চিঠিতে তার রাজনৈতিক পদচারনা তুলে ধরা হয়েছে। দেশালোক পাঠকদের জন্য খোলা চিঠিটি হুবহু তুলে ধরা হলো:

“আমি আবু নাছের লক্ষীপুর জেলার রামগতি উপজেলার ভয়ঙ্কর করালগ্রাসী মেঘনার অব্যাহত ভাঙ্গনের ক্ষত বিক্ষত বিস্তৃন্ন সবুজে ঘেরা আলেকজান্ডার ইউনিয়নের একটি সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। সমাজ পরিবর্তনের সোনালী নেশায় কৈশোর পেরুনোর আগেই যৌবনের শুরুতে প্রেমে পড়ে যাই রাজনীতির, জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর সুমহান ত্যাগ ও সাহসীকতার ইতিহাস পড়ে মুজিব আদর্শের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করেছিলাম। এর জন্য হারাতে হয়েছে জীবনের অনেক স্বর্নালী সময়, চুরি হয়ে গেছে অবেলায় অনেক স্বপ্ন ”

তিনি আরো আরো লিখেন- বন্ধুরা যখন যৌবনকে উপভোগ করতে নানা দুরন্তপনায় ব্যাস্ত আর আমি তখন ছাত্রলীগের কর্মি সংগ্রহে দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছি । যতখানি সম্ভব অর্থ, শারিরীক শ্রম, ও মুল্যবান সময় ব্যায় করেছি.?

বড় দূঃসময়ে আওয়ামী রাজনীতির এই মরুময় প্রান্তরে দাঁড়িয়ে আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম আওয়ামী রাজনীতির এই শূন্য বাগান আমি একদিন কানায় কানায় পূর্ণ করে তুলবো। কিন্তু স্বপ্ন জয়ের অধম্য নেশায় কোন অপশক্তি, অপমান ধমক রক্তচক্ষুই আমাকে থামাতে পারেনি। এই দুর্দিন – দূঃসময়ে হিমালয়ের মতো অটুট থেকে আমি দলের কর্মিদের আগলিয়ে রেখে, রাজপথের কর্মসূচীর মাধ্যমে জনমত তৈরী করে দলকে শক্তিশালী করতে সামর্থ্যের শতভাগ উজার করে দিয়েছি…! আমি আমার স্বপ্নকে পূর্নতা দিয়ে, ছাত্রলীগ থেকে বিদায় নিয়ে ২০০২ সাল থেকে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ পূর্নগঠনে আমি ও মরহুম বোরহান উদ্দিন ভূঁইয়া বৃহত্তর রামগতি উপজেলায় চষে বেড়াই এবং তৃনমুল থেকে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগকে স্বচ্ছ সম্মেলনের মাধ্যমে গড়ে তুলি। (এর আগে উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগের, কখনো পূর্নাঙ্গ কমিটি করতে পারেনি)।

আওয়ামীলীগ এটি আমার ভালোবাসার সব চাইতে শুদ্ধতম অনুভূতির নাম।

সারাদিন সংগঠনের নানা কাজ করে ক্লান্ত অবসন্ন শরীরে বাসায় ফিরে কখনো খেয়ে কখনো না খেয়ে হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছি আর ঘুমাতে ঘুমাতে স্বপ্ন দেখেছি যদি কখনো বঙ্গবন্ধুর কন্যা রাষ্টিয় ক্ষমতায় আসে হয়তো আজকের এই র্দূভোগ থাকবে না। কিন্তু বাস্তবতা হলো ঠিকই তার উল্টো। জেলা ও কেন্দ্রের একদল লোভী নেতাদের আশ্রয়ে মদদে (এই লোভি নেতারা শেখ হাসিনার নিদ্দের্শ ও মানেনা শুধু টাকা ও নিজ স্বার্থের জন্য) আমাদের অনেক কষ্টের রক্তজল করা শ্রমে বিরান মরু প্রান্তর আজ যখন ফুলে ফলে পল্লবিত তখন নানা অজুহাতে সুযোগ সন্ধানীর দল বর্গীর মতো এসে সেই ফসল ছিনিয়ে নিয়ে যায় ” তখন আমার বুকের আর্তনাদ অট্টহাসি দিয়ে আমাকেই উপহাস করে ” ।

এই জীবন কাহিনী শুধু আমার একারই নয় – রাজনীতির মায়া জালে আবদ্ধ বন্ধু সকলের ।

কালের সাক্ষী, কালের ইতিহাস হয়ে শুধু বয়ে বেড়াতে হয় আমাদের।

গোটা রাজনীতি ও সামাজিক জীবনে এক অস্থির অশান্ত সময় দেখা দিয়েছে, স্হানীয় সরকার বা জাতীয় নির্বাচনে দলের আদর্শিক, সৎ, গরীব নেতা কর্মিরা সুযোগ সন্ধানী, নীতিহীন, লুটেরাদের কাছে অযোগ্য বলে বিবেচিত হচ্ছেন, এতে৷ করে গোটা রাজনীতি আজ জৌলুস বা উজ্জলতা হারিয়ে ফেলেছে?

রাজনীতি যদি হয় সততার, স্বচ্ছতার, জবাবদিহিতার, এবং গনমুখি, কর্মিবান্ধব, মানব কল্যানের জন্য তা হলে গণমানুষের দল আওয়ামীলীগকেই দলের নিবেদিত প্রান আদর্শিক নেতা কর্মিদের জন্য রাজনীতির দুয়ার খুলে দিতে হবে?

রাজনীতির প্রতি, রাজনীতিবিদদের প্রতি মানুষের আস্হা, ভালোবাসা, সম্মান ফিরিয়ে এনে হতাশা দূরীভূত করতে হলে রাজনীতির দুয়ার রাজনীতিবিদদের জন্য ন্বিঃস্বার্থ ভাবে খুলে দিতে হবে?

পরিশেষে সকল স্তরের আওয়ামীলীগ নেতাদের কাছে বিনীত আবেদন মানুষ ও মানবতার কল্যানের রাজনীতির জন্য দলের আদর্শিক মেধাবী কর্মিদের জন্য রাজনীতির দুয়ার খুলে দিন।

অর্থ, দলছুট, নীতিহীন সুযোগ সন্ধানীদের কাছে পরীক্ষিত আদর্শিক নেতা কর্মিদের পরাজয়, রাজনৈতিক নেতৃত্বেরই পরাজয় বটে “।