করোনাকালের একটি দিন

Sarwar Sarwar

Miran

প্রকাশিত: ৫:০২ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২২, ২০২১

সায়েম মাহমদু: ৮-ই মার্চ ২০২০ইং প্রথমবারের মত দেশে করোনা সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর, সরকার ঐ মাসেরই ১৭ তারিখ সব স্কুল কলেজ বন্ধ করে ২৫ তারিখ থেকে সর্বস্তরে সাধারণ ছুটি ঘোষনা করলে আমাকেও বাধ্য হয়ে ঘর বন্দি হতে হয়৷

শহর ছেড়ে গ্রামে কাটানো ৬৯ দিনের মধ্যে স্মরণীয় একটি একদিন বের করা সত্যিই খুব কষ্টের, তবুও কিছু কিছু ঘটনা বা দিনক্ষণ মনে থাকে সবসময়, তেমনি একটা দিনের বর্ণনা দিচ্ছি।

স্পষ্ট করে দিনটির কথা মনে পড়ছে না তবে খুব সম্ভবত মে মাসের প্রথম দিকটার কোন এক দিন হবে, ততদিনে আমার ঘরের বাইরে বারো’শ স্কয়ার ফিট একবারের জন্যও যাওয়া হয়নি। সারাদিন নামাজ, রোজা, ভাইয়ের ছেলেদের সাথে খেলাধুলা আর তাদের ফটো তুলতে তুলতেই কেমন করে দিন কেটে যেতো – তাই তেমন একটা ক্লান্তি কাজ করত না।

সেদিন হঠাৎ বাহিরে তাকিয়ে দেখি পাখিরা কিচিরমিচির করছে আমাদের বারান্দায়, বারান্দার এক কোণে আগে থেকেই একটা মাটির হাঁড়ি বসানো ছিলো- আমি ভুল না বললে সেটা হয়ত কিনে আনা দধির হাঁড়িটা ছিল। আজকের দিনটার পাখিদের গুঞ্জন একটু অন্যরকম লাগায় উঁকি মেরে দেখতে যাব অমনি কোত্থেকে একটা মা পাখি এসে আমাকে আঘাত করবে মনে হল। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে সামলে নেই৷ কিন্তু কৌতুহলী মনকে কি আর পাখির আঘাত দূরে সরিয়ে দিতে পারে! তেমনি আমাকেও পারেনি, ঘরে এসে মোবাইলটা হাতে নিয়ে আবার গেলাম, এবার মোবাইলের ক্যামেরাটা চালু করে কোনোমতে হাতটা ঐ হাঁড়ির সামনে নিয়ে ক্যামেরাতে ক্লিক করলাম আর আশ্চার্য হলাম একটু – পাখিরা এখানে কবে ডিম দিল! এর ভিতর আবার বাচ্চাও হল; অথচ আমার আলস্য মাখা দিনগুলোতে আমি একবারের জন্যও টের পাইনি- এখানে পাখিদের আনাগোনা,।

আমার সেদিনের কুড়িয়ে পাওয়া আনন্দটুকো লিখে বুঝানো সম্ভব হবে না, মনের খুশিতে ওদের ভিডিও করে বার বারবার দেখলাম, সেখানকার একটা দৃশ্য আমার খেয়াল চুরি করছে, আমি বারবার দেখছি আর ভাবছি আল্লাহর সৃষ্টি কত সুন্দর, আর সকলের খাদ্য, আশ্রয়, বাসস্থান সবই তিনি কত সুন্দরভাবে ব্যবস্থাও করে দিয়েছেন।

“আলহামদুলিল্লাহ আলা কুল্লি হাল।”

 

লেখক: সাবেক শিক্ষার্থী, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম

ইমেইল: smkiiuc@gmail.com